পানি আমাদের কেন দরকার

মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর জন্য পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাত-পা নাড়াচাড়া করার মতো সাধারণ কাজও পানি ছাড়া করা সম্ভব নয়...

আমরা যতটুকু পানি পান করি, তার মাত্র ২০ শতাংশ রেচনপ্রক্রিয়ায় সরাসরি শরীর থেকে বেরিয়ে যায়

আমরা যতটুকু পানি পান করি, তার মাত্র ২০ শতাংশ রেচনপ্রক্রিয়ায় সরাসরি শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। বাকি পানি শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু কীভাবে ঘটে পানিকে ঘিরে জীবনধারণের পুরো প্রক্রিয়া? তা–ই দেখা যাক।

ধাপ ১ - পানি পান

পানি পান করামাত্রই মস্তিষ্ক সংকেত পায়, আপনার শরীর পানিপূর্ণ হচ্ছে। খেয়াল করলে দেখবেন, যতই তৃষ্ণা পাক না কেন, পানিতে প্রথম চুমুক দেওয়ামাত্রই তা দূর হয়ে যায়, পুরো পানি পান করার দরকার হয় না। পরীক্ষা করে দেখতে পারেন!

তবে পানি শরীরে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে কোষগুলো হাইড্রেড বা জলযোজিত হয়ে যায় না। কিন্তু মস্তিষ্ক আমাদের পানিপূর্ণ হওয়ার সংকেত পাঠায়, যাতে খুব বেশি পানি পান করা থেকে আমাদের বিরত রাখা যায়।

ধাপ ২ - খাদ্যনালী

মুখ থেকে গলা দিয়ে নেমে খাদ্যনালির সাহায্যে শরীরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। খাদ্যনালিই মূলত মুখ ও পাকস্থলীর মাঝের পথ।

আমাদের শরীর পানি শোষণ করলেও খাদ্য পরিপাক করে। অর্থাৎ জটিল খাবার সরল করা হয় যতক্ষণ না পুষ্টি উপাদান শোষণের জন্য উপযোগী হয়। কিন্তু পানি স্বাভাবিক অবস্থাতেই আমরা শোষণ করতে পারি।

ধাপ ৩ - পাকস্থলী

পাকস্থলীতে গিয়ে পানি রক্তপ্রবাহে শোষিত হয়। খালি পেটে পানি খুব দ্রুত শোষিত হয়, ভরা পেটে হয় একটু দেরিতে। এই কারণে সকালে ঘুম ভাঙার পরপরই পানি পান স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

ধাপ ৪ - ক্ষদ্রান্ত্র

পানি পাকস্থলী দিয়ে ক্ষুদ্রান্ত্রে যায়। ক্ষুদ্রান্ত্রের দায়িত্ব বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এই অঙ্গ পান করা পানি যাতে সব কোষে সঠিকভাবে পৌঁছায়, সেটা লক্ষ রাখে। ফলে শরীর সঠিকভাবে কাজ করতে পারে।

আরও পড়ুন

কিডনি

আমাদের দেহের প্রধান রেচন অঙ্গ হলো কিডনি। শরীর থেকে নানা অপদ্রব্য আলাদা করতে কিডনি অনেকটা ছাঁকনির মতো কাজ করে। তবে এ জন্য দরকার হয় প্রচুর পরিমাণ পানি। কিডনি পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছে কি না, তা আমরা নিজেরাই বুঝতে পারি। যদি মূত্রের রং গাঢ় হলুদ হয়, তার অর্থ পানি পান করা দরকার।

তৃষ্ণা পেলে আমরা সবাই মুখের ভেতরের শুষ্কতা টের পাই

মস্তিষ্ক

পান করা কিছু পরিমাণ পানি আমাদের মস্তিষ্কে পৌঁছায়। মস্তিষ্কের কোষগুলোর হরমোন উৎপাদনের জন্য পানির দরকার। এ ছাড়া আমাদের নড়াচড়ার যেকোনো সংকেত পাঠানোর জন্যও পানির দরকার পড়ে। পানি ছাড়া আমরা চলাফেরাও করতে পারব না।

ঘাম

শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে তা স্বাভাবিকে নামিয়ে আনে পানি। এই কারণেই আমরা ঘামি। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ প্রতিদিন ৫০০-৬০০ মিলিলিটার ঘামেন। প্রায় এক গ্লাস পানির সমান!

ক্ষুদ্রান্ত্রের দৈর্ঘ্য প্রায় ৬ মিটার!

অস্থিসন্ধি

আমাদের হাড় জোড়া লাগে যে স্থানগুলোতে, সেগুলোকেই মূলত অস্থিসন্ধি বলা হয়। পানি অস্থিসন্ধিগুলোকে সুস্থ আর স্থিতিস্থাপক রাখে। এই কারণেই আমরা হাঁটু কিংবা কনুই ভাঁজ করতে পারি।

লালা

তৃষ্ণা পেলে আমরা সবাই মুখের ভেতরের শুষ্কতা টের পাই। এর কারণ, লালা তৈরি না হওয়া। পানি এই লালা তৈরির কাজ করে। খাবার গেলার কাজটা অনেকখানি সহজ করে তোলে মুখের ভেতরে থাকা লালা।

সূত্র: হাউ ইট ওয়ার্কস

আরও পড়ুন