মানবমস্তিষ্কে চিপ বসাল ইলন মাস্কের নিউরালিংক

শিল্পীর চোখে, টেলিপ্যাথি বসানো হতে পারে এভাবে

মানবমস্তিষ্কে চিপ বসানোর অনুমতি পেল নিউরালিংকসম্প্রতি মানুষের মস্তিষ্কে সফলভাবে মাইক্রোচিপ বসিয়েছে ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান নিউরালিংক। ২৯ জানুয়ারি, সোমবার এক্সে (আগের নাম টুইটার) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্পেস এক্স ও নিউরালিংকের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক। 

তিনি লিখেছেন, ‘প্রথমবারের মতো এক ব্যক্তির মস্তিষ্কে সফলভাবে নিউরালিংকের চিপ যুক্ত করা হয়েছে। তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন। প্রাথমিকভাবে আশাজনক সাড়ার চিহ্ন দেখা যাচ্ছে নিউরনে।’ 

এর আগে, ২০২৩ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন বিভাগ মানুষের মস্তিষ্কে মাইক্রোচিপ বসানোর অনুমতি দিয়েছিল ইলন মাস্কের এ প্রতিষ্ঠানকে। অনুমতি পাওয়ার পরে এই প্রথম মস্তিষ্কে চিপ বসানোর চেষ্টা করে সফল হলো নিউরালিংক। যাঁরা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নাড়াতে অক্ষম কিংবা বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী—এই চিপ তাঁদের সেই সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবে। 

কীভাবে কাজ করবে এই চিপ? প্রথমে মানুষের মস্তিকে চুলের মতো সূক্ষ্ম তার ঢোকানো হবে খুব সাবধানে। তারপর সেই তারগুলো মস্তিষ্কের সংকেত সরাসরি ব্লুটুথ সংযোগের মাধ্যমে মোবাইলে পাঠানো যাবে। যাঁরা শারীরিকভাবে হাত নাড়াতে অক্ষম, তাঁরা এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে কম্পিউটার চালাতে পারবেন। সরাসরি হাত দিয়ে মাউস না চেপে মস্তিষ্কের সাহায্যে কম্পিউটারের কার্সর পরিচালনা করা যাবে। তাই ইলন মাস্ক এর নাম দিয়েছেন টেলিপ্যাথি।

ইলন মাস্ক
ফাইল ছবি: রয়টার্স

মাস্ক জানিয়েছেন, যাঁরা কোনো কারণে অঙ্গপ্রতঙ্গ হারিয়েছেন, তাঁরাই প্রাথমিকভাবে এই চিপ ব্যবহার করবেন। 

তবে মাস্কের এই চিপ নিয়ে অনেক সমালোচনাও আছে। ২০২২ সালে রয়টার্স জানিয়েছিল, এই চিপ পরীক্ষার কারণে তখন ভেড়া, বানর ও শূকরের মতো প্রায় দেড় হাজার প্রাণী মারা গিয়েছিল। যদিও নিউরালিংক তা অস্বীকার করে। এর আগে, ২০২১ সালে নিউরালিংকের ‘লিংক’ নামে একটি চিপ সফলভাবে বসানো হয় পেজার নামে একটি বানরের মাথায়। সেটাই ছিল অ্যানিমেল ট্রায়াল, অর্থাৎ বিভিন্ন প্রাণীর মাথায় এই চিপ বসিয়ে পরীক্ষা করে দেখার সময়ের সবচেয়ে বড় সফলতা।

নিউরালিংকের টেলিপ্যাথি

মানবমস্তিষ্কে চিপ বসানোর এই প্রক্রিয়া সবে শুরু হলো। এরকম আরও কিছু মানুষের মস্তিষ্কে চিপ বসানো হলে বোঝা যাবে, চিপটি মস্তিষ্কে স্থাপনের জন্য আসলে কতটা কার্যকর। বলা বাহুল্য, যাঁদের মস্তিষ্কে চিপ বসানো হচ্ছে, তাঁরা এই চিকিৎসা নিতে আগ্রহী হয়েছেন ও অনুমতি দিয়েছেন। সব মিলে চিপটি কতটা কার্যকর, তা বুঝতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

সূত্র: বিবিসি, আল জাজিরা ও এক্স-এ ইলন মাস্কের পোস্ট