প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে কুকুর মানুষের বিশ্বস্ত বন্ধুতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু মানুষ পৃথিবীতে আসার আগে কুকুর ছিল বন্যপ্রাণী। বন্য কুকুর কীভাবে মানুষের বিশ্বস্ত বন্ধুতে পরিণত হলো, সেটা নিয়ে আফ্রিকায় বেশ কটি রূপকথা বা উপকথা প্রচলিত আছে। সে যাহোক, এই পৃথিবী আমাদের চোখে রঙিন। তাই স্বাভাবিকভাবে আমাদের ধারণা, সব প্রাণীর চোখেই পৃথিবী রঙিন। কিন্তু আসলে কি তাই?
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বেশিরভাগ প্রাণী তাদের চোখে পৃথিবীর রং দেখতে পায় না। অর্থাৎ তারা প্রকৃতির কোনো রং দেখে না। এই দলে আছে কুকুরসহ আরও আনেক প্রাণী। গবেষকরা নিশ্চিত হয়েছেন, মানুষ ও বানর প্রজাতির প্রাণীরাই শুধু রঙিন পৃথিবী দেখতে পায়। স্পেনের বিখ্যাত বুল ফাইটে ম্যাটাডোর ষাঁড়ের সামনে লাল কাপড় নেড়ে রাগানোর চেষ্টা করতে আমরা অনেকেই দেখেছি। রীতিমতো রোমহর্ষক ঘটনা। কিন্তু গবেষকরা বলেন, ষাঁড়ের সামনে অন্য কোনো রঙের কাপড়ও এভাবে নাড়ানো হলে ষাঁড় রেগে যাবে। কারণ, ষাঁড় আসলে লাল রং আলাদাভাবে বুঝতেই পারে না। অর্থাৎ ষাঁড়ের চোখেও পৃথিবী সাদা-কালো বা ধূসর।
যারা কোনো রং বুঝতে পারে না তাদেরকে কালার ব্লাইন্ড বা বর্ণান্ধ বলে। কুকুরসহ বেশিরভাগ প্রাণীই বর্ণান্ধ। আসলে কুকুর তার স্বাভাবিক কাজকর্মের জন্য রঙের চেয়ে গন্ধের ওপর বেশি নির্ভরশীল। তাই রং না দেখলেও তার জন্য কোন ঝামেলা হয় না। এসব প্রাণীদের মতো মানুষও বর্ণান্ধ হতে পারে। এসব মানুষ জন্ম থেকে প্রকৃতির বিশেষ কোন রং বুঝতে পারে না। শোনা যায়, আমাদের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও নাকি ছিলেন বর্ণান্ধ।