শহরের ফুসফুস আর পাখিদের অরণ্য

বাগান বিলাস ফুলে বাহারি রঙের মৌটুসী পাখি কাটাছড়ি, রাঙামাটি, ১৬ জানুয়ারিছবি: সুপ্রিয় চাকমা

২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাস। সবে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষ শেষ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণদের হাত ধরে জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে জীববৈচিত্র্য নিয়ে গবেষণায় একঝাঁক তরুণ গবেষক। তখন বাংলাদেশের বন, বন্যপ্রাণী, প্রজাপতি গবেষকদের হাতেখড়ি হয়েছে এই উদ্যানে। আর এই উদ্যানের মাধ্যমেই আমার প্রবেশ প্রকৃতি রাজ্যের বিশালতার মাঝে। ইটকাঠে পরিপূর্ণ এই দূষিত শহরে জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান বাংলাদেশের বন্যপ্রাণীবিজ্ঞানী, গবেষক, প্রকৃতিপ্রেমীদের আতুঁড়ঘর। আর আতুঁড়ঘর হওয়ার একটি বড় কারণ এখানকার জীববৈচিত্র্যের সমাহার, বিশেষ করে পাখিবৈচিত্র্য।

বাংলাদেশে ৭০০ প্রজাতির বেশি পাখি আছে। এর মধ্যে জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানেই আছে ১৫০ প্রজাতির পাখি। আমাদের দেশের মোট পাখি প্রজাতির ২২ শতাংশ আছে এই উদ্যানে।

গোলাপ বাগানের ডালে উড়ে এসে বসল তিলা ঘুঘু। ওরা এখন রোদে নিজেদের শরীর গরম করছে। পাশাপাশি এই উদ্যানে দেখা মেলে ইউরেশীয় কণ্ঠী ঘুঘু। পাশের বটগাছে হঠাৎ চোখে পড়ল একঝাঁক হরিয়াল।

মূলত বৈচিত্র্যে ভরা উদ্ভিদ, তরু, গুল্ম, লতা, জলাশয়, প্রাকৃতিক পরিবেশ, প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন স্তরের বন এখানকার পাখি সমারোহের এক অন্যতম বড় কারণ। আর ইটকাঠে পরিপূর্ণ ঢাকা শহরে সবুজ একেবারে শূন্যের কোঠায়। সেখানে এই এলাকায় এত উদ্ভিদ বৈচিত্র্যের কারণে পাখিরা মূলত এই স্থানকে বেছে নিয়েছে আবাসস্থল হিসাবে। গত সাত বছরের কালের পরিক্রমায় যাদের সঙ্গে দেখা হয়েছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবাক হয়েছি। তবে সে সব পাখিদের উপস্থিতি প্রমাণ দেয়, ঢাকা একসময় জীববৈচিত্র্যে কতটা সমৃদ্ধ ছিল।

শীতের শেষে যখন বসন্তের আগমন ঘটে, উদ্ভিদ উদ্যানে ঢুকতেই গোলাপ বাগান, আকাশের দিকে তাকাতেই উড়ছে ভুবনচিল আর বাতাসিরা। নীল আকাশ আপন রাজত্বে ডানা মেলে উড়ছে আপন মনে। ভুবনচিলের পাশাপাশি জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের লেকগুলোর আশপাশে আছে শঙ্খচিলও।

ভরদুপুরে গাছের ডালে বসেছে একটি ঘুঘু। মানরা, মানিকগঞ্জ সদর, ২১ জুলাই
ছবি: আবদুল মোমিন

হঠাৎ গোলাপ বাগানের ডালে উড়ে এসে বসল তিলা ঘুঘু। ওরা এখন রোদে নিজেদের শরীর গরম করছে। পাশাপাশি এই উদ্যানে দেখা মেলে ইউরেশীয় কণ্ঠী ঘুঘু। পাশের বটগাছে হঠাৎ চোখে পড়ল একঝাঁক হরিয়াল। হলদে পা হরিয়াল এই উদ্যানের উল্লেখযোগ্য পাখি। পাশাপাশি দেখা মেলে কমলাবুক হরিয়ালের। যদিও কমলাবুক হরিয়ালের সংখ্যা এখন অনেক কমে গিয়েছে। তবে এই উদ্যানে অপূর্ব সৌন্দর্যের অধিকারী পাতি শ্যামা ঘুঘুর দেখা মেলে।

আরও পড়ুন

হরিয়ালের পাশাপাশি বটগাছে আরও দেখা মেলে তিন প্রজাতির বসন্ত বাউরি। এদের ডাক পুরো উদ্যানেই শোনা যায়। কোকিল জাতীয় পাখির মধ্যে এখানে উল্লেখযোগ্য পাখি হলো সবুজঠোট মালকোআ বা বন কোকিল। এদের সংখ্যা বর্তমানে এই উদ্যানে নেই বললেই চলে। তবে আজ থেকে ৫-৬ বছর আগেও এই পাখি সচরাচর চোখে পড়ত। পাশাপাশি এই উদ্যানে দেখা মেলে এশীয় কোয়েল, করুন পাপিয়া, বউ কথা কও, মেটে পেট পাপিয়া, ছোট ও বড় কুবো, খয়রা পাখ পাপিয়া, চাতক পাখি, ছোট কোকিল এবং পাতি চোখগ্যালো। গ্রীষ্মের অলস দুপুরে তাদের সুরে সবাই মোহিত হয়। পাখিদের এই সম্রাজ্যে এরা অন্যরকম এক আবাহ তৈরি করে।

গাছের কোটরে বাসা বেঁধেছিল এক জোড়া খুঁড়ুলে প্যাঁচা। গত মঙ্গলবারের ঝড়ে গাছের কাণ্ডসহ ডাল ভেঙে পড়ায় গৃহহীন হয়ে ঘুরছে প্যাঁচা দুটি। বাবুর বাগান, দাপুনিয়া, পাবনা, ৭ মে
ছবি: হাসান মাহমুদ

সামনের দিকে এগোতেই দেখা মেলে জলাশয়। জলাশয়গুলো জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের পাখিদের অন্যতম প্রধান আবাসস্থল। এই জলাশয়ে হরহামেশাই দেখা মেলে ছোট পানকৌড়ি পাখি। তবে আগে নিয়মিত দেখা মিলত ডুবুরি আর বুনো হাঁসের। ডাহুক জাতীয় পাখির নিয়মিত দেখা মেলে এখানে। তবে কালেম পাখিরা হারানোর পথে। জলাশয়গুলোকে কেন্দ্র করে থাকে বিভিন্ন প্রজাতির খঞ্জন, সঙ্গে মাছরাঙাও। মেঘ হও মাছরাঙা এই উদ্যানের অন্যতম পাখি। শীতেকালে কালেভদ্রে দেখা মেলে বড় পানকৌড়ির। পাশাপাশি  জিরিয়া, বাটানেরও দেখা মেলে জলাশয়ের আশপাশে। আছে বিভিন্ন প্রজাতির বক, বগা-বগলারা। তবে এখানে বিভিন্ন প্রজাতির বগার সংখ্যা অনেক কমে গেছে। এ ছাড়া হলদে বগলা আর লালচে বগলার দেখা মেলে লেকগুলোতে। পাশাপাশি কালোমাথা নিশিবক, খুদে বকসহ আরও পাখিদের দেখা মেলে এই লেকগুলোতে। অতীতে এই লেকগুলোতে দেখা মিলত বুনো হাঁসের। তবে এখন আর এই পাখি দেখা যায় না।

এবার একটু বনে ফিরে যাই। বন বলতেই চোখে ভাসে এই উদ্যানে বিভিন্ন প্রজাতির দামা পাখির। কমলা দামা বা কমলাবউয়ের দেখা সারাবছরই পাওয়া যায়। এর অপূর্ব কমলা বর্ণ আকৃষ্ট করে সবাইকে। পাশাপাশি আরও আছে আঁশটে দামা, টিকলের দামা। কালেভদ্রে আরও দামা পাখির দেখা মেলে।

টিয়া এই উদ্যানের একটি উল্লেখযোগ্য পাখি। সবুজ টিয়ার বড় ঝাঁক দেখা যায় এই উদ্যানে। পাশাপাশি আছে চন্দনা টিয়া। মাঝেমধ্যে দেখা মেলে হিরামন আর মদনা টিয়া।

নিশাচর হলেও একটু ভালো করে খেয়াল করলে সকালে গাছের কোটরে দেখা মেলে খুঁড়লে প্যাঁচার। রোদে গা এলিয়ে দিয়ে ঘুম কাতর চোখে রোদে বসে থাকে এই খুঁড়লে প্যাঁচা।

আকাশ জুড়ে এখানে ঝাঁক ধরে উড়ে বেড়ায় বাতাসি পাখিরা। তালবাতাসি, ঘরবাতাসির আনাগোনা থাকে। শীতে সংখ্যা বাড়ে আবাবিল পাখির। জঙ্গলের মধ্যে হাঁটতে হাঁটতে দেখলাম, সামনের মরা পাতার ভেতর থেকে হঠাৎ দুটি পাখি উড়ে গেল। নিজেদের শুকনো পাতার মধ্যে এমনভাবে মিলিয়ে রেখেছে, দেখে মনেই হয়নি এখানে কোনো পাখি আছে। এই পাখিটির নাম রাতচরা পাখি। জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে বাঁশ বাগানে দেখা মেলে এই পাখিটির। তবে বসন্তেই সবচেয়ে বেশি দেখা মেলে। আর রাতে চাক, চাক করে ডাকার কারণে সহজেই সবার চোখে পড়ে। এরা মূলত নিশাচর পাখি।

জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের নিশাচর পাখিদের মধ্যে অন্যতম বিভিন্ন প্রজাতির প্যাঁচা। নিশাচর হলেও একটু ভালো করে খেয়াল করলে সকালে গাছের কোটরে দেখা মেলে খুঁড়লে প্যাঁচার। রোদে গা এলিয়ে দিয়ে ঘুম কাতর চোখে রোদে বসে থাকে এই খুঁড়লে প্যাঁচা। সন্ধ্যা হলেই আনাগোনা বাড়ে লক্ষ্মী প্যাঁচার। দেখা মেলে খয়রা শিকরে প্যাঁচাদেরও। তবে আগে খয়রা মেছো প্যাঁচা নিয়মিত দেখা গেলেও এখন আর তেমন দেখা যায় না। নীম প্যাঁচাদেরও দেখা মেলে মাঝেমধ্যে। শিকরা বাজ এই উদ্ভিদ উদ্যানের উল্লেখযোগ্য শিকারি পাখি। এমনকি এখানে এই পাখিরা প্রজননও করে। আছে পাতি শাহীন এবং লাল ঘাড় শাহীনও। লাল ঘাড় শাহীনকে স্থানীয় ভাষায় বলে তুরমতি বাজ।

আগে মধুবাজ নিয়মিত দেখা গেলেও বর্তমানে অনেকদিন পাখিটির দেখা পাই না। তবে তিলা নাগ ঈগলের দেখা মেলে প্রায়শই। দুইবার দেখা পেয়েছিলাম মেটে মাথা কুড়া ঈগলের। আগেই বলেছি চিলেদের কথা।

আরও পড়ুন

তবে পেছনের দিকের লেকগুলোতেই থাকে সবচেয়ে বেশি শিকারি পাখি। দিন দিন কমে যাচ্ছে এই পাখিদের সংখ্যা। লেকগুলোতে আগে জলপিপির দেখা মিললেও এখন আর তেমন একটা দেখা যায় না। লাল লতিকা হট টিটি, বিভিন্ন প্রজাতির খঞ্জন এই লেকগুলোর উল্লেখযোগ্য পাখি। দেখা মেলে ডাহুকেরও।

জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের আরও মনোরম দৃশ্য তৈরি করে সুইচোরা পাখিরা। সবুজ সুইচোরা শীতকালে এক অনন্য রূপ ধারণ করে। আকাশে ডিগবাজি খেয়ে এরা ফড়িং ধরে খায়। হুদহুদেরও দেখা মেলে হর হামেশাই। তবে সংখ্যায় এরা কম। উদ্যানের পেছনের দিকে দেখা যায় নীলকন্ঠ পাখিও।

উদ্যানের আরও গহীনে প্রবেশ করলে যে পাখিটির ডাক আকৃষ্ট করবে, তা হলো বিভিন্ন প্রজাতির বসন্ত বাউরী পাখি। এই উদ্যানে সচরাচর দেখা মেলে দাগি বসন্ত। তবে  টুং টুং শব্দে সেকরা বসন্তের ডাকও শোনা যায়। আমি পুরো আট বছরে তিনবার দেখা পেয়েছিলাম এই পাখির।

কালোমাথা বেনে বউ পাখি। জাতীয় বোটানিক্যাল গার্ডেন, ঢাকা। সেপ্টেম্বর ২০২২।
ছবি: সামিউল আহসান

খয়রা কাঠঠোকরা, বাতাবি কাঠ ঠোকরা, সোনালিকা কাঠ ঠোকরার দেখা মেলে এই উদ্যানে সচরাচর। আরও আছে ইউরেশীয় ঘাড়ব্যথা বা মেঠো কাঠঠোকরা নামে পাখি। গ্রীষ্মকালে অনন্য সুন্দর পরিযায়ী পাখি আসে এখানে। নাম বন সুন্দরী। গ্রীষ্মকালে এই  পাখিটি বাংলাদেশে পরিযাণ এবং প্রজনন করতে আসে।

এ উদ্যানের আরও একটি সুন্দর পাখির নাম বেনে বউ। এই বনে তিন প্রজাতির বেনে বউ দেখা যায়। সারা উদ্যানময় শোনা যায় এই বেনে বউ পাখির ডাক। কালো মাথা বেনে বউ সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। আরও দেখা মেলে কালো ঘাড় বেনে বউ পাখির। তবে তা শুধু শীতকালে। একবার দেখেছিলাম সোনা বউ পাখি।

শীতের শেষে ঝাঁকে ঝাঁকে দেখা যায় সাত সাহেলী। এদের সুর এক অন্যরকম আবহ তৈরি করে। পাশাপাশি এই উদ্যানে আরও দেখা মেলে সুইনহজ সাহিলীর। আছে ফটিকজল এবং শ্বেতাক্ষীও। বিভিন্ন প্রজাতির ফিঙে আছে—কালো ফিঙে, কেশরী ফিঙে, ধূসর ফিঙে ও ছোট ভীমরাজ।

কসাই পাখিদের আনাগোনা আছে এই জঙ্গলে। এখানে লম্বা লেজ কসাই পাখির দেখা মেলে সারা বছরই। শীতে দেখা যায় খয়রা কসাই এবং ধূসর পিঠ কসাই। জঙ্গলের অন্যতম দৃষ্টি নন্দন পাখি ছিল ছাতি ঘুরানি এবং কালা ঘাড় রাজন। আরও ছিল সাহেব বুলবুলি। তবে এদের এখন বেশি দেখা যায় না। চার বছর আগে দেখা পেয়েছিলাম সিপাহি বুলবুলির। তবে এখনও ঝুটখুলি বুলবুলি ভালোই দেখা যায়।

উদ্যানের জলাভূমিগুলোকে কেন্দ্র করে দেখা মেলে লেজ নাড়িয়ে ঘুরে বেড়ানো খঞ্জনা পাখিদের। ধলা খঞ্জন, ধলা ভ্রু খঞ্জন, সিট্রিন খঞ্জন, হলদে খঞ্জন এই উদ্যানের অন্যতম খঞ্জন প্রজাতির পাখি।

উদ্যানের মধ্যে হাঁটলে এখনো শোনা যায় দোয়েলের শিষ। এটা সত্যি অন্যরকম এক আবহ নিয়ে আসে এই উদ্যানে। তবে সুরের মধ্যে হঠাৎ উচ্চ স্বরে ডেকে ওঠে আর এক পাখি, নাম খয়রা লেজ হাঁড়িচাঁচা। বসন্ত বাউরী, বন চড়ুই, দোয়েল, কোকিল, টিয়া, কাঠ ঠোকরা যখন একসঙ্গে ডেকে ওঠে, তখন এই উদ্যানে তৈরি হয় এক অন্যরকম আবহ। সবকিছু মিলে অন্যরকম এক প্রশান্তি পায় শহরবাসী।

ঘাসবন না থাকলেও তুলিকা, ভোমরাছোটন, প্রিনিয়া, ঘাসপাখির দেখা মেলে পেছনের হেলিপ্যাড এলাকায়। আর শীতে এর পাশের পুকুরটিতে দেখা মেলে আবাবিলসহ বিভিন্ন প্রজাতির চুটকি ও ফুটকি পাখিদের। তবে ফুলঝুরি নামে পাখিটি বলতে গেলে এই জঙ্গল থেকে একেবারেই হারিয়ে গেছে। টিকে আছে বেগুনি এবং বেগুনি কোমড় মৌটুসী পাখিরা। দেখা মেলে বাবুই পাখির কিন্তু তা পিছনের লেকের ধারে। সংখ্যায়ও একেবারে কম।

আরও পড়ুন

মুনিয়া পাখিটিরও দেখা মেলে এই বনে। তিলা মুনিয়া এবং দেশি চাঁদিঠোটের দেখা মেলে। কিন্তু বর্তমানে এদের সংখ্যা কমে গেছে অনেক। বন ছাতারে এই উদ্যানের পরিচিত পাখি। দলবেঁধে ঘুরে বেড়ায় এবং উচ্চ স্বরে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেয়। দল বেঁধে গাছের মগডাল থেকে মাটিতে নেমে আসে, খুঁটে খুঁটে পোকামাকড় খায়।

পেয়ারাগাছের ডালে এক বন খঞ্জন। বন খঞ্জন সুন্দর-চঞ্চল এক পাখি। আমাদের দেশে শরৎ-শীতের পরিযায়ী পাখি। প্রাকৃতিক বন তথা গ্রামীণ বন-বাগানসমৃদ্ধ এলাকায় বেশি দেখা যায়। টেংরা, শ্রীপুর, গাজীপুর, ৮ অক্টোবর
ছবি: সাদেক মৃধা

উদ্যানের জলাভূমিগুলোকে কেন্দ্র করে দেখা মেলে লেজ নাড়িয়ে ঘুরে বেড়ানো খঞ্জনা পাখিদের। ধলা খঞ্জন, ধলা ভ্রু খঞ্জন, সিট্রিন খঞ্জন, হলদে খঞ্জন এই উদ্যানের অন্যতম খঞ্জন প্রজাতির পাখি।

গাছকে কেন্দ্র করে বেঁচে থাকা পাখিদের সংখ্যাই জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে বেশি। তবে জলাভূমিকে কেন্দ্র করে বেঁচে থাকা পাখিদের আনাগোনা আছে এখানে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, এই উদ্যানে পাখিদের  সংখ্যা কমে গেছে। এর অন্যতম বড় কারণ, এখানে বৃক্ষ, তরুলতা, গুল্মের ব্যাপক পরিবর্তন। অপরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণও পাখিদের কমে যাওয়ায় ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু আসার কথা হলো, বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার কারণে উদ্যানে আবার প্রাকৃতিক পরিবেশ পুনর্জীবিত হচ্ছে। ফলে উদ্যানে পাখিদের আবাসস্থল আবার আগের মতো হতে পারে।

ইট কাঠের নগরীতে ছোট্ট পরিসরে এত বিপুল পরিমাণ পাখি প্রজাতির  উপস্থিতি এটাই প্রমাণ করে, যথাযথ সংরক্ষণ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আমরা বাঁচাতে পারব পাখিদের। এটা অনুকরণীয় হতে পারে অন্যান্য শহরের ক্ষেত্রেও।

লেখক: বন্যপ্রাণী পরিবেশবিদ, গবেষক ও লেখক

আরও পড়ুন