বিদ্যুতের তারে পাখি বসলে শক লাগে না কেন
খোলা আকাশের নিচে সারি সারি বিদ্যুতের তারে প্রায়ই আরাম করে বসে থাকতে দেখা যায় পাখিদের। এই তারের ভেতর দিয়ে প্রায় ৪ লাখ ভোল্টের মতো বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। কিন্তু পাখিদের কিছুই হয় না! ওরা কেন শক খায় না?
এই প্রশ্নের উত্তরে যাওয়ার আগে জেনে নিই, পাখিরা কেন তারে বসে। তারের ওপর বসলে চারপাশাটা স্পষ্ট দেখা যায়। শিকার খুঁজতেও সুবিধা। আবার ওদেরও শিকার হওয়ার ভয় থাকে না। তাই পাখি তারে বসতে পছন্দ করে।
তবে কোনো পাখিই যে তারে বসে মারা যায় না, তা কিন্তু ঠিক নয়। অনেক পাখিই বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়! আমেরিকার এক গবেষণা বলছে, প্রতি বছর দেশটিতে নয় লাখ থেকে এক কোটিরও বেশি পাখি এভাবেই মারা যায়। তবে সেগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই বড় পাখি। যেমন, ঈগল বা বাজপাখি।
তাহলে ছোট্ট পাখিগুলো বেঁচে যায় কীভাবে? ছোট্ট পাখিগুলো বেঁচে যায়, কারণ সার্কিট বা বর্তনী পূর্ণ হয় না। পাখিটা যখন শুধু একটা তারের ওপর বসে থাকে, তখন সে মোটেও মাটির সঙ্গে যুক্ত থাকে না। অর্থাৎ, ছোট পাখি বিদ্যুতের তার এবং মাটির মধ্যে কোনো সংযোগ তৈরি করে না। তাই সার্কিট পূর্ণ হয় না। কিন্তু আমরা যদি মাটিতে দাঁড়িয়ে ওই তার ছুঁয়ে ফেলি, তাহলেই আমরা সার্কিটটি পূর্ণ করব এবং ভয়ঙ্কর বিপদ ঘটবে।
আমেরিকার এক গবেষণা বলছে, প্রতি বছর দেশটিতে নয় লাখ থেকে এক কোটিরও বেশি পাখি এভাবেই মারা যায়। তবে সেগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই বড় পাখি। যেমন, ঈগল বা বাজপাখি।
বিদ্যুৎ সবচেয়ে সহজ পথে মাটিতে বা কম ভোল্টেজের দিকে ছুটে যেতে চায়। পাখিটা যখন একটা তারে বসে থাকে, তখন বিদ্যুতের কাছে ওই তারটাই সবচেয়ে সহজ পথ, পাখিটার শরীর নয়। কিন্তু পাখি যদি ভুল করে দুটি তার স্পর্শ করে ফেলে, তাহলে ঘটবে বিপদ। ঈগলের মতো বড় পাখি ডানা ঝাপটাতে গিয়ে বা বসার সময় ভুল করে দুটো তার একবারে ছুঁয়ে ফেলে। তখনই বিপদ ঘটে! কারণ, তখন বিদ্যুৎ এক তার থেকে অন্য তারে যাওয়ার জন্য পাখিটার শরীরকে একটা সহজ শর্টকাট পথ হিসেবে ব্যবহার করে।
আরও একটা কারণে পাখি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যেতে পারে। পাখি যদি তারে বসে ডানা বা ঠোঁট দিয়ে পাশের বিদ্যুতের খুঁটিটা ছুঁয়ে ফেলে, তাহলেও শক খাবে। কারণ, খুঁটি মাটির সঙ্গে যুক্ত থাকে।