ব্রিটিশ ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার ২০২৪

প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে ‘ব্রিটিশ ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার’ প্রতিযোগিতা এক বিশেষ আকর্ষণ। প্রতি বছরের মতো এবারও প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য ক্যামেরাবন্দি হয়েছে অসাধারণ কিছু ছবিতে। এ প্রতিযোগিতায় ১১টি ক্যাটাগরিতে মোট ১৪ হাজারের মতো ছবি জমা পড়েছে। ২০২৪ সালের এ প্রতিযোগিতা শেষ হয়েছে সম্প্রতি। এতে ব্রিটিশ ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪-এর সব ক্যাটাগরি মিলিয়ে সেরা হয়েছে রায়ান স্টকারের তোলা ‘ওশেন ড্রিফটার’ নামের ছবিটি। মোহনীয় এ ফটোগ্রাফে দেখা যাচ্ছে পানির ওপর ভাসমান, শামুকে ঢাকা পুরাতন একটি ফুটবল। প্রতিযোগিতার ওয়াইল্ডলাইফ (বন্যপ্রাণী) ও নেচার (প্রকৃতি) ক্যাটাগরির বাছাইকৃত সেরা ১০টি ছবি প্রকাশিত হলো বিজ্ঞানচিন্তার পাঠকদের জন্য।

১ / ১০

সমুদ্রে ভেসে চলা শামুক ঢাকা ফুটবল

একটি ফুটবল পাড়ি দিয়েছে বিশাল অতলান্তিক সমুদ্র।দীর্ঘ এ পথে এর সঙ্গী ছিল অজস্র সাদা শামুক।এই শামুকগুলো ‘গুজ বার্নাকল’ নামে পরিচিত।ফুটবলটি সমুদ্রযাত্রা শেষে গিয়ে পৌঁছায় দক্ষিণ ইংল্যান্ডের ডরসেট কাউন্টিতে, ইংলিশ চ্যানেলের জুরাসিক কোস্ট বা উপকূলে।সে সময় এ অসাধারণ দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দি করেন রায়ান স্টকার।তিনিছবিটিরনামদিয়েছেন ‘ওশেনড্রিফটার’।তাঁর এ ছবিটিই ২০২৪ সালের ব্রিটিশ ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে।

২ / ১০

রাতের পাখি

‘স্টারলিং অ্যাট দ্য নাইট’ শিরোনামের ছবিটি ব্রিটিশ ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি পুরস্কার-এ প্রাণীদের প্রতিকৃতি বিভাগে বিজয়ী হয়েছে। এই রাতের পাখিটির নাম কমন স্টারলিং বা স্টারনাস ভালগারিস। পাখিটির এ অভূতপূর্ব ছবিটি তোলেন মার্ক উইলিয়ামস। ছবিটি তোলা হয়েছে ইংল্যান্ডের ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসের সোলিহুল এলাকার একটি বাগান থেকে।

৩ / ১০

কাঠবিড়ালির ছায়া

রোসাম্যান্ড ম্যাকফারলেনের তোলা একটি লাল কাঠবিড়ালির ছায়া-ছবি রানার-আপ হয়েছে ‘কালো-সাদা’ বিভাগে। ‘স্কোয়ারেল সিলোউট’ নামের এ ছবি তোলা হয়েছে ইংল্যান্ডের কুম্বরিয়ায়।

৪ / ১০

বসন্তের তিতির

ছবিতে ঠান্ডা, কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে মিড ওয়েলসের একটি বেড়ার ওপর একটি তিতির (ফাসিয়ানাস কোলচিকাস) বসে আছে। তিতিরটির পালক রঙিন ও উজ্জ্বল, কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশে দেখা যাচ্ছে স্পষ্টভাবে। পাখির ঝুঁটি সোজা, চোখ সতর্ক। পটভূমিতে ঘাস, গাছ ও কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। ছবিটি তুলেছেন জেমি স্মার্ট। এটি ব্রিটিশ ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি পুরস্কারের ‘ইলিভেন অ্যান্ড আন্ডার’, অর্থাৎ ১১ ও এরচেয়ে কমবয়সী প্রতিযোগীদের বিভাগের বিজয়ী।

৫ / ১০

দিবাচর শিয়াল

শিয়াল মূলত নিশাচর প্রাণী। গভীর ঝোপ-জঙ্গলের মধ্যেই এদের বাস। তবে মাঝেমধ্যে শহরাঞ্চলে সুযোগ পেলে বেরিয়ে পড়ে শিকারের সন্ধানে। সেটাই দেখা যাচ্ছে ‘ডে ওয়াকার’ নামের এ ছবিতে। ইংল্যান্ডের ব্রিস্টলে অবস্থিত একটি বৈদ্যুতিক কেন্দ্রের পাশ থেকে তোলা হয় ছবিটি। ক্যামেরাবন্দি করেন সাইমন উইথম্যান। তাঁর তোলা এ ছবি শহুরে বন্যপ্রাণী ক্যাটাগরিতে বিজয়ী হয়েছে।

৬ / ১০

মা ও শাবক

ছবিটি ইংল্যান্ড শেরফিল্ড বনভূমিতে তোলা একটি মা ও শাবক রো হরিণের। ফিলিক্স ওয়াকার নিক্সের তোলা ছবি এটি। এতে দেখা যাচ্ছে, বিস্ময়ে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছে মা ও সন্তান। ছবিটি এ বছরের প্রতিযোগিতায় ১২ থেকে ১৪ বছরের প্রতিযোগীদের বিভাগে সেরা হয়েছে।

আরও পড়ুন
৭ / ১০

খুদে বন-বেলুন

ছবিটি মূলত একদল স্লাইম মোল্ড কোমাট্রিচা নিগ্রা ছত্রাকের। এসব ছত্রাক স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে জন্মায়। সাধারণত খুব ছোট আকারের হয় এগুলো। মাথার ব্যাস প্রায় ১ মিলিমিটার। দেখে মনে হচ্ছে, বনের ভেতরে ফোটা খুদে একঝাঁক বেলুন। ছবিটি তুলেছেন জেসন ম্যাককম্ব। বোটানিক্যাল ব্রিটেন ক্যাটাগরিতে বিজয়ী হয়েছে ছবিটি।

৮ / ১০

চারদিকে এত গোলমাল কেন

ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ইংল্যান্ডের স্কারবোরোর উপকূলের স্লিপওয়েতে একটি বিশাল আর্কটিক ওয়ালরাস বা সিন্ধুঘোটক বিশ্রাম নিচ্ছে। সিন্ধুঘোটক হলো অডোবেনিডি (Odobenidae) পরিবারের ওডোবিনাস (Odobenus) গণের একমাত্র জীবিত প্রজাতি। এই সিন্ধুঘোটক সম্প্রতি তীরে এসে বিশ্রাম নেওয়ার সময় স্থানীয় জনগণের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। তখন এর বিরক্তি প্রকাশের এ ছবিটি তোলেন উইল পামার। “হোয়াট’স দ্য ফাস ইজ অল এবাউট” ছবিটি আরবান ওয়াইল্ডলাইফ ক্যাটাগরিতে রানার-আপ হয়েছে।

আরও পড়ুন
৯ / ১০

তিনজনের ভিড়

হিডেন ব্রিটেন ক্যাটাগরির বিজয়ী এ ছবিতে দেখা যাচ্ছে তিনটি সাধারণ নীল প্রজাপতি। ইংরেজিতে ছবিটির নাম দেওয়া হয়েছে থ্রি’স আ ক্রউড। সামনের প্রজাপতিটি ফোকাসে আছে। পাশে, পেছনের দিকে দুটি প্রজাপতিও অবস্থান করছে একই ভঙ্গিতে। এই ধরনের নীল প্রজাপ্রতির বৈজ্ঞানিক নাম পলিওম্যাটেস ইকারাস (Polyommatus icarus)। প্রজাপতির সাধারণ, তবু অসাধারণ এ ছবি ক্যামেরাবন্দি করেছেন রস হোডোনট।   

১০ / ১০

মৌমাছি আর মাকড়সার যুগলবন্দী

এ ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটি অক্স-আইড ডেইজি ফুলের ওপরে একটি ফুলের কাঁকড়া মাকড়সা (মিসুমেনা ভাটিয়া) ও একটি মধু মৌমাছি (এপিস মেলিফেরা) বসে আছে। মাকড়সাটি ফুলের পাপড়ির ওপরে স্থির, এর রঙিন দেহ মিশে গেছে ফুলের সঙ্গে। আর মৌমাছিটি ফুলের কেন্দ্রে বসে মধু সংগ্রহ করছে। ‘ডেইজি ডেঞ্জার’ নামের এ ছবিটি তুলেছেন লুসিয়েন হ্যারিস।

লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ, ঢাকা

সূত্র: বিবিসি সায়েন্স ফোকাস