প্রশ্নোত্তরে নানা স্বাদের বিজ্ঞান দুই মলাটে

মানুষ কৌতূহলী। কৌতূহল থেকেই মনে প্রশ্ন জাগে। আর প্রশ্ন থেকেই জন্ম বিজ্ঞানের। আমাদের মাথায় অনেক প্রশ্ন আসে৷ এটা কী, কেন হয়, কীভাবে হয়—এরকম নানা প্রশ্ন মাথায় উঁকি দেয়৷ হয়তো মনের অজান্তেই৷ সবগুলোর উত্তর মেলে না৷ কিন্তু ভাবুন, এসব প্রশ্নের উত্তর পেলে কী চমৎকার হতো৷ আর এ জন্য যদি প্রশ্ন করে বকা খাওয়ার ভয় না থাকে, তাহলে তো পোয়াবারো।

কিশোর-তরুণদের এরকম নানা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কাজটা এক যুগের বেশি সময় ধরে করে চলেছেন বিজ্ঞান লেখক আব্দুল কাইয়ুম। প্রথম আলোসহ বিভিন্ন জায়গায় যেমন লিখছেন, তেমনি বিজ্ঞানের নানা প্রশ্নের উত্তর বের করছেন দুই মলাটে। তাঁর এ রকম প্রশ্নোত্তরে বিজ্ঞানের বই বিশের বেশি। পাশাপাশি কিশোর-তরুণদের বিজ্ঞানমনস্ক করতে ২০১৬ সাল থেকে প্রতিমাসে তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হচ্ছে বিজ্ঞানবিষয়ক ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তা। সেই ধারাবাহিকতায় তাঁর প্রশ্নোত্তরে বিজ্ঞানের নতুন বই বিজ্ঞানের রাজ্যে কেন কেন এবং কেন

আরও পড়ুন

এ বইয়ে পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, গণিত, পৃথিবী ও মহাবিশ্ব, স্বাস্থ্য ও পুষ্টিসহ রকমারি বিজ্ঞানের অনেক প্রশ্নের উত্তর আছে। যেমন ধরুন, আমরা তরকারিতে একটু বেশি মরিচ হলেই আর খেতে পারি না। কিন্তু টিয়া পাখি একের পর এক মরিচ খেয়ে যায়, ঝাল লাগে না। কেন? কেন টিয়া পাখির ঝাল লাগে না? এটা কি কোনো ম্যাজিক? না। আসলে টিয়া পাখির স্বাদগ্রন্থি ও মানুষের স্বাদগ্রন্থি আলাদা।

আবার ধরুন, বৃদ্ধ হলে মানুষের দাঁত পড়ে যায়। এটা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু কেন বৃদ্ধ হলেই দাঁত পড়ে? এই স্বাভাবিক প্রশ্নটাই কি আপনার মাথায় কখনো এসেছে? হাত-পায়ের কোথাও একটু কেটে গেলেই ব্যাথা লাগে। কিন্তু প্রতিনিয়ত আমরা যে চুল ও নখ কাটি, টেরও পাই না। কেন? সমুদ্রের পানি লবণাক্ত হলেও নদীর পানিতে কেন লবণ নেই? সমুদ্রের পানিতে এ লবণ আসে কোথা থেকে? এরকম নানা প্রশ্নের উত্তর আছে এ বইয়ে।

শুধু বিজ্ঞান নয়, যেমনটা বলেছি, আছে গণিতও। তবে এই গণিত করতে আপনাকে গণিতজ্ঞ হতে হবে না। সাধারণ চিন্তাভাবনা এবং যোগ-বিয়োগ-গুণ-ভাগ করেই এসব সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। যেমন ধরুন, দুই অঙ্কের কিছু সংখ্যা আছে, যেগুলো তাদের অঙ্ক দুটির যোগফলের ৭ গুণ। এখন আপনাকে বলতে হবে, এরকম সংখ্যা কতগুলো আছে এবং কী কী?

একনজরে

বিজ্ঞানের রাজ্যে কেন কেন এবং কেন

আব্দুল কাইয়ুম

প্রকাশক: প্রথমা প্রকাশন

প্রচ্ছদ: মাসুক হেলাল

প্রথম প্রকাশ: ২০২৪

পৃষ্ঠা: ১৪০

দাম: ৩৮০ টাকা

যেমন ‘খালি কলসি বাজে বেশি’—কথাটির সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। কিন্তু কেন খালি কলসি বেশি বাজে? এরকম মজার সব প্রশ্নের উত্তর আছে এ বইয়ে

না না, প্রশ্ন শুনে ভড়কে যাবেন না। চিন্তা নেই। লেখক নিজেই উত্তর দিয়েছেন বইয়ে। শুধু উত্তর-ই নয়, উত্তর কীভাবে বের করলেন এবং কেন এরকম হয়, দিয়েছেন সে ব্যাখ্যাও।

আবার এমন অনেক প্রশ্ন আছে, যেগুলো আমরা জানি। সব সময় ব্যবহার করি। কিন্তু কেন বা কোথা থেকে এল, তা জানি না। যেমন ‘খালি কলসি বাজে বেশি’—কথাটির সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। কিন্তু কেন খালি কলসি বেশি বাজে? এরকম মজার সব প্রশ্নের উত্তর আছে এ বইয়ে।

আবার ভবিষ্যতের কথা ভাবলেও কিছু প্রশ্ন মাথায় আসে আমাদের। যেমন মঙ্গলে কি মানববসতি তৈরি করা সম্ভব? মহাবিশ্বে পৃথিবীর মতো এরকম আরেকটা পৃথিবী কি থাকতে পারে? একটি গ্রহাণু পৃথিবীতে আছড়ে পড়লে কী হবে? মহাবিশ্বে হারিয়ে গেলেই-বা কী হবে? এরকম চমৎকার সব প্রশ্ন দিয়ে বইটি সাজানো।

বইটি বিজ্ঞানের। এখানে সেই বিষয়গুলোই বলা হয়েছে একদম সহজ ভাষায়। তবে উত্তরগুলো একদম সংক্ষিপ্ত। অনেক প্রশ্নের জবাবের জন্যই সম্ভবত। একটু বিস্তৃত পরিসরে জানতে চাইলে তাই এই বই সবটুকু উত্তর দিতে পারবে না। অবশ্য বইটির উদ্দেশ্যও সেটি নয়।

বইটি যেকোনো বয়সী পাঠকেরই উপযোগী। শিশুরা যেমন জানতে পারবে অনেক অজানা প্রশ্নের উত্তর, তেমনি বড়রাও হতাশ হবেন না। পাওয়া যাবে প্রথমাসহ অনলাইন-অফলাইন বইয়ের দোকানগুলোতে।