মহাশূন্যযানের সঙ্গে কোনো গ্রহাণুর সংঘর্ষ ঘটে না কেন

সৌরজগতে মঙ্গল ও বৃহস্পতি—এই দুই গ্রহের মাঝখানে অসংখ্য গ্রহাণুর একটি বেষ্টনী রয়েছে। একে বলা হয় অ্যাস্টেরয়েড বেল্ট বা গ্রহাণুবেষ্টনী। এ বেষ্টনীর মধ্য দিয়েই মহাশূন্যযান গ্যালিলিও, ভয়েজারসহ অনেক নভোযান গিয়েছে। সত্তরের দশকে পাইওনিয়ার–১০ ও পাইওনিয়ার–১১ মহাকাশযান বৃহস্পতি গ্রহের দিকে গিয়েছে। কিন্তু কখনো কোনো গ্রহাণুর সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটেনি। প্রশ্ন হলো, গ্রহাণুবেষ্টনীতে লাখ লাখ গ্রহাণু থাকলেও কেন এদের কারও সঙ্গে কোনো মহাকাশযানের কখনো ঠোকাঠুকি লাগে না? সৌরজগতের চিত্র দেখলে মনে হয়, এই বেষ্টনীর মধ্যে বোধ হয় চুল পরিমাণ ফাঁকও নেই। অথচ দিব্যি রকেটের যাতায়াত চলছে। কীভাবে? আসলে মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহ দুটির মধ্যে বিশাল শূন্যস্থান রয়েছে। এ ছাড়া এই শূন্যস্থানজুড়ে বিরাজমান বেষ্টনীর গ্রহাণুগুলো খুব ছোট আকারের। বেষ্টনীর এক একটা গ্রহাণু সাধারণত একটি টেনিস বলের সমান বা এর চেয়েও ছোট। এগুলো সৌরজগতের উদ্ভবের সময় মহাজাগতিক ধূলিকণা থেকে সৃষ্ট। এই গ্রহাণুগুলো একে অন্যের থেকে লাখ লাখ মাইল দূরে অবস্থান করছে। সুতরাং দূর থেকে দেখলে গ্রহাণুপুঞ্জকে যতই নিশ্ছিদ্র মনে হোক না কেন, আসলে এদের মাঝখানে যথেষ্ট পরিমাণ ফাঁকা স্থান রয়েছে। সে জন্যই বলা হয়, গ্রহাণুপুঞ্জের মধ্য দিয়ে যাতায়াত বেশ নিরাপদ। অবশ্য প্রশ্ন ওঠে, শুধু এই সৌরজগতের গ্রহাণুবেষ্টনীই নয়, মহাবিশ্বের অন্য কোথাও কি এমন কোনো গ্রহাণুবেষ্টনী থাকতে পারে, যেখানে পরিভ্রমণে হঠাৎ সংঘর্ষ ঘটার আশঙ্কা আছে? টুডে আই ফাউন্ড আউট ওয়েব পেজের তথ্য অনুযায়ী, এই বিশাল মহাবিশ্বে এ রকম আশঙ্কা থাকলেও থাকতে পারে, কে জানে! তবে আশঙ্কা খুবই কম। কারণ, যদি প্রাথমিকভাবে খুব বড় বড় গ্রহাণুর বেষ্টনী থাকেও, কালক্রমে ওগুলো পারস্পরিক সংঘর্ষে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গ্রহাণুতে পরিণত হয়। সুতরাং মহাশূন্যে ভ্রমণ নিরাপদ বলা যায়। হয়তো ৩ হাজার ৭২০ ভাগের ১ ভাগ আশঙ্কা থাকতে পারে। নির্ভর করে মহাবিশ্বের কোন এলাকায়, কোন সময়ে, কোন ধরনের গ্রহাণুবেষ্টনী আছে, তার ওপর। তবে নাসার হিসাব অনুযায়ী, আমাদের সৌরজগতে মহাকাশযানে পরিভ্রমণের সময় গ্রহাণুপুঞ্জের ভেতর কোনো গ্রহাণুর সঙ্গে সংঘর্ষের আশঙ্কা ১০০ কোটি ভাগের ১ ভাগ হতে পারে সর্বোচ্চ!

আরও পড়ুন