নানা বিষয় নিয়ে বৈচিত্র্যময় সংখ্যা চাই

‘মহাবিশ্বে মহাকাশে মহাকালমাঝে, আমি মানব একাকী ভ্রমি বিস্ময়ে, ভ্রমি বিস্ময়ে!’ এই সুবিশাল মহাবিশ্বে আমি যখন একা দাঁড়িয়ে স্বচ্ছ দুচোখ মেলে অপার বিস্ময় আর সীমাহীন কৌতূহল সঙ্গী করে নিষ্পলক তাকিয়ে থাকি ওই নভোনীলের বিস্তৃত ক্যানভাসে, দুধসাদা ফোঁটায় ফোঁটায় ছড়ানো কিছু নামহীন অজানা মহাজাগতিক রঙে রাঙানো কিংবা অপার্থিব আলোকসজ্জায় মহিমান্বিত হয়ে থাকা সেই এক্সট্রাঅর্ডিনারি মাস্টারপিসখানা আমাকে ভেতর থেকে পুরোপুরি নিঃস্ব করে ফেলে, আমাকে ছুড়ে ফেলে দেয় এক অচেনা ভুবনে, তখন মুগ্ধতায় রবি ঠাকুরের মতো ফিলোসফিক্যাল কথাবার্তায় নিজেকে ডুবিয়ে রাখা ছাড়া উপায় কই! বিস্ময় তো বটেই। সেই স্বপ্নময় নভোচারীই হোক বা কোনো ভাবুক কবি—সবাই বারবার মুগ্ধ, বিমোহিত হয়ে যেতে চায়, সেই অতল গভীরে—আকাশজুড়ে জাদুময় স্রোতে হাস্যোজ্জ্বল আকাশগঙ্গায়। সেই মায়াময় আকাশগঙ্গাই যখন হয়ে ওঠে বিজ্ঞানচিন্তার কাগুজে প্রচ্ছদ, তখন সেই মুগ্ধতা আর স্রেফ দার্শনিকতায় পড়ে থাকে না, হয়ে ওঠে বিজ্ঞানমনস্ক মনের তুমুল জ্ঞানতৃষ্ণা।

এবারের সংখ্যায় তুমি যেন নিজেকে নিমজ্জিত করেছিলে অসীম মহাশূন্যের অপারে—রহস্যময় মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যবচ্ছেদ, মহাজাগতিক ঠিকানার খোঁজ, টেলিস্কোপ গায়ার দুর্দান্ত অভিযান, সুনিতা উইলিয়ামসের ভাষ্যে অবিশ্বাস্য চন্দ্রভ্রমণ থেকে শুরু করে কোয়ান্টাম-স্ট্রিং-প্ল্যাঙ্ক-নিউক্লিয়ার যুগলবন্দী। কিংবা গেম অব থ্রোনস-এর বন্যতা আর চ্যাটজিপিটির লাভ-ক্ষতির হিসাব–নিকাশ—সব মিলে একদম জমজমাট আয়োজন। কোনোবারই তুমি আমাকে হতাশ করোনি—প্রতিটি সংখ্যায় তুমি ব্যাটে-বলে ছক্কা হাঁকিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়েছ। কী দারুণ ব্যাপার!

কিন্তু এবার থেকে পদার্থবিজ্ঞানের পাশাপাশি বায়োলজি, সাইকোলজি, আইসিটি কিংবা গণিতে (ইদানীং গণিতবিষয়ক বেশ কিছু কুইজ ছাপছ, বেশ ইতিবাচক পরিবর্তন বলা যায়, তবে আরও উদ্যোগ দরকার) কাউকে আর হতাশ কোরো না, কেমন? বিজ্ঞানকে অযথা এককেন্দ্রিক না করে যত ডাইভার্স করবে, ততই আমরা বিজ্ঞানের সৌন্দর্যকে আরও আস্বাদন করতে পারব, তাই না?

বরাবরের মতো তোমার নতুন সংখ্যার অপেক্ষায় থাকলাম। ভালো থেকো। বিজ্ঞানচিন্তার জয় হোক।

তূর্ণা দাশ, অষ্টম শ্রেণি, পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পাবনা

আরও পড়ুন