মুভি রিভিউ
জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ: ডাইনোসরদের নতুন দুনিয়া
অবসরে সায়েন্স ফিকশন দেখতে পছন্দ করেন? কল্পরথে চড়ে ডানা মেলতে চান বিজ্ঞানের মজার সব তত্ত্ব এবং ভিন্ন বাস্তবতায়? তাহলে এই মুভি আপনার জন্য…
চলচ্চিত্রবিষয়ক মার্কিন গণমাধ্যম দ্য র্যাপ-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, হলিউড তারকা স্কারলেট জোহানসন বিশ্বজুড়ে বক্স অফিস আয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছেন। তাঁর নতুন সিনেমা জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ-এর সাফল্যের পর মোট আয় দাঁড়িয়েছে ১৪.৮ বিলিয়ন ডলার। এর মাধ্যমে তিনি বিশ্বের সর্বোচ্চ আয়কারী প্রধান অভিনেতায় হয়ে উঠেছেন।
আর এমনটা হবে নাই বা কেন? বড় পর্দায় আবার ফিরেছে জুরাসিক পার্ক সিরিজ-এর নতুন সিনেমা। ২০২২ সালে মুক্তি পেয়েছিল জুরাসিক ওয়ার্ল্ড ডমিনিয়ন। প্রায় তিন বছর পর আবারও দর্শকদের সামনে এসেছে এই সিরিজের নতুন ছবি।
জুরাসিক পার্ক সিরিজের প্রথম সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল ১৯৯৩ সালে। তখন বিশাল আকারের প্রাগৈতিহাসিক ডাইনোসরদের পর্দায় দেখে দর্শকরা রোমাঞ্চিত হয়েছিলেন। এরপর একে একে এই সিরিজের আরও ছয়টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। আর জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ হলো এই জনপ্রিয় সিরিজের সপ্তম কিস্তি।
একটা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান আবিষ্কার করে ডাইনোদের রক্ত দিয়ে তৈরি ওষুধের অনেক চাহিদা রয়েছে। সেই কাজের জন্য ফার্মা কোম্পানির বস মার্টিন ক্রেবস একটা স্পেশাল টিম বানায়।
২০১৮ সালে ফলেন কিংডম ও ২০২২ সালে ডোমিনিয়ন মুভির পর মনে হয়েছিল জুরাসিক ওয়ার্ল্ড সিরিজের দিন শেষ। এই সিরিজ তার প্রায় শেষের দিকে চলে এসেছে। কিন্তু সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে, ডাইনোসরদের নিয়ে এবার এক নতুন রূপে ফিরে এসেছে জুরাসিক ওয়ার্ল্ড। নতুন এই মুভিতে আরও জমজমাট, ঝকঝকে, দারুণ মজার, অভিনয় ফাটাফাটি আর গল্পটা একদম টানটান। পুরনো জুরাসিক মুভিগুলোর সেরা দৃশ্যগুলো যেন ফিরে এসেছে নতুন মোড়কে। ডাইনোসরের মুভি হিসেবে আবার সবাই এটা নিয়ে কথা বলছে।
একনজরে
মুভির নাম: জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ
পরিচালক: গ্যারেথ এডওয়ার্ডস
লেখক: ডেভিড কোয়েপ ও মাইকেল ক্রিচটন
ধরন: সাইন্স ফিকশন, অ্যাডভেঞ্চার, থ্রিলার
প্রকাশকাল: জুলাই ২০২৫
ব্যাপ্তি: ২ ঘণ্টা ১৩ মিনিট
আইএমডিবি রেটিং: ৬.২
লেখক ডেভিড কোয়েপ আর ডিরেক্টর গ্যারেথ এডওয়ার্ডস এমন একটা নতুন স্ক্রিপ্ট এনেছেন যা ডাইনোসর প্রেমীদের একদম আদিম জুরাসিক ভাইবে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে। গল্পটা শুরু হয় ১৭ বছর আগের একটা ফ্ল্যাশব্যাকে। তারপর সরাসরি বর্তমানে চলে আসে। সেখানে ডাইনোসররা তাদের পৃথিবীতে টিকে আছে বটে, তবে প্রায় সবাই গায়েব হয়ে গেছে। কিন্তু ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের সেই সবুজ ইলে সেন্ট হুবার্ট আর তার চারপাশটা এর ব্যতিক্রম। সেখানেই ডাইনোদের শেষ আশ্রয়।
২০১৮ সালে ফলেন কিংডম ও ২০২২ সালে ডোমিনিয়ন মুভির পর মনে হয়েছিল জুরাসিক ওয়ার্ল্ড সিরিজের দিন শেষ। এই সিরিজ তার প্রায় শেষের দিকে চলে এসেছে।
একটা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান আবিষ্কার করে ডাইনোদের রক্ত দিয়ে তৈরি ওষুধের অনেক চাহিদা রয়েছে। সেই কাজের জন্য ফার্মা কোম্পানির বস মার্টিন ক্রেবস একটা স্পেশাল টিম বানায়। ওদের কাজ হলো মাটিতে চলাফেরা করা, আকাশে উড়তে পারা ও সাগরে সাঁতার কাঁটা ডাইনোসরদের থেকে ব্লাড স্যাম্পেল জোগাড় করা।
প্রতিটা ডাইনোসরের খোঁজে রয়েছে এক আলাদা অ্যাডভেঞ্চার। মুভিটি কেবল ডাইনোসরদের অ্যাকশন সিকোয়েন্সের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। এটার চরিত্রগুলো দারুণভাবে ফুটে উঠেছে। এখন প্রশ্ন থেকে যায়, তাহলে কী ডাইনোসররা সত্যিই তাদের নতুন দুনিয়া গড়ে তুলতে পারবে। নাকি মানুষ শেষ পর্যন্ত সব ধ্বংস করে দেবে। আর সেই মূল্যবান ওষুধ আদৌ পাওয়া যাবে কি না—এসব প্রশ্নই এই ছবির ক্লাইম্যাক্স। জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ শেষ পর্যন্ত আমাদের এক শ্বাসরুদ্ধকর অ্যাডভেঞ্চারের মধ্যে টেনে নিয়ে যায়। সিনেমাটা এক অসাধারণ অভিজ্ঞতার স্বাদ দেবে, যেখানে বিপদ, বিস্ময় আর আবেগের এক দারুণ মুভি অপেক্ষা করছে।