ভূপৃষ্ঠ থেকে যত ওপরের দিকে উঠি, বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব তত কমতে থাকে। সেই সঙ্গে কমতে থাকে তাপমাত্রাও। সাধারণত সমুদ্র সমতলের কাছাকাছি এলাকার বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ থাকে শতকরা ২১ ভাগ। আর বায়ুচাপ থাকে ৭৬০ মিমি পারদ চাপ। অক্সিজেনের এই ঘনত্ব ও বায়ুর এই চাপ আমাদের শরীরের জন্য সহনীয়।
কিন্তু ভূপৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে ক্রমেই অক্সিজেনের ঘনত্ব ও বায়ুচাপ কমতে থাকে। এই হিসেবে দেখা যায়, ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩ হাজার ৬০০ মিটার (১২ হাজার ফুট) ওপরে বায়ুতে অক্সিজেনের পরিমাণ শতকরা একই থাকলেও তার ঘনত্ব কমে যায়। পাশাপাশি বায়ুচাপ কমে ৪৮০ মিমি পারদ চাপে পৌঁছে। ফলে বাতাস থেকে আমাদের ফুসফুসের চাহিদার শতকরা ৪০ ভাগ অক্সিজেন কম পাওয়া যায়। সে জন্য পাহাড়ে উঠলে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাবে অনেকের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
আরও ওপরে উঠলে প্রয়োজনের চেয়ে অক্সিজেনের পরিমাণ আরও কমে যায়। ফলে এসব ক্ষেত্রে শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক রাখতে বাইরে থেকে অক্সিজেন সরবরাহ করতে হয়।
সাধারণত অক্সিজেনের ঘনত্ব এভাবে কমে গেলেও অনেকের তাতে কোনো সমস্যা হয় না। তবে বয়স, লিঙ্গ বা শারীরিক গঠন ভেদে অনেকের জন্য তা সমস্যাই বটে। ফলে অনেকে শ্বাসকষ্ট, বমিভাব, নাক দিয়ে রক্ত পড়া ইত্যাদি সমস্যায় পড়ে। ইংরেজিতে এ ধরনের সমস্যার একটা গালভারি নামও আছে, অ্যাকিউট মাউনটেন সিকনেস বা এএমএস (Acute mountain sickness)। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে পর্বতারোহীরা তাই সঙ্গে করে অক্সিজেন নিয়ে যান।