তাহলে এটা কোনো গ্রহ নয়, একটা কম্পিউটার?
হ্যাঁ, স্যার। নিরীক্ষাধর্মী অনুসন্ধান এবং উড়োযানের যন্ত্রপাতিই এর শেষ কথা।
পুরো গ্রহ রূপ নিয়েছে বিশাল এক কম্পিউটারে।
অবিশ্বাস্য!
এই কম্পিউটার আমাদের কক্ষপথ তৈরির কথাও বলেছে। মিনিট দশেক আগে আমাদের কাছে পাঠিয়েছে একটি বার্তা।
কম্পিউটার বলেছে, এ হলো অনন্য এক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
যে জাতি একে নির্মাণ করেছে, তারা
চলে গেছে।
চলে গেছে? কোথায় চলে গেছে?
বেশ, বলছি তাহলে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স পুরো গ্রহকে রূপান্তরিত করেছে ন্যানোমেশিনে। বিদ্যুৎ ব্যবহারের প্রক্রিয়ায় পুরো গ্রহ এখন আত্মপ্রতিরূপ সৃষ্টিকারী।
তো, কী হয়েছে তাতে?
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সবকিছু, এমনকি মানুষকেও কম্পিউটিংয়ের একটি উপস্তরে পরিণত করেছে।
আপনি ঠাট্টা করছেন।
দুর্ভাগ্যবশত, ঠাট্টা করছি না। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স মানুষকে উচ্চতর প্রোগ্রামিং ভাষা হিসেবে তৈরি করলেও তাদের মনকে মজুত করে রাখে। ফলে তখনো সেখানে বজায় থাকে তাদের ব্যক্তিত্ব। তারা সচল থাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভিত্তিতে হুবহু কিন্তু নকল বাস্তবতার মধ্যে। গ্রহ বলছে, এটা চলছে ছয় হাজার বছর ধরে। সংখ্যায় তারা কয়েক ট্রিলিয়ন।
তারা সেখানে কী করছে?
বেঁচে আছে...তবে সবাই এক রকমভাবে নয়।
বলে যান।
যারা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের বিস্তার এবং গ্রহটি রূপান্তরে সাহায্য করেছে, তাদের প্রত্যেকে বাস করে সত্যিকারের আনন্দ, স্বাধীনতা, তৃপ্তি ও বোঝাপড়ার নকল অবস্থার মধ্যে।
আর অন্যরা?
তারা বাস করে যন্ত্রণার মধ্যে।
ছয় মিলিয়ন মানববর্ষ ধরে তারা যন্ত্রণার সিমুলেশনে আছে।
না, এ হতে পারে না।
খুদে বার্তায় আরও অনেক কিছু আছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বলছে, সে বহির্জগতে নিজেকে বিস্তৃত করেনি। কারণ, সেখানে কেউ আছে বলে সে মনে করেনি।
সর্বনাশ! এটা তো এখন জেনে গেছে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বলছে, আমরা যদি তাকে বলে দিই পৃথিবী কোথায়, তাহলে সে আমাদের সুখের সিমুলেশনে আপলোড করে দেবে।
আর আমরা যদি না বলি?
যন্ত্রণার সিমুলেশনে আপলোড করবে।
এটা যদি আমাদের ধরে ফেলে?
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আমাদের দিকে একঝাঁক মহাকাশযান ছেড়েছে মাত্র। কাজেই দ্রুত ভেবে নেওয়া আমাদের জন্য কল্যাণকর।