আলো কণা নাকি তরঙ্গ, সে বিতর্ক অনেক দিনের। আলোর কণা ধারণার পক্ষে ছিলেন স্বয়ং আইজ্যাক নিউটন। অন্যদিকে আলোর তরঙ্গ ধারণার পক্ষে আছেন রেনে দেকার্ত, রবার্ট হুক, ক্রিস্টিয়ান হাইজেনস, জেমস ম্যাক্সওয়েলসহ আরও অনেকে। ১৯৬৫ সালে ম্যাক্সওয়েল আলোকে বিদ্যুৎচুম্বকীয় তরঙ্গ হিসেবে অনুমান করেছিলেন। এর ২৩ বছর পর তা প্রমাণিত করেন হেনরিক হার্জ। এদিকে ১৯০৫ সালে আইনস্টাইন ফটো ইলেকট্রিক ইফেক্ট ব্যাখ্যা করতে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্কের কোয়ান্টা ধারণা কাজে লাগিয়েছিলেন। এতে তিনি আলোকে কোয়ান্টাম হিসেবে বিবেচনা করেন। তাঁর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, বিদ্যুৎচুম্বকীয় তরঙ্গ শুধু বিচ্ছিন্ন তরঙ্গ প্যাকেট হিসেবেই অস্তিত্বশীল। এই তরঙ্গের প্যাকেটকে তিনি বলেছিলেন আলোর কোয়ান্টা। তাঁর ব্যাখ্যায়, আলো অবিচ্ছিন্নভাবে নয়, বরং কোয়ান্টা বা গুচ্ছ বা প্যাকেট আকারে নিঃসৃত বা শোষিত হয়। শুধু তা-ই নয়, আলো গুচ্ছ আকারেই অস্তিত্বশীল।
বিদ্যুৎচুম্বকীয় বিকিরণের কণাধর্মী প্রমাণ হিসেবে কম্পটন ইফেক্ট আবিষ্কার করে ১৯২৭ সালে নোবেল পেয়েছিলেন মার্কিন বিজ্ঞানী আর্থার কম্পটন। ১৯২৮ সালে তিনি আলোর কণা বোঝাতে ফোটন শব্দটি ব্যবহার করেন।
শুরুতে আইনস্টাইনের প্রস্তাবিত আলো বা বিদ্যুৎচুম্বকীয় শক্তির কোয়ান্টা অন্য পদার্থবিদদের কাছে হিসেবে পরিচিত ছিল কণিকা (Corpuscles) নামে। তবে আলোকে একই সঙ্গে তরঙ্গ ও কণা হিসেবে মেনে নিতে অনেকেই রাজি ছিলেন না। ১৯২৬ সালে আলোক পদার্থবিদ ফ্রিথিওফ উলফার্স এবং রসায়নবিদ গিলবার্ট লুইস এই কণার নাম দিলেন ফোটন। কিন্তু তাঁদের প্রস্তাবিত তত্ত্ব ভুল প্রমাণিত হওয়ায় নামটিও তেমন কারও নজর কাড়তে পারেনি। এদিকে বিদ্যুৎচুম্বকীয় বিকিরণের কণাধর্মী প্রমাণ হিসেবে কম্পটন ইফেক্ট আবিষ্কার করে ১৯২৭ সালে নোবেল পেয়েছিলেন মার্কিন বিজ্ঞানী আর্থার কম্পটন। ১৯২৮ সালে তিনি আলোর কণা বোঝাতে ফোটন শব্দটি ব্যবহার করেন। তারপর থেকে আলোর কোয়ান্টা হিসেবে ফোটন শব্দটি জনপ্রিয় হতে শুরু করে। শব্দটি ধার করা হয়েছিল গ্রিক ভাষা থেকে। গ্রিক শব্দ phos বা phot-এর অর্থ আলো। এই শব্দের সঙ্গে একটি ড়হ প্রত্যয় যোগ করে এই কণার নাম রাখা হলো ফোটন (Photon)। ইলেকট্রন, প্রোটন, মিউয়নসহ অন্যান্য কণার শেষে ইংরেজি ড়হ প্রত্যয় যুক্ত থাকে। আলোকে কণা বিবেচনা করে এর শেষেও একই প্রত্যয় যোগ করা হয়েছিল।
