সাইকি গ্রহাণুর উদ্দেশে পৃথিবী ছেড়েছে নভোযান সাইকি। গত ১৩ অক্টোবর, শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ১৯ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে নভোযানটি উৎক্ষেপণ করা হয়। স্পেসএক্স-এর ফ্যালকন হেভি রকেটে চড়ে ছুটছে এ নভোযান। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা বলছে, এ অভিযানের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো পাথুরে বা গ্যাসীয় নয়, ধাতব এক জগৎ অনুসন্ধানে যাচ্ছে তারা। ইতিমধ্যে মহাকাশে পৌঁছে গেছে নভোযানটি, মিশন কন্ট্রোলে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। খুলে গেছে এর ৮০০ বর্গ ফুটের ক্রস আকৃতির সৌরপ্যানেল ও অন্যান্য অংশের ভাঁজ। সাইকি সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে লক্ষ্যের দিকে।
সাইকি গ্রহাণুর অবস্থান মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের মাঝখানের অংশে। ধাতবীয় গঠন একে অনন্য করে তুলেছে। নিকেল ও লোহায় তৈরি এ গ্রহাণুর বৈশিষ্ট্য সৌরজগতের প্রথম দিকে সৃষ্ট গ্রহগুলোর কোর বা কেন্দ্রের মতো। একে তাই সৌরজগতের বিল্ডিং ব্লক বললেও ভুল হবে না। গ্রহাণুটির ব্যাস প্রায় ২২৬ কিলোমিটার।
পৃথিবীর মতো পাথুরে গ্রহের কেন্দ্রে ধাতব কোর দেখা যায়। কিন্তু গ্রহের ওপরের পাথুরে আবরণ ভেদ করে কোরে পৌঁছানো বা তা নিয়ে গবেষণা করা একরকম দুঃসাধ্য বিষয়। পৃথিবীর কোরে আমরা পৌঁছাতে পারি না বা সরাসরি দেখতে পাই না। এখানেই নতুন গবেষণার দুয়ার খুলে দিচ্ছে সাইকি মিশন।
মিশনটির নেতৃত্ব দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যরিজোনা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়। নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরি রয়েছে মিশন ব্যবস্থাপনা, অপারেশন ও নেভিগেশনের দায়িত্বে। মহাকাশযানটির সৌর-বৈদ্যুতিক প্রোপালশন চেসিসে রয়েছে মাল্টিস্পেকট্রাল ইমেজার, ম্যাগনেটোমিটার, গামা রশ্মি ও নিউট্রন স্পেকট্রোমিটারের মতো যন্ত্রাংশ। এগুলো নানা তরঙ্গদৈর্ঘ্যের তড়িৎচৌম্বক তরঙ্গ ব্যবহার করে ছবি তুলতে পারবে, সংগ্রহ করতে পারবে তথ্য।
সব ঠিক থাকলে ২০২৯ সালের জুন মাস নাগাদ নভোযানটি পৌঁছে যাবে সাইকি গ্রহাণুর কাছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী একই বছর আগস্টে নভোযানটি গ্রহাণুকে ঘিরে ২৬ বার ঘোরা শেষ করবে।
সাইকি মিশনে প্রথমবারের মতো নতুন এক লেজার যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বেতার তরঙ্গের বদলে নিয়ার-ইনফ্রারেড আলো কাজে লাগিয়ে যোগাযোগ করা হবে। ফলে আগের চেয়ে আরও দ্রুত সময়ে আরও বেশি পরিমাণ তথ্য আদান-প্রদান করা যাবে পৃথিবীর সঙ্গে। নতুন এ প্রযুক্তির উদ্ভাবক নাসা। নাম দেওয়া হয়েছে, ডিপ স্পেস অপটিক্যাল কমিউনিকেশন বা ডি-সক (DSOC)। তবে প্রযুক্তিটি এখনই কার্যকর করা হবে না। ২০২৬ সালে মঙ্গল গ্রহের পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়ার পর সাইকি নভোযানেই এ প্রযুক্তির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হবে।
আগামীকাল বাজারে বিজ্ঞানচিন্তার অক্টোবর সংখ্যা
বিজ্ঞানচিন্তার অক্টোবর সংখ্যা কিনুন এই লিংক থেকে।
সব ঠিক থাকলে ২০২৯ সালের জুন মাস নাগাদ নভোযানটি পৌঁছে যাবে সাইকি গ্রহাণুর কাছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী একই বছর আগস্টে নভোযানটি গ্রহাণুকে ঘিরে ২৬ বার ঘোরা শেষ করবে। সাইকি মিশনের মাধ্যমে সৌরজগতের পাথুরে গ্রহগুলোর কোর সম্পর্কে যেমন বোঝা যাবে, তেমনি বিভিন্ন গ্রহের গঠন, সৌরজগতের উৎপত্তি সম্পর্কে জানা যাবে আরও বিশদভাবে। এমনটাই আশা বিজ্ঞানীদের।