ক্রিপ্টোকারেন্সির উদ্ভাবক সাতোশি নাকামোতো কে; তিনিই কি এখন সবচেয়ে ধনী

আধুনিক সীমানাহীন ডিজিটাল বিশ্বের মুদ্রা বিটকয়েন। এই বিটকয়েনের উদ্ভাবক এক রহস্যময় চরিত্র—সাতোশি নাকামোতো। তাঁর নামে বিটকয়েন মুদ্রার এককের নাম ‘সাতোশি’। কে এই সাতোশি নাকামোতো? সরকার বা ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণের বাইরের এই মুদ্রা কীভাবে কাজ করে? কেন এর দাম এত বাড়ল হঠাৎ করে? সাতোশি নাকামোতো কি এখন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি?

ছবির ভদ্রলোকের নাম ডোরিয়ান নাকামুতো। তিনিই কি সাতোশি? আসলে সাতোশির পরিচয় আজও এক রহস্য।কয়েনস্ট্যাট

বিটকয়েন। পৃথিবীর জনপ্রিয়তম ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ক্রিপ্টোমুদ্রা। এর নাম শোনেননি, এমন কাউকে মনে হয় না খুঁজে পাওয়া যাবে। এ নিয়ে আবার প্রচলিত আছে নানা রকম গুজব। কেউ কেউ মনে করেন, এর পুরোটাই জালিয়াতি। হাওয়া হয়ে যেতে পারে যেকোনো মুহূর্তে। কেউ একে ভাবেন শেয়ারবাজারের মতো। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্রিপ্টোমুদ্রা বর্তমান সময়ের অন্যতম নিরাপদ প্রযুক্তি।

কিন্তু জিনিসটি আসলে কী? কীভাবে কাজ করে ক্রিপ্টোমুদ্রা? এই আলোচনার কলেবর বিশাল। গোটা কয় বই লিখে ফেলা যাবে এ নিয়ে। সংক্ষিপ্ত এ লেখায় তাই এর সবটা নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব নয়। শুধু সামান্য ধারণা পাওয়া যাবে। তবে সে জন্য প্রথমে একটু পেছনে ফিরে যেতে হবে। বুঝতে হবে, মুদ্রা আসলে কী?

আরও পড়ুন

মুদ্রা এল কীভাবে

সভ্যতার শুরুর দিকেই মানুষ বুঝতে পেরেছে, সে একা সব কাজ করতে পারবে না। এ জন্য মানুষ থাকতে শুরু করেছে দলবদ্ধভাবে। এতে একদিকে একে অন্যের বিপদে পাশে দাঁড়ানো যায়, দলের সবাই মিলে নিশ্চিত করা যায় প্রত্যেক সদস্যের নিরাপত্তা; অন্যদিকে একেকজন একেক জিনিস উৎপাদন করলে বিনিময়ের মাধ্যমে একে অন্যের প্রয়োজন মেটানো যায়।

একটা গ্রামের কথা ভাবুন। একজন কৃষক হয়তো ধান চাষ করেন, আরেকজন পুকুরে চাষ করেন মাছ। ধান ভাঙিয়ে চাল হয়, রান্না করে হয় ভাত। প্রথম কৃষক ভাতের সঙ্গে মাছ খেতে চান। আবার দ্বিতীয় কৃষক মাছ খেতে চান ভাতের সঙ্গে। দুজন তাই বিনিময় করেন—এক কেজি চালের বদলে একটি মাছ। একইভাবে অন্য কৃষকেরা চাষ করেন আলু, পটোল ও বিভিন্ন শাকসবজি। কিন্তু এভাবে বিনিময় করে ঠিক তাল রাখা যায় না। বিনিময়ের জন্য তাই একটি আদর্শ বিনিময়যোগ্য বস্তু দরকার। এভাবেই সূচনা হয় মুদ্রা বা অর্থের। অর্থের বিনিময়ে সবাই প্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহ করতে পারে; আমরা যাকে বলি লেনদেন বা ট্রানজেকশন।

বর্তমানে অর্থ নিয়ন্ত্রণ করে সরকার। কোন দেশে কী পরিমাণ অর্থ বাজারে থাকবে, তা সে দেশের সরকার ঠিক করে দেয়। এর সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা জমা রাখার পরিমাণ জড়িত; জড়িত মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যস্ফীতির মতো আরও নানা কিছু। আমরা সে আলোচনায় যাব না।

কথা হলো, এ অর্থ দিয়ে কী কী কেনা যাবে, তা-ও সরকারই ঠিক করে দেয়। নির্দিষ্ট সেসব জিনিস ছাড়া আর কিছু সেই অর্থ দিয়ে কেনা যায় না। কিনলে তা হবে বেআইনি। যেমন বাংলাদেশে বসে আপনি দেশের ভেতরে বাড়িঘর কিনতে পারবেন, কিন্তু বিদেশে কোনো বাড়িঘর কিনতে পারবেন না। আর কেউ বেআইনি কিছু কিনছে কি না, সেটাও সরকার খেয়াল রাখে। এ ক্ষেত্রে সরকারকে সাহায্য করে ব্যাংকগুলো।

আরও পড়ুন

অর্থাৎ আপনার ব্যাংক-ব্যালেন্স চুরি করতে না পারলেও কী কিনছেন, কেন খরচ করছেন অর্থ, তা সরকার ও ব্যাঙ্কগুলো জানতে পারে চাইলেই। না চাইলেও জানতে পারে আসলে। কারণ, এ ধরনের সব লেনদেনের তথ্য জমা থাকে ব্যাংকের সার্ভারে। অর্থাৎ সব ধরনের লেনদেনের নিয়ন্ত্রণ থাকে সরকারের হাতের মুঠোয়। এ নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে, সবার চোখ এড়িয়ে নিজের মতো করে লেনদেনের জন্যই উদ্ভব ক্রিপ্টোমুদ্রার।

বর্তমানে হাজারের বেশি ক্রিপ্টোমুদ্রা আছে বাজারে। ইথারিয়াম, লাইটকয়েন, রিপল, স্টেলার, ডোজ কয়েন এগুলোর মধ্যে অন্যতম। আর সবচেয়ে জনপ্রিয় নিঃসন্দেহে বিটকয়েন। সব কটির কার্যপদ্ধতি মোটামুটি একই রকম। তাই আমরা বিটকয়েন নিয়ে কথা বলব। এর মাধ্যমে বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করব ক্রিপ্টোমুদ্রার কার্যপদ্ধতি।

এ রকম একটি ডিজিটাল মুদ্রার স্বপ্ন মানুষ দীর্ঘদিন দেখেছে—ক্যাশ টাকার মতো কাজ করবে, পেছনে কোনো চিহ্ন রেখে যাবে না। ক্যাশের সবচেয়ে বড় সুবিধা এটাই—আপনি চাইলে ইচ্ছেমতো যেকোনো কিছু কিনতে পারবেন, যেকোনো লেনদেন করতে পারবেন, কিন্তু কেউ চিহ্ন ধরে আপনাকে সহজে খুঁজে বের করতে পারবে না। আগেই বলেছি, ডিজিটাল কারেন্সি বা ব্যালেন্স, যেমন ক্রেডিট কার্ডের সমস্যা হলো, আপনার লেনদেনের খবর থাকবে ব্যাংকের সার্ভারে। সেই চিহ্ন ধরে সহজেই ট্র্যাক করা যাবে আপনাকে। ক্রিপ্টোমুদ্রার চিন্তাটা এভাবেই এসেছে। ক্যাশের মতো, হাতে থাকলেই বেনামে খরচ করা যাবে, তাৎক্ষণিক, কিন্তু লেনদেন করা যাবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে, বিশ্বজুড়ে।

কিন্তু এর বেশ কিছু সমস্যা আছে। এ সমস্যাগুলো সমাধান করতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে যান গণিতজ্ঞ ও প্রযুক্তিবিজ্ঞানীরা। এ রকম দুটি সমস্যার কথা বলি।

বিটকয়েনের প্রতীকী ছবি

একটি হলো ‘ডাবল স্পেন্ডিং’ বা ‘বহুক্রয়’ সমস্যা। ক্রিপ্টোমুদ্রার পুরোটাই ডিজিটাল কোড। টাকা বা অর্থের যেমন ভৌত অস্তিত্ব আছে—কাগজের নোট বা কয়েন—ক্রিপ্টোমুদ্রার এমন কিছু নেই। এটি পুরোপুরি ভার্চ্যুয়াল। তাই একটি ১০০ টাকার নোট আপনি দুটি দোকানে গিয়ে খরচ করতে পারবেন না। কিন্তু ক্রিপ্টোমুদ্রার বিষয়টি সে রকম নয়। কারণ, একটি ডিজিটাল কোড বা ফাইলকে কপি করার পর একটি আসল, আরেকটি নকল—বিষয়টি এভাবে কাজ করে না। দুটিই তখন একই জিনিস। তাহলে, কী করা যায়?

আরেকটি বড় সমস্যা হলো নিয়ন্ত্রণ যদি কারও হাতেই না থাকে, তাহলে লেনদেনে দুই পক্ষ যে সঠিক জিনিস দিচ্ছে, সেটা নিশ্চিত করবে কে? আপনি হয়তো বসে আছেন যুক্তরাষ্ট্রে। আমি বাংলাদেশে। আপনি ক্রিপ্টোমুদ্রার মাধ্যমে আমার কাছ থেকে একটি গ্রাফিক ডিজাইন কিনবেন। কিন্তু আপনি মুদ্রা পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে আমি যে সঠিক ডিজাইন আপনাকে দেব বা আমি ডিজাইন দিয়ে দিলে আপনি যে আমাকে সঠিক পরিমাণ ক্রিপ্টোমুদ্রা দেবেন, তার নিশ্চয়তা কে দেবে? সমস্যাটি কম্পিউটারবিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের অনেক ভুগিয়েছে। একটা নামও আছে এর—বাইজেন্টাইন জেনারেল সমস্যা। এই সমস্যাটির সমাধান-ই হলো ব্লকচেইন। তবে সে কথায় পরে আসছি। আগে সমস্যাটা বলি।

সমস্যাটা এমন—বাইজেন্টাইন সেনাবাহিনীর কয়েকজন জেনারেল ঘিরে রেখেছেন একটি শহরকে। যুদ্ধে জেতার জন্য সবাইকে একসঙ্গে আক্রমণ করতে হবে। তা না হলে আক্রমণ করাই যাবে না। কারণ, একজনও যদি আক্রমণ না করেন, তাহলে মারা যাবেন অন্য অনেক সৈন্য। আমরা যেমন অনলাইনে কেউ কাউকে বিশ্বাস করি না, ঠিক সে রকম, তাঁরাও কেউ কাউকে বিশ্বাস করেন না। কারণ, আক্রমণের পক্ষে মত দিয়ে কেউ হয়তো শেষ পর্যন্ত আক্রমণ না-ও করতে পারেন। (পড়ুন পর্যাপ্ত মুদ্রা বা সঠিক পণ্য দেওয়ার কথা থাকলেও কেউ শেষ মুহূর্তে না-ও দিতে পারেন।) তাহলে উপায়?

উপায় একটাই—আক্রমণের সিদ্ধান্ত একজনকে নিতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে, সবাই যেন সিদ্ধান্ত মেনে চলে। ক্রেডিট কার্ড দিয়ে আপনি কিছু কেনাকাটা করলে ব্যাংক যেমন আপনার মূল্য পরিশোধের দায়িত্ব নেয়, সে রকম। আবার কেউ যদি এই দায়িত্ব নেয়ই, তাহলে অর্থের নিয়ন্ত্রণ চলে যেতে পারে তার হাতে। মানে, যে সমস্যা এড়ানোর জন্য ক্রিপ্টোমুদ্রার কথা ভেবেছে মানুষ, বিশ্বাসের সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে ঘুরেফিরে বৃত্তের সেই আগের বিন্দুতেই ফিরে যেতে হচ্ছে তাকে। এ সমস্যা নিয়ে সবাই যখন হাবুডুবু খাচ্ছে, তখনই ভূতের মতো উদয় হলেন সাতোশি নাকামোতো।

আরও পড়ুন

রহস্যময় সাতোশি নাকামোতো

কে এই সাতোশি নাকামোতো? এ প্রশ্নের উত্তর আজও কেউ জানে না। অনেক খুঁজেছে তাঁকে মানুষ। কিন্তু খুঁজে পায়নি। কেউ কেউ বলেন, নাকামোতো একজন নন, একদল মানুষ। এ নিয়েও হয়েছে নানা জল্পনা–কল্পনা। সাতোশি নাকামোতো লিখে গুগল করলে যাঁর ছবি আসে, তিনি ডোরিয়ান সাতোশি নাকামোতো। তাঁকে নিয়ে প্রথম ২০১৪ সালের ৬ মার্চ নিউজউইক-এ একটি লেখা প্রকাশিত হয়—‘দ্য ফেস বিহাইন্ড বিটকয়েন’। বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘বিটকয়েনের পেছনের মানুষ’। লেখক লিয়া ম্যাকগ্র্যাথ গুডম্যান।

ডোরিয়ান একজন জাপানি-আমেরিকান। বসবাস করেন ক্যালিফোর্নিয়ায়। কিন্তু তাঁর জন্ম জাপানের বেপ্পু শহরে। জন্মের সময় তাঁর নাম ছিল সাতোশি নাকামোতো। গুডম্যান দেখান, ২৩ বছর বয়সে, ১৯৭৩ সালে ডোরিয়ান নিজের নাম বদলে রাখেন ‘ডোরিয়ান প্রেন্তিস সাতোশি নাকামোতো’, যদিও তিনি সাধারণত লেখেন ‘ডোরিয়ান এস নাকামুতো’।

ডোরিয়ান নাকামুতো

ক্যালিফোর্নিয়ার পোমোনায় অবস্থিত ক্যাল পোলি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেন। পরবর্তী সময়ে সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দেন ক্ল্যাসিফায়েড ডিফেন্স প্রজেক্টে। প্রজেক্ট শেষে প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক তথ্য সেবাদাতা কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন কম্পিউটার প্রকৌশলী হিসেবে। গুডম্যান দাবি করেন, ডোরিয়ান তাঁর কাছে নিজের পরিচয় স্বীকার করে বলেছেন, ‘ওসবের সঙ্গে আমি এখন আর যুক্ত নই। তাই এসব নিয়ে আমি আলোচনা করতে চাই না। সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ এখন মানুষের হাতে। আমার এখন আর ওসবের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।’

এ লেখা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে হুলুস্থুল পড়ে যায় পৃথিবীজুড়ে। পরে এ নিয়ে ডোরিয়ানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি ভেবেছেন, গুডম্যান তাঁকে ক্ল্যাসিফায়েড ডিফেন্স প্রজেক্ট নিয়ে প্রশ্ন করেছেন। সে জন্যই অমন জবাব দিয়েছেন তিনি। পরে ২০১৪ সালের ৭ মার্চ সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামের মানুষটি পিটুপি ফাউন্ডেশনের ফোরামে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ছোট্ট একটি মেসেজ দেন, ‘আমি ডোরিয়ান নাকামুতো নই।’

ডোরিয়ানকে ছাড়া আরও অনেকের দিকেই আঙুল তোলা হয়েছে নানা সময়। এর সবই জল্পনাকল্পনা। কোনোটিরই সুনিশ্চিত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সাতোশি নাকামোতো তাই আজও কেবলই একটি ছদ্মনাম। মানুষটি যে আসলে কে, কেউ জানে না।

ব্লকচেইন কী

ছদ্মনামের অজানা এই মানুষ ২০০৮ সালে সমাধান দেন বাইজেন্টাইন জেনারেল সমস্যার। এ সমাধানের নাম ‘ব্লকচেইন’।

ব্লকচেইন মূলত একটি ডিস্ট্রিবিউটেড বা শেয়ার্ড ওপেন লেজার। সহজ ভাষায়, কিছু ব্লক দিয়ে তৈরি উন্মুক্ত হালখাতা। যেকোনো লেনদেন এই খাতায় তৎক্ষণাৎ লেখা হয়ে যায়। অফিসে যেমন হালখাতা থাকে, সে রকম। তবে ব্লকচেইনের এ হালখাতা ইন্টারনেটে সবার জন্য উন্মুক্ত।

বাইজেন্টাইন জেনারেল সমস্যার সমাধান হিসেবে বললে একজন জেনারেল কখন কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তা তৎক্ষণাৎ দেখতে পাবেন সবাই। তাই কেউ চাইলেই আক্রমণ না করে বসে থাকতে পারবে না। আক্রমণ না করলে বাকিরাও সেটা জেনে যাবে তৎক্ষণাৎ। তখন অন্যরাও আর আক্রমণ করবে না। অর্থাৎ, আপনি যদি আমাকে সঠিক পরিমাণ মুদ্রা না দেন বা আমি যদি সঠিক পণ্য না দিই, তাহলে লেনদেনটি হবেই না।

কোনো লেনদেন হবে কি না, এটা নিশ্চিত করেন স্বেচ্ছাসেবীরা। তাঁরাই নিয়মিত এই সার্ভার হালনাগাদের কাজ করেন। কোনো প্রতিষ্ঠান নয়, পুরো সিস্টেম মিলে ক্রিপ্টোমুদ্রার মাধ্যমে পারিশ্রমিক দেওয়া হয় তাঁদের। এরই আরেক নাম মাইনিং। আর তাঁরা যে পদ্ধতিতে এটা নিশ্চিত করেন, এর নাম প্রুফ অব ওয়ার্ক। বিষয়টি আমরা পরে আরেকটু খোলাসা করব।

ভালোভাবে বোঝার জন্য এবার একটা উদাহরণের কথা ভাবা যাক। ধরুন, আপনি একজনকে কিছু বিটকয়েন পাঠাবেন। আপনার পাঠানো বিটকয়েনের পরিমাণ আর যাকে পাঠাবেন, তার বিটকয়েন পাঠানোর ঠিকানা ‘হ্যাশ’ নামের কোড করে একটি ব্লকের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। এই হ্যাশ একধরনের কোডিং। এটি লেনদেনকে সুরক্ষা যেমন দেয়, তেমনি নিশ্চিত করে এর অথেন্টিসিটি।

বিটকয়েনের প্রতীকী ছবি

লেনদেনের সব তথ্য ঠিক থাকলে এবার কোড করে নতুন এই ফাইলটার মধ্যে ব্লকচেইনের আগের ফাইল বা ব্লকের ঠিকানাও ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। এরপর কাজে নামবেন স্বেচ্ছাসেবীরা। প্রুফ অব ওয়ার্কের মাধ্যমে তাঁরা নিশ্চিত করবেন, সব ঠিক আছে কি না। সব ঠিক থাকলে সেই মুহূর্তে ব্লক বা ফাইলটি যুক্ত হয়ে যাবে আগের ফাইলের সঙ্গে, সম্পন্ন হবে লেনদেন।

বাস্তবে একটি নির্দিষ্ট মুহূর্তের সব কটি লেনদেনের তথ্য একটি ফাইল বা ব্লকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ফাইলটি চেইনের আগের ফাইলের সঙ্গে যুক্ত হলেই লেনদেন সম্পন্ন হয়ে যায়। অর্থাৎ আপনার বিটকয়েন চলে যাবে যাকে পাঠাচ্ছেন, তার কাছে। লেনদেন যে হয়েছে, সে কথা সবাই জেনে যান, কিন্তু লেনদেনকারীদের ব্যাপারে কেউ কিছু জানতে পারেন না। এভাবে ব্লকের পর ব্লক যুক্ত হয়ে গড়ে ওঠে ব্লকচেইন।

ব্লকচেইনের প্রথম পরীক্ষামূলক ব্যবহারের নাম বিটকয়েন। এমন এক মুদ্রা, যার নিয়ন্ত্রণ কারও হাতে নেই!

পিটুপি ফাউন্ডেশনের ফোরামে সাতোশি নাকামোতোর সেই মেসেজ, ‘আমি ডোরিয়ান নাকামোতো নই’
আরও পড়ুন

বিটকয়েন কীভাবে কাজ করে

এবার আমরা বিটকয়েন লেনদেনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে খানিকটা জানব। এক, মাইনিং। আর দুই, হ্যাশ।

প্রথমে যেটা বোঝা প্রয়োজন, ব্লকচেইনপ্রযুক্তি কাজ করার জন্য প্রয়োজন একটি নেটওয়ার্ক। তথ্য আদান-প্রদানের জন্য যে নেটওয়ার্ক লাগে, তা আমরা সবাই জানি। এ নেটওয়ার্কের প্রতিটি কম্পিউটার-ই বিটকয়েন মাইনিংয়ে যুক্ত। অর্থাৎ এরা যে কেউই চাইলে কোনো লেনদেন ঠিক আছে কি না, সেটা কোড করে যাচাই করে দেখতে পারবে। তবে এ জন্য লাগবে বিশেষ ধরনের সফটওয়্যার।

তাহলে মাইনিং কী? যে কারো লেনদেন কোড করে যাচাই করার মাধ্যমে পারিশ্রমিক হিসেবে বিটকয়েন পাওয়ার উপায়। এই পারিশ্রমিক হিসেবে পাওয়া বিটকয়েনগুলো কারো কাছ থেকে আসে না, নতুন উৎপন্ন হয় লেনদেন যাচাই করার ফলে। যিনি মাইনিং করেন, তাকে বলে মাইনার। বিষয়টি খানিকটা খনি খননের মতোই। কিন্তু এখানে খননকাজটা কী? অর্থাৎ মাইনার ঠিক কী করেন?

মাইনারের কাজটা হলো, ‘প্রুফ অব ওয়ার্ক’ করা। এ ক্ষেত্রে বিশেষ ধরনের একটি গাণিতিক সমস্যা দেওয়া থাকে। একটা ফাইলের মধ্যে কোড করে ঢোকানো আছে নির্দিষ্ট সময়ে ঘটা সব লেনদেনের তথ্য আর ব্লকচেইন সার্ভারের আগের ফাইলটির নাম-ঠিকানা। এবার নতুন ফাইলটাকে চেইনের সঙ্গে জোড়া দিতে হবে। কে জোড়া দেবে? ব্লকচেইন সার্ভারের সঙ্গে যুক্ত মাইনাররা। তাঁরা বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে কিছু অ্যালগরিদম সমাধান করবেন। সঠিকভাবে সমাধান করার পর সমাধানটি আসলেই সঠিক কি না, তা যাচাই করার জন্য আবেদন করবেন নেটওয়ার্কে। তাঁর সমাধানটি এবার মিলিয়ে দেখবেন ব্লকচেইন নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত সবাই বা যাঁরা চান। তারপর হবে ভোটাভুটি। নেটওয়ার্কে যুক্ত অন্তত ৫১ শতাংশ ব্যবহারকারী যদি মতামত দেন সমাধানটি সঠিক, তখন নতুন ফাইলটি ব্লকচেইন সার্ভারে যুক্ত হবে। আর গাণিতিক সমস্যাটি সমাধানের জন্য মাইনারের ওয়ালেটে চলে যাবে কিছু বিটকয়েন। বিটকয়েনগুলো আসবে কোত্থেকে? যে মুহূর্তে নেটওয়ার্কের ব্যবহারকারীরা লেনদেনের সত্যতা নিশ্চিত করে নতুন ফাইলটি চেইনে যুক্ত করেছে, সে মুহূর্তেই তৈরি হবে এসব নতুন বিটকয়েন। এ পদ্ধতিকেই বলে বিটকয়েন মাইনিং।

বর্তমান ব্লকচেইন ব্যবস্থায় ২ কোটি ১০ লাখ বিটকয়েন মাইন করা যাবে, সময় লাগবে আনুমানিক ২১৪০ সাল পর্যন্ত। তারপর আর নতুন বিটকয়েন তৈরি করা যাবে না।

বোঝাই যাচ্ছে, বিশাল বিটকয়েন নেটওয়ার্কের অন্তত ৫১ শতাংশ ব্যবহারকারী মিলে যে লেনদেন যাচাই করছে, তাতে ভুল হওয়ার আশঙ্কা নেই বললেই চলে। এটি হ্যাক করারও সে রকম উপায় নেই। যদি কোনো হ্যাকার নেটওয়ার্কের অন্তত ৫১ শতাংশ ব্যবহারকারীর কম্পিউটার দখল করে নেয়, তাহলেই কেবল সে রকম হ্যাক করা সম্ভব।

বর্তমান ব্লকচেইন ব্যবস্থায় ২ কোটি ১০ লাখ বিটকয়েন মাইন করা যাবে, সময় লাগবে আনুমানিক ২১৪০ সাল পর্যন্ত। তারপর আর নতুন বিটকয়েন তৈরি করা যাবে না। পরিমাণ সীমিত বলেই দিন দিন বাড়ছে বিটকয়েনের দাম, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এর ব্যবহারও। (গত কয়েক বছর বিটকয়েনের বাজার ছিল খানিকটা পড়তির দিকে। এই লেখা প্রকাশের সময় বিটকয়েনের দাম বেড়ে গেছে অনেকখানি!) বড় বড় প্রতিষ্ঠানও লেনদেন শুরু করেছে ক্রিপ্টোমুদ্রায়।

মাইনিং তো বোঝা গেল, এবার ‘হ্যাশ’-এর কথা বলি। এই যে বারবার বলছি, পুরো লেনদেনের তথ্যকে হ্যাশ নামের কোড করে ব্লক বা ফাইলে ঢুকিয়ে রাখা হচ্ছে, এটা আসলে কী? এটি একধরনের ফাংশন। গণিতে যেমন বিভিন্ন ধরনের ফাংশন আছে, প্রতিটি একটি নির্দিষ্ট কাজ করে, এটিও সে রকম। হ্যাশের কাজ যেকোনো শব্দকে কোড করে সমান দৈর্ঘ্যের একটি সংকেতে পরিণত করা। বিটকয়েনের জন্য ব্যবহার করা হয় SHA-256 নামের একধরনের হ্যাশ। এর কাজ যেকোনো শব্দকে ২৫৬ বিট দৈর্ঘ্যের একটি সংকেতে পরিণত করা। উদাহরণ দিই।

bigganchinta-এর SHA-256 সংকেতটি হবে—

4cffcafa492d67f15f6cbcf71b88c911d384835d91d428a23dbfd7f9279f051b

আবার Bigganchinta-এর SHA-256 সংকেতটি হবে—

435450a90a3ed4b51f9156833fa9c5e634c96eff18ee9f8cc3abdebde7d74614

দেখেই বুঝতে পারছেন, শুধু প্রথম অক্ষরটি ছোট থেকে বড় হাতের অক্ষরে বদলে দেওয়ায় পুরো সংকেতই বদলে গেছে। তার মানে, সংকেত দেখে আপনি কখনোই বুঝতে পারবেন না, মূল শব্দটি কী ছিল। দুটি শব্দ যে কাছাকাছি, তা-ও সংকেত দেখে বোঝার উপায় নেই। যদি শব্দ না হয়ে বাক্য হয়, সংকেতটি ২৫৬ বিটই হবে। যেমন—

Bigganchinta is a science magazine-এর SHA-256 হবে—

9be48293427c4e24a0d88cba880bcc727ce03cbf29495de0c7c580a06468b734

অর্থাৎ সংকেতবদ্ধ করার আগে মূল জিনিসটির দৈর্ঘ্য কতটা, একটি শব্দ নাকি একাধিক, অর্থবোধক নাকি এলোমেলো শব্দগুচ্ছ ইত্যাদি কিছুই এ হ্যাশ কোডিং দেখে বোঝার উপায় নেই।

এ জন্যই এই হ্যাশ ক্রিপ্টোমুদ্রা লেনদেনকে এতটা নিরাপদ করে তুলেছে।

বিটকয়েনের হঠাৎ পুনরুত্থান

বিটকয়েন নিয়ে বলার আছে আরও অনেক কিছু। তবে সংক্ষিপ্ত এ লেখায় আমরা এর আরেকটি বিষয় নিয়েই শুধু আলোচনা করব—বিটকয়েনের বাজারের ওঠানামার বিষয়টি। তার আগে বলে নিই, বিটকয়েনের সবচেয়ে ছোট একক কিন্তু ১ বিটকয়েন নয়, ১ সাতোশি। ১০০ পয়সায় যেমন ১ টাকা, তেমনি ১০ কোটি সাতোশিতে ১ বিটকয়েন।

বিটকয়েনের প্রথম লেনদেনের ঘটনাটি বেশ মজার। ২০১০ সালের ২২ মে একজন বিটকয়েন প্রোগ্রামার প্রথম বিটকয়েন লেনদেন করেন। তিনি বিটকয়েনের একটি ফোরামে লিখেছিলেন, কেউ তাঁর বাসায় দুটি পিৎজা পৌঁছে দিলে তিনি তাঁকে ১০ হাজার বিটকয়েন দেবেন। সত্যি সত্যি সেদিন একজন তাঁর বাসায় দুটি পিৎজা পৌঁছে দেন এবং বিনিময়ে পান ১০ হাজার বিটকয়েন। সে সময় পিৎজা দুটির বাজারমূল্য ছিল ২৫ ডলার, আর ১০ হাজার বিটকয়েনের মূল্য ছিল ৪০ ডলার, মানে ৪ হাজার ৮৫৪ টাকা। আর এ প্রবন্ধ লেখার সময় বিটকয়েনের মূল্য ১ বিটকয়েন সমান ১ লাখ ১৮ হাজার ২৪৫ ডলার বা ১ কোটি ৪৩ লাখ ১৬ হাজার ২৫৪ টাকা!

বিটকয়েনের বাজার গত কয়েক বছর ধরে পড়তির দিকে ছিল। এই পড়তির সূচনা করেছিলেন ইলন মাস্ক। ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জানা গিয়েছিল, ইলন মাস্কের টেসলা ইনকরপোরেশন ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের বিটকয়েন কিনেছে। টেসলা জানায়, তাদের সব ধরনের পণ্য, ইলেকট্রিক কার, সোলার প্যানেল—সবকিছু বিটকয়েন দিয়ে কেনা যাবে। সঙ্গে সঙ্গে অনেক বেড়ে যায় বিটকয়েনের দাম। এর কিছুদিন পর, ২৭ এপ্রিল ইলন মাস্ক একটি টুইট করেন। সেখানে বলেন, ‘টেসলা বিটকয়েনে আর কোনো ধরনের পণ্য বিক্রি করবে না। বিটকয়েন মাইনিং ও লেনদেনে যে পরিমাণ জীবাশ্ম জ্বালানি খরচ হচ্ছে এবং দিন দিন বিটকয়েন ব্যবহারকারী সংখ্যা বাড়ায় জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার যে হারে বাড়ছে, তা নিয়ে আমরা চিন্তিত। বিশেষ করে কয়লার কথা বলতে হয়; কয়লা জ্বালানোর কারণে যে ধরনের গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরিত হয়, তা জীবাশ্ম জ্বালানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। ক্রিপ্টোমুদ্রা  প্রযুক্তি আইডিয়া হিসেবে দারুণ। আমাদের ধারণা, এর ভবিষ্যৎও বেশ আশাপ্রদ। কিন্তু পরিবেশ নষ্ট করার মতো মূল্য চুকিয়ে এ ভবিষ্যতের দিকে এগোনোর উপায় নেই।’

ইলন মাস্ক
রয়টার্স

তবে এর পাশাপাশি ইলন মাস্ক এ–ও বলেন, টেসলা তাদের কেনা বিটকয়েন বিক্রি করবে না। ভবিষ্যতে এটি নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে এগোলে তখন টেসলা আবার বিটকয়েনের ব্যবহার শুরু করবে।

ইলন মাস্ক এখানে বিটকয়েন মাইনিংয়ে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বলতে বুঝিয়েছেন, যে পরিমাণ মানুষ একসঙ্গে বিটকয়েন মাইনিংয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে, সে জন্য যে পরিমাণ কম্পিউটার চালানো হয়, তাতে প্রচুর পরিমাণ বাড়তি বিদ্যুৎ খরচ হয়। আর এই বিদ্যুৎ তৈরি হয় জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে। প্রতিমুহূর্তে আরও, আরও বেশি মানুষ এ নিয়ে উঠেপড়ে লাগছে এবং প্রতিমুহূর্তে বাড়ছে বিদ্যুৎ খরচ ও জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার। টেসলা যথাসম্ভব জীবাশ্ম জ্বালানি খরচ কমাতে চাইছে। এ জন্য তারা সোলার প্যানেলের পাশাপাশি সোলার রুফ পর্যন্ত বিক্রি করছে। তবে মাস্কের এ কথা নিয়ে সমালোচনাও হয়েছে। কারণ, টেসলা নিজেই বিক্রি করছে ইলেকট্রিক কার, যা সেই বিদ্যুৎ বা জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করেই চলছে।

কিন্তু মাস্কের টুইটের ফলে ভয়ংকরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিটকয়েন ও অন্যান্য ক্রিপ্টোমুদ্রা। এরপর বিটকয়েন যখন খানিকটা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে, তখনই শুরু হয় ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ। এ কারণে নানা রকম সমস্যার মুখে পড়ে বিশ্ব অর্থনীতি। এ ধাক্কা লাগে ক্রিপ্টোমুদ্রার বাজারেও।

সাতাশো নাকামোতো কি বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী

এতদিন পর অবশেষে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিটকয়েন। ডোনাল্ড ট্রাম্প ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কল্যাণে এমনটা হয়েছে। এইবারে নির্বাচিত হওয়ার আগেই ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বিশ্বের ক্রিপ্টো-রাজধানী’ বানাবেন। সেই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারিভাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছে, পরিষ্কার নিয়মনীতিও গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে বিটকয়েনের দারুণ পুনরুত্থান ঘটেছে এখন। আর এর ফলে ব্লকচেইনের উদ্ভাবক সাতোশি নাকামোতোর ১.০৯৬ মিলিয়ন বা ১০ লাখ ৯৬ হাজার বিটকয়েনের বর্তমান মূল্য দাঁড়িয়েছে ১২৯ বিলিয়ন ডলার। মানে ১২ হাজার ৯০০ কোটি ডলার! টাকায় নাহয় আপনারাই হিসাব করে নিন। এর ফলে তিনি এখন বিশ্বের ১১তম ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন। এমনকি বিল গেটসের চেয়েও বেশি ধনী হয়ে উঠেছেন সাতোশি!

বুঝতেই পারছেন, ক্রিপ্টোমুদ্রার মতো নিরাপদ ও স্বাধীন আর কোনো মুদ্রাব্যবস্থা নেই। দিন দিন ভার্চ্যুয়াল লেনদেনের পরিমাণ যেভাবে বাড়ছে, সেটা হোক ফেসবুক বা মেটার ভার্চ্যুয়াল জগতে কিংবা মানুষের দৈনন্দিন অনলাইন কেনাকাটায়—ক্রিপ্টোমুদ্রা যে ভবিষ্যতের পৃথিবীতে বড় ভূমিকা রাখতে, যৌক্তিকভাবে চিন্তা করলেই তা বোঝা যায়।

লেখক: সহসম্পাদক, বিজ্ঞানচিন্তা

সূত্র: উইকিপিডিয়া, কয়েনবেজ, নিউজউইক;

বিটকয়েন: ব্লকচেইন প্রযুক্তি এবং অন্যান্য মুদ্রা, লেখক: মোস্তফা তানিম, প্রকাশক: আদর্শ