বিশ্বের সবচেয়ে ছোট কোয়ান্টাম কম্পিউটার
বিজ্ঞানীরা বিশ্বের সবচেয়ে ছোট কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করেছেন। এটি একটি ডেস্কটপ পিসির আকারের। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, এটি ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায়ও কাজ করতে পারে। এই মেশিনটি মাত্র একটি ফোটন বা আলোক কণা দিয়ে চলে। এটি রিং-আকৃতির একটি অপটিক্যাল ফাইবারের ভেতরে বসানো আছে। এটা মূলত একটি পরীক্ষামূলক মডেল। এই মেশিন ১৫-কে ৩ ও ৫ দিয়ে ভাগ করার মতো গাণিতিক সমস্যা সমাধান করতে পারে। বিজ্ঞানীরা তাঁদের এই আবিষ্কারের কথা গত বছর সেপ্টেম্বরে ফিজিক্যাল রিভিউ অ্যাপ্লাইড জার্নালে প্রকাশ করেছেন।
তাইওয়ানের ন্যাশনাল সিংহুয়া ইউনিভার্সিটির একদল বিজ্ঞানী তৈরি করেছেন এই কোয়ান্টাম কম্পিউটার। ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিনস কর্পোরেশন আইবিএম-এর তৈরি বেশ কিছু কোয়ান্টাম কম্পিউটার আছে। কিন্তু সেগুলো চালাতে হলে প্রায় পরমশূন্য তাপমাত্রায় ঠান্ডা করতে হয়। এটা খুব জটিল ও ব্যয়বহুল। এ কারণে সেগুলোর আকার অনেক বড় হয়। প্রায় একটি ঘরের সমান। কিন্তু নতুন এই কোয়ান্টাম কম্পিউটার যেহেতু স্বাভাবিক তাপমাত্রায় কাজ করে, তাই এটি বিজ্ঞানীদের জন্য একটি বড় সাফল্য।
সুপারকন্ডাক্টিং কিউবিটের চেয়ে ফোটনের ব্যবহার অনেক বেশি সুবিধাজনক। কারণ ফোটন ঘরের তাপমাত্রায় স্থিতিশীল থাকে। খরচও কম। এটি আটকে থাকা আয়ন দিয়ে তৈরি সিস্টেমের চেয়েও বেশি কার্যকর।
অনেকদিন ধরেই বিজ্ঞানীরা সুপারকন্ডাক্টিং কিউবিটের বদলে ফোটন বা আলোর কণা ব্যবহার করে কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরির কথা ভাবছিলেন। কারণ তাঁরা মনে করতেন, ফোটন ব্যবহার করে এমন একটি কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করা সম্ভব, যা ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায়ও কাজ করবে। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতেও বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, মাত্র একটি লেজার পালস থেকে কিউবিট তৈরি করে এটি করা সম্ভব। আর এখন বিজ্ঞানীরা সত্যি এমন একটি মেশিন তৈরি করে দেখিয়েছেন।
নতুন এই মেশিনে একটি মাত্র ফোটন বা আলোক কণা দিয়ে কম্পিউটারের সব কাজ করা যায়। আর এই ফোটনটি ৩২ টাইম-বিন বা মাত্রায় তথ্য সংরক্ষণ করতে পারে। এই গবেষণার প্রধান লেখক ও ন্যাশনাল সিং হুয়া ইউনিভার্সিটি কোয়ান্টাম অপটিক্সের অধ্যাপক চু বলেন, ‘ মাত্র একটি কিউবিট দিয়ে এত বেশি তথ্য সংরক্ষণ করা সম্ভব যা একটি বিশ্ব রেকর্ড।’
সুপারকন্ডাক্টিং কিউবিটের চেয়ে ফোটনের ব্যবহার অনেক বেশি সুবিধাজনক। কারণ ফোটন ঘরের তাপমাত্রায় স্থিতিশীল থাকে। খরচও কম। এটি আটকে থাকা আয়ন দিয়ে তৈরি সিস্টেমের চেয়েও বেশি কার্যকর। কারণ এই সিস্টেমকে সঠিকভাবে কাজ করানোর জন্য জটিল লেজার প্রয়োজন। এই ফোটনভিত্তিক কম্পিউটারে তা লাগে না।
অনেকদিন ধরেই বিজ্ঞানীরা সুপারকন্ডাক্টিং কিউবিটের বদলে ফোটন বা আলোর কণা ব্যবহার করে কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরির কথা ভাবছিলেন। কারণ তাঁরা মনে করতেন, ফোটন ব্যবহার করে এমন একটি কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করা সম্ভব, যা ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায়ও কাজ করবে।
ফোটন ব্যবহার করে এমন কোয়ান্টাম কম্পিউটার আগেও ছিল। কিন্তু ফোটন যেহেতু খুবই অস্থায়ী- মাত্র এক সেকেন্ডে থাকে—পরের সেকেন্ডেই অদৃশ্য হয়ে যায়, তাই অনেক ফোটন একসঙ্গে ব্যবহার করা কঠিন। এই সমস্যার সমাধান করতে চু এবং তাঁর দল সব তথ্য একটি স্থিতিশীল ফোটনের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। চু এই কাজকে একটি সাইকেলের সঙ্গে তুলনা করেছেন। সে সাইকেল ৩২ জন যাত্রী বহন করতে পারে। তারা বলেছেন, ভবিষ্যতে একটি মাত্র ফোটনের স্টোরেজ ক্ষমতা আরও উন্নত করে আরও জটিল গণনা করা সম্ভব। এই মেশিন যেহেতু এর কিউবিট হিসেবে একটি ফোটন ব্যবহার করে, তাই এটিকে সহজেই ভবিষ্যৎ কোয়ান্টাম যোগাযোগ নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করা যাবে।