যে চার ঝুঁকির কারণে ৯৯ শতাংশ হৃদরোগ ও স্ট্রোক হয়
হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক রাতারাতি হয় না। এগুলো অনেক আগে থেকেই সংকেত দিতে থাকে। শুধু আমরা হয়তো সেই সংকেতগুলো ঠিকভাবে বুঝতে পারি না। সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৯০ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যের তথ্য নিয়ে একটি বিশাল গবেষণা হয়েছে। এই গবেষণায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ এক তথ্য। যাদের হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হয়েছে, তাদের প্রায় শতভাগ মানুষের মধ্যেই আগে থেকে চারটি প্রধান ঝুঁকির কোনো না কোনোটি ছিল।
এই চারটি ঝুঁকি হলো উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে কোলেস্টেরলের উচ্চ মাত্রা, রক্তে শর্করার উচ্চ মাত্রা এবং ধূমপান। গবেষণায় দেখা গেছে, হৃদরোগের মতো বড় কোনো ঘটনার আগে ৯৯ শতাংশ মানুষের মধ্যেই এই চারটি ঝুঁকির অন্তত একটি উপস্থিত ছিল।
আরও মজার ব্যাপার হলো, ৬০ বছরের কম বয়সী নারীদের হৃদরোগের ঝুঁকি কম বলে মনে করা হয়। কিন্তু তাঁদের মধ্যেও ৯৫ শতাংশের বেশি ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হওয়ার আগে এই ঝুঁকিগুলোর অন্তত একটি ছিল।
এই চারটি ঝুঁকির মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর হলো উচ্চ রক্তচাপ। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া—উভয় দেশেই দেখা গেছে, যাদের হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক বা হার্ট ফেইলিওর হয়েছে, তাদের ৯৩ শতাংশের বেশি মানুষের আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপ ছিল। তাই শুধু এই একটি বিষয় নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেই ভবিষ্যতে মারাত্মক হৃদরোগ থেকে অনেকটাই বাঁচা সম্ভব।
এই চারটি ঝুঁকি হলো উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে কোলেস্টেরলের উচ্চ মাত্রা, রক্তে শর্করার উচ্চ মাত্রা এবং ধূমপান।গবেষণায় দেখা গেছে, হৃদরোগের মতো বড় কোনো ঘটনার আগে ৯৯ শতাংশ মানুষের মধ্যেই এই চারটি ঝুঁকির অন্তত একটি উপস্থিত ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ফিলিপ গ্রিনল্যান্ড এই গবেষণার বিষয়ে একটি সম্পাদকীয়তে লিখেছেন, ‘এই গবেষণা খুবই জোরালোভাবে প্রমাণ করেছে যে হৃদরোগজনিত বড় ঘটনার আগে প্রায় শতভাগ ক্ষেত্রেই এক বা একাধিক ঝুঁকি থাকে। এখন আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত এই নিয়ন্ত্রণযোগ্য ঝুঁকিগুলোকে সামলানোর জন্য আরও বেশি কাজ করা। এমন সব বিষয়ের পেছনে ছোটা উচিত নয়, যেগুলোর চিকিৎসা করা কঠিন এবং যেগুলো আসলে রোগের কারণই নয়।’
গবেষকেরা আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। সম্প্রতি দাবি করা হচ্ছিল, কোনো ঝুঁকি ছাড়াই হঠাৎ করে হৃদরোগের ঘটনা বাড়ছে। কিন্তু এই নতুন গবেষণা সেই দাবিকে চ্যালেঞ্জ করছে। গবেষকদের মতে, আগের গবেষণাগুলোতে হয়তো অনেক ঝুঁকি ধরা পড়েনি। অথবা যেসব ঝুঁকি ক্লিনিক্যাল রোগ নির্ণয়ের মাত্রার নিচে ছিল, সেগুলো উপেক্ষা করা হয়েছিল।
গবেষণাটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে জার্নাল অব দ্য আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজি জার্নালে। এই চারটি ঝুঁকিই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। জীবনযাত্রার কিছু পরিবর্তন, সচেতনতা আর সময়মতো চিকিৎসা করলেই হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখা সম্ভব।