বারান্দা বা বসার ঘরে কাচের বোতল কিংবা শিশিতে মানিপ্ল্যান্ট সাজিয়ে রাখার অভ্যেস অনেকেরই আছে। মানিপ্ল্যান্ট বোতলের ভেতরে পানির ওপরে নির্ভর করে অনেক দিন বাঁচে। মাঝেমধ্যে অবশ্য বোতলের পানি পাল্টে দিতে হয়। কিন্তু কীভাবে শুধু পানিতে দিনের পর দিন মানিপ্ল্যান্ট বেঁচে থাকে এবং ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে, তা অনেককেই অবাক করে। এ নিয়ে গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
মানিপ্ল্যান্টের পক্ষে বাতাসে ভেসে আসা কিছু খনিজ লবণ পেলেও, নাইট্রোজেন পাওয়া সম্ভব হয় না। তাহলে প্রশ্ন উঠতে পারে, এসব জিনিস ছাড়া মানিপ্ল্যান্ট বেঁচে থাকে কীভাবে?
মানিপ্ল্যান্টের বৈশিষ্ট্য হলো, পাতাগুলো তুলনামূলকভাবে অন্যান্য গাছের পাতা থেকে আয়তনে অনেকটা বড়। আর এরা ঘরের বৈদ্যুতিক বাল্বের মৃদু আলোকেও জৈব খাবার তৈরির কাজে লাগাতে পারে। অনেকে হয়তো জানেন, সবুজ পাতা আলোর সাহায্যে বাতাসের কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস ও পানি থেকে জৈব খাবার নিজেই তৈরি করতে পারে। মানিপ্ল্যান্টও পাতার সবুজ রঞ্জক বা পিগমেন্ট (ক্লোরোফিল), কার্বন ডাই-অক্সাইড ও পানি থেকে নিজের খাবার তৈরি করে। আলোর সাহায্যে নতুন কিছু তৈরি হয় বলে পাতার এই কাজকে বলে সালোকসংশ্লেষণ।
জৈব খাবার ছাড়াও গাছের খনিজ লবণ, নাইট্রোজেন দরকার। মানিপ্ল্যান্টের পক্ষে বাতাসে ভেসে আসা কিছু খনিজ লবণ পেলেও, নাইট্রোজেন পাওয়া সম্ভব হয় না। তাহলে প্রশ্ন উঠতে পারে, এসব জিনিস ছাড়া মানিপ্ল্যান্ট বেঁচে থাকে কীভাবে?
খেয়াল করেছেন হয়তো, বোতলে রাখা মানিপ্ল্যান্টের নিচের দিকের একটা পাতা ঝরে গেলে তবেই আরেকটা নতুন পাতা জন্মায়। তলার পাতা ঝরে পড়ার আগে পাতার খনিজ লবণ, নাইট্রোজেন ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান পাতা থেকে বেরিয়ে কাণ্ডে চলে যায়। এ থেকেই নতুন পাতা সম্পূর্ণ পুষ্টির যোগান পায়। অর্থাৎ মানিপ্ল্যান্টের খনিজ বস্তুর ভাণ্ডার আমৃত্যু একই রকম থাকে। এ কারণেই শুধু পানিতে অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারে মানিপ্ল্যান্ট।
