আমরা কেন স্বপ্ন দেখি

ঘুমের ভেতরে আমরা স্বপ্ন দেখি। কখনো স্বপ্ন দেখেনি, এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া কঠিন। ঘুমের কয়েকটি পর্যায় আছে। ঘুম গভীর হলে একপর্যায়ে আমাদের চোখের মণি অনেক নড়াচড়া করে, চোখের পাতা কাঁপতে থাকে। এ পর্যায়কে ইংরেজিতে বলা হয় র‍্যাপিড আই মুভমেন্ট স্লিপ বা রেম স্লিপ। এ সময় আমরা স্বপ্ন দেখি।

কিন্তু কেন? আমরা কেন স্বপ্ন দেখি? মস্তিষ্কের একটি অংশের নাম প্যারাইটাল লোব। এ অংশই স্বপ্নের জন্য দায়ী। প্যারাইটাল লোব সংবেদনশীল বিভিন্ন উপলব্ধি, যেমন স্বাদ, শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি, স্পর্শ ও গন্ধের তথ্যগুলোকে একত্র করে। অনেক বিজ্ঞানীর ধারণা, আমরা যখন ঘুমাই, তখন প্যারাইটাল লোব ক্রমাগত নানা রকম সংকেত তৈরি করে। আমাদের মস্তিষ্ক এসব সংকেত থেকে একটি গল্প তৈরি করার চেষ্টা করে। ফলে আমাদের চোখের সামনে নানা ছবি, স্থান, আকৃতি ইত্যাদি ভেসে ওঠে। এটাই আমরা স্বপ্ন হিসেবে দেখি।

সাধারণত যাঁদের প্যারাইটাল লোব কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাঁদের মস্তিষ্ক সূক্ষ্ম সংবেদনশীল তথ্য জড়ো করতে পারে না। ফলে ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁদের মস্তিষ্কে কোনো সংকেত তৈরি হয় না। তাই তাঁরা স্বপ্ন দেখেন না। 

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন

কিছু গবেষকের ধারণা, স্বল্পস্থায়ী স্মৃতিগুলো দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে পরিণত হওয়ার সময় বা স্মৃতির পাতা থেকে অবাঞ্ছিত তথ্য মুছে ফেলার সময় আমরা স্বপ্ন দেখি। এই ধারণার পেছনের কারণ, ঘুমের রেম পর্যায়ে আমাদের সারা দিনের স্মৃতিগুলো মস্তিষ্ক দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি হিসেবে সংরক্ষণ করে।

মনোবিদদের ধারণা, স্বপ্নের কিছু উপকারিতা আছে। স্বপ্নের মাধ্যমে স্মৃতি পোক্ত হয়, আবেগ সঠিক পথে চালিত হয়। তা ছাড়া স্বপ্নে অনেকেই সৃজনশীল ভাবনার সন্ধান পান। সারা দিন হয়তো ভেবেছেন, তার সমাধান মেলে স্বপ্নে। কারণ হতে পারে, এ সময় মস্তিষ্ক বিশ্রাম পায়, দেহ বিশ্রাম পায়। মস্তিষ্ক সারা দিনের কাজগুলো পর্যালোচনা করে। ফলে দেখা যায়, অনেক লেখার কাহিনি বা ছবি আঁকার দৃশ্যপটও মিলে যায় স্বপ্নে।

লেখক: শিক্ষার্থী, সিটি কলেজ, ঢাকা

সূত্র: হাউ ইট ওয়ার্কস

আরও পড়ুন