মুভি রিভিউ
অ্যারাইভাল: পৃথিবীতে এলিয়েন এলে কি হবে
অবসরে সায়েন্স ফিকশন দেখতে পছন্দ করেন? কল্পরথে চড়ে ডানা মেলতে চান বিজ্ঞানের মজার সব তত্ত্ব এবং ভিন্ন বাস্তবতায়? তাহলে এই মুভি আপনার জন্য…
কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই একদিন পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় ভিনগ্রহী মহাকাশযান অবতরণ করে। নভোযানগুলো একেকটার আকার বিশাল, ডিম্বাকৃতির। সেগুলো নেমেছে ১২টি ভিন্ন ভিন্ন জায়গায়। এই অপ্রত্যাশিত আগমনে বিশ্বজুড়ে তৈরি হয় ব্যাপক আতঙ্ক; হৈচৈ। বিশ্বের প্রতিটি দেশ নিজেদের মতো করে এই ভিনগ্রহীদের উদ্দেশ্য বোঝার চেষ্টা করতে শুরু করে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করতে থাকে?
কিন্তু মানুষ কি এই এলিয়েনদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে? আদৌ কি সেটা সম্ভব? কিন্তু যোগাযোগ করা না গেলে কীভাবে বোঝা যাবে তাদের এখানে আসার উদ্দেশ্য? সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, পৃথিবীতে কেন এসেছে এসব এলিয়েন? পৃথিবীটা কি ওরা ধ্বংস করে দেবে?
এসব জবাব পেতে দেখতে হবে সাইফাই মুভি অ্যারাইভাল।
প্রখ্যাত বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লেখক আর্থার সি ক্লার্ক তাঁর বিখ্যাত একটি উক্তিতে বলেছিলেন, ‘মহাবিশ্বে আমরা হয় একা, নয়তো একা নই। কিন্তু উভয় সম্ভাবনাই সমান ভীতিকর।’ এখন আমরা প্রথমটার মধ্যেই আছি। কিন্তু পরিচালক ডেনিস ভিলেনিউভ দ্বিতীয় ধারণাটি নিয়ে তাঁর সায়েন্স ফিকশন মুভি অ্যারাইভাল এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, যেখানে ভয় ছাড়াই এলিয়েনদের সঙ্গে যোগাযোগের এক ভিন্ন চিত্র দেখা যায়।
একজনরে
মুভির নাম: অ্যারাইভাল
পরিচালক: ডেনিস ভিলেনিউভ
লেখক: এরিক হাইসেরা
ধরন: সায়েন্স ফিকশন ড্রামা
প্রকাশকাল: ২০১৬
ব্যাপ্তি: ১ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট
আইএমডিবি রেটিং: ৭.৯
পুরস্কার: একটি অস্কার
চিত্রনাট্যকার এরিক হাইসেরা অ্যারাইভাল-এর গল্পটা লিখেছেন সায়েন্স ফিকশন লেখক টেড চিয়াংয়ের উপন্যাস স্টোরি অফ ইওর লাইফ অবলম্বনে। গল্পের শেষটা এম. নাইট শ্যামালান মুভির কথা মনে করিয়ে দেয়। এ ধরনের গল্পের শেষ কীভাবে হবে, তা বেশ চালাকি ও নিখুঁতভাবে দেখাতে পেরেছেন চিত্রনাট্যকার। যেখানে শেষটা দেখার পরও দর্শকদের মনে আরও অনেক প্রশ্ন ও নতুন ভাবনা তৈরি হবে। এই অনিশ্চয়তাই মুভিটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
সিনেমাটি এমন সব অদ্ভুত ধারণা দেখায়, যা প্রথমে অযৌক্তিক বা গাজাখুরি লাগতে মনে হতে পারে। কিন্তু অ্যামি অ্যাডামসের দারুণ অভিনয় এতই বিশ্বাসযোগ্য যে তা বিশ্বাস করতে কোনো দ্বিধা হয় না। এই মুভির গল্পকে এলিয়েনদের সঙ্গে এক দারুণ সাক্ষাৎ মনে হতে পারে। এটি জেফ নিকোলসের মিডনাইট স্পেশাল বা ক্রিস্টোফার নোলানের ইন্টারস্টেলার-এর মতো মুভি থেকে ভিন্ন ধরনের।
মুভিটা যেহেতু এলিয়েনদের সঙ্গে যোগাযোগ নিয়ে, তাই কাউকে তো ওদের ভাষা বুঝে যোগাযোগ করতে হয়েছে। এই কাজটা করেছেন অ্যামি অ্যাডামস। তিনি ড. লুইস ব্যাঙ্কস চরিত্রে অভিনয় করেছেন। মুভিতে তিনি একজন ভাষাবিজ্ঞানী ও অধ্যাপক। তাঁর জীবনে কাজ ছাড়া আর কিছুই নেই। এজন্য অ্যারাইভাল মুভির গল্পটা ড. লুইস ব্যাঙ্কসের প্রেক্ষাপট থেকে দেখানো হয়েছে। তবে গল্পের শুরু হয় তাঁর জীবনের ট্র্যাজেডি থেকেই। আর শেষটাও হয় তাঁর জীবনের সেসব না পাওয়া এক ভিন্ন উপলব্ধির গল্প দিয়ে। তবে মাঝের দুর্দান্ত গল্প জানতে হলে দেখতে হবে অ্যারাইভাল।