পদার্থবিজ্ঞান
রহস্যময় ইলেকট্রন, ইলেকট্রনের রহস্য
ইলেকট্রনের প্রবাহই বিদ্যুতের প্রবাহ। আর ইলেকট্রন রয়েছে পরমাণুতে। একবার শ্বাস টানলে আপনি যে পরিমাণ ইলেকট্রন টেনে নেন, তার শক্তি ১০০০টি বজ্রপাতের ঝলকের সমান। যেখানে একটা বজ্রপাতের আঘাতে আমাদের মৃত্যু নিশ্চিত, সেখানে প্রতি মুহূর্তে হাজার গুণ বজ্রপাতের সমান বিদ্যুৎ আমার শুষে নিচ্ছি দেহের ভেতর। তাহলে আমরা টিকে আছি কীভাবে? হুট করে ভাজা ভাজা বা কয়লা হয়ে যাচ্ছি না কেন? কিংবা বিদ্যুৎ চমকের মতো ঠুস করে হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছি না কেন?
একসময় পরমাণুকে ভাবা হতো অবিভাজ্য। পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা, যাকে আর ছোট টুকরোয় ভাঙা যায় না। কিন্তু সেই ধারণায় পেরেক ঠুকে দেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী জে জে টমসন। সেটা ১৮৯৭ সালের ঘটনা। সে বছর তিনি পরমাণুর উপপারমাণবিক ও মৌলিক কণা ইলেকট্রন আবিষ্কার করেন। বিষয়টি মেনে নিতে সে যুগের বিজ্ঞানীদের বেশ কষ্ট হয়েছিল সত্য, কিন্তু টমসন এত নিখুঁত পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে ইলেকট্রনের অস্তিত্ব প্রমাণ করেছিলেন যে তা অস্বীকার করার কোনো উপায় ছিল না।
এরপর পরমাণু এবং ইলেকট্রন নিয়ে আরও গবেষণা হয়েছে। তাতে জানা গেছে নিত্যনতুন অনেক বিস্ময়কর বিষয়। সে কথাগুলো বলার আগে ছোট্ট করে বলে নিই, ইলেকট্রন অতি ক্ষুদ্র এক কণা। একটা পরমাণু বা নিউক্লিয়াসের চেয়ে বহুগুণে ছোট। একে খালি চোখে দেখাও যায় না। তবে দেখতে না পেলেও আমাদের চারপাশের সব জায়গায় ছড়িয়ে আছে এই খুদে কণা। আপনার বাসার ইলেকট্রিক সকেটে, এক্স-রে টিউব থেকে শুরু করে মহাবিশ্বের প্রতিটি পরমাণুতে ইলেকট্রন রয়েছে। বিদ্যুৎ আসলে ইলেকট্রনের স্রোত। আর ঘরে বা বাইরে সুইচ টিপে যে আলো জ্বালান, তাও এই ইলেকট্রনের কারসাজি। মানে ইলেকট্রনের ফোটন কণা নিঃসরণের ফলাফল।
কণাপদার্থবিজ্ঞানের স্ট্যান্ডার্ড বা প্রমিত মডেলে মৌলিক কণাগুলো প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এক ভাগ ফার্মিয়ন, আরেক ভাগ বোসন। ফার্মিয়ন হলো বস্তুকণা। যেমন ইলেকট্রন। আর বোসন হলো বস্তুকণাদের মধ্যে বলের বাহক। যেমন ফোটন। ফোটন কণা বিদ্যুৎচুম্বকীয় বলের বাহক হিসেবে ইলেকট্রন কণাদের সঙ্গে কাজ করে। মানে ইলেকট্রন কণাদের মধ্যে শক্তি বিনিময় করে ফোটন।
অনেক দূর থেকে আমরা যদি ক্রমে একটা পরমাণুর দিকে এগিয়ে যেতে পারতাম, তাহলে প্রথম দর্শনেই পরমাণুটিকে বৈদ্যুতিকভাবে চার্জিত অতি ক্ষুদ্র কণাদের জঙ্গল হিসেবে দেখতে পেতাম। এগুলোই ইলেকট্রন। এই কণাকে প্রকৃতির বর্ণমালার অন্যতম মৌলিক অক্ষর বলে মনে করা হয়। ইলেকট্রনের গহীনে যদি আরও কোনো মৌলিক কণা লুকিয়ে থাকে, তাহলে আমরা এখনও তাদের কোনো ইঙ্গিত পাইনি। প্রতিটি ইলেকট্রনই আকার, আকৃতি, ভর এবং চার্জের দিক থেকে হুবহু একই রকম।
এদের বৈদ্যুতিক চার্জ মাপা হয় কুলম্ব একক ব্যবহার করে। একে প্রকাশ করা হয় ইংরেজি বড় হাতের সি (C) দিয়ে। একটা ইলেকট্রনের চার্জের পরিমাণ নগণ্য। মাত্র এক মাইক্রো কুলম্ব চার্জের জন্য মোট ৬ ট্রিলিয়ন বা ৬০ হাজার কোটি ইলেকট্রন একসঙ্গে জড়ো করতে হবে। বলে রাখা ভালো, এক মাইক্রো কুলম্ব মানে এক কুলম্বের দশ লাখ ভাগের এক ভাগ মাত্র। বুঝতেই পারছেন, একটা ইলেকট্রনের চার্জ কত সামান্য। তবে সামান্য ধূলিকণাতেও যে পরিমাণ পরমাণু আছে, তা আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে থাকা নক্ষত্রের চেয়ে বেশি। আর (হাইড্রোজেন ছাড়া) প্রতিটি পরমাণুতেই আছে একাধিক ইলেকট্রন। তাই একটা ইলেকট্রনের চার্জ নগণ্য হলেও এই ধূলিকণার পরমাণুতে ইলেকট্রনের সংখ্যা অগণিত। আর তার ফলাফল মারাত্মক। হয়তো ভাবছেন, কতটা মারাত্মক?
উদাহরণ দেওয়া যাক। আপনি প্রতিবার শ্বাসের সঙ্গে বুক ভরে অক্সিজেন নিচ্ছেন। বলা ভালো, ফুসফুসে ভরে নিচ্ছেন। তবে একটা-দুটো অক্সিজেন নয়, প্রায় ১০ বিলিয়ন ট্রিলিয়ন অক্সিজেন পরমাণু প্রতিবার আপনার ফুসফুসে ঢুকে পড়ছে। প্রতিটি অক্সিজেন পরমাণুতেই বেশ কটি ঋণাত্মক চার্জের ইলেকট্রন থাকে। সব কটি ইলেকট্রনের চার্জ হিসেব করলে, এর মধ্যে রয়েছে প্রায় ১৫ হাজার কুলম্ব বৈদ্যুতিক চার্জ। সেটা ১০০০টি বজ্রপাতের ঝলকের সমান। কিন্তু সেটা ঘটছে আপনার অজান্তেই। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, বিপুল পরিমাণ বৈদ্যুতিক চার্জ বুকের ভেতর টেনে নিয়েও কোনো বৈদ্যুতিক শক অনুভব করছেন না আপনি। শ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে ঢোকা ইলেকট্রনগুলো যদি বৈদ্যুতিক প্রবাহ তৈরি করত, তাহলে তার পরিমাণ দাঁড়াত ৩ হাজার অ্যাম্পিয়ার (এক অ্যাম্পিয়ার হলো এক সেকেন্ডে এক কুলম্ব চার্জের প্রবাহ)। আপনাকে মেরে ফেলার জন্য যথেষ্ট। কী আশ্চর্য! তবু আমরা বহাল তবিয়তে বেঁচে আছি। কিন্তু কোনো কারণে আমাদের গভীরের এই বিদ্যুৎ নিজ রূপে প্রকাশিত হতে পারছে না। কেন হচ্ছে না, সেটাও আপাতদৃষ্টিতে একটা রহস্য বা প্যারাডক্স বলে মনে হতে পারে।
আপনি যখন নিজের ল্যাপটপ, ফোন বা ব্যাটারি চালিত ইলেকট্রিক কার বা গাড়ি চার্জ দেন, তখন আসলে অসংখ্য ইলেকট্রন সংরক্ষণ করে রাখছেন ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য
যা-ই হোক, ইলেকট্রনকে পরমাণুর সাধারণ একটা কণা বলে মনে হতে পারে। কিন্তু এই কণাটাই আসলে আমাদের আধুনিক বিশ্বের জন্য অতি জরুরি। কারণ, মৌলিক এই কণাটি বৈদ্যুতিক চার্জের বাহক। আপনি যখন নিজের ল্যাপটপ, ফোন বা ব্যাটারি চালিত ইলেকট্রিক কার বা গাড়ি চার্জ দেন, তখন আসলে অসংখ্য ইলেকট্রন সংরক্ষণ করে রাখছেন ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য।
আগেই বলেছি, বিদ্যুৎ বা বৈদ্যুতিক প্রবাহ হলো ইলেকট্রনের প্রবাহ। এই প্রবাহ হতে পারে কম্পিউটার চিপের মধ্যে কিংবা আপনার মস্তিষ্কের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের তন্তুগুলোর মধ্যে, যার মাধ্যমে মস্তিষ্ক থেকে দেহের বিভিন্ন অঙ্গে নির্দেশ ছড়িয়ে পড়ে। আবার মেট্রোরেল বা ইলেকট্রিক ট্রেনের ওপরের তারের মাধ্যমেও এ প্রবাহ হতে পারে, যা রেলকে শক্তি যোগায়। আমাদের বিদ্যুৎ চালিত আধুনিক শিল্পকারখানার কথা আর নাই-বা বললাম। বুঝতেই পারছেন, আধুনিক প্রযুক্তির বেশির ভাগ আসলে ইলেকট্রনের চলাচলের কারণে সচল থাকে।
আগেই এক অ্যাম্পিয়ারের সংজ্ঞা দিয়েছি। অনেকে জানতে চাইতে পারেন, এক সেকেন্ডে কত কুলম্ব চার্জ প্রবাহিত হয়? কিংবা এর জন্য কতটি ইলেকট্রনের প্রবাহের প্রয়োজন? এর উত্তর হলো, আপনার একটি হৃদস্পন্দনের সময়কালে একক একটি বিন্দুর ভেতর দিয়ে ঘটে চলেছে ৬.২৪ বিলিয়ন বিলিয়ন ইলেকট্রনের প্রবাহ।
কাজেই এই বিপুল পরিমাণ ইলেকট্রনের চলাচলের কারণে সামান্য পরিমাণ বিদ্যুৎ প্রবাহও আমাদের জন্য ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। মনে রাখবেন, মাত্র ১০ মিলিঅ্যাম্প (এক অ্যাম্পিয়ারের এক হাজার ভাগের এক ভাগ) বিদ্যুৎ প্রবাহেও আপনার বেদনাদায়ক শক অনুভূত হবে। আর ১০০ থেকে ২০০ মিলিঅ্যাম্প প্রবাহ হবে মারাত্মক। ১০ মিলিঅ্যাম্প বিদ্যুৎ প্রবাহিত হচ্ছে, এমন একটা বৈদ্যুতিক তার স্পর্শ করলে আপনার মাংসপেশি এত শক্তিশালীভাবে কুঁচকে যেতে পারে যে ওই তার থেকে দূরে সরে যাওয়ার শক্তিও পাবেন না। ফুসফুসও নিয়ন্ত্রণ করে যে পেশি, তাকেও এই বিদ্যুৎ প্রবাহ প্রভাবিত করবে। ফলে অচিরেই থেমে যাবে শ্বাসপ্রশ্বাস। আর ১০০ মিলিঅ্যাম্প বিদ্যুৎপ্রবাহে হৃৎপিণ্ডের পেশি প্রভাবিত হয়ে কাজকারবার বন্ধ হয়ে যাবে। তা মৃত্যুর ঝুঁকির দিকে নিয়ে যাবে আপনাকে। ২০০ মিলিঅ্যাম্পের বেশি বিদ্যুৎপ্রবাহে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আছে। তবে হৃৎপেশিগুলো আটকে যাওয়ার কারণে ভেন্ট্রিকুলার ফিব্রিলেশন বাধা পাবে। সেই সঙ্গে অনুভূত হবে ভয়াবহ জ্বলুনি। মুহূর্তের মধ্যে আপনার দেহটা ভাজা ভাজা হয়ে যাবে।
যেখানে একটা বজ্রপাতের আঘাতে আমাদের মৃত্যু নিশ্চিত, সেখানে প্রতি মুহূর্তে হাজার গুণ বজ্রপাতের সমান বিদ্যুৎ আমার শুষে নিচ্ছি দেহের ভেতর। তাহলে আমরা টিকে আছি কীভাবে? হুট করে ভাজা ভাজা বা কয়লা হয়ে যাচ্ছি না কেন? কিংবা বিদ্যুৎ চমকের মতো ঠুস করে হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছি না কেন?
বিদ্যুৎপ্রবাহের ভৌত ব্যাপার-স্যাপার বেশ জটিল, তবে ওপরের ঘটনাগুলো আগে বলা রহস্যটা বোঝার জন্য যথেষ্ট। কিছুক্ষণ আগেই দেখলেন, ১০০ মিলিঅ্যাম্পের বিদ্যুৎ স্রোত মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট। আর এর চেয়ে বেশি বিদ্যুৎপ্রবাহ আপনাকে ভাজাভাজা করে ফেলবে নিশ্চিত। কিন্তু আমরা এক নিঃশ্বাসে প্রায় ১৫ হাজার কুলম্ব চার্জ দেহের ভেতরে টেনে নিচ্ছি। এর পরিমাণ কয়েক সেকেন্ডের জন্য ৩ হাজার অ্যাম্প। আর কাজটা আমরা করছি সব সময়। যেখানে একটা বজ্রপাতের আঘাতে আমাদের মৃত্যু নিশ্চিত, সেখানে প্রতি মুহূর্তে হাজার গুণ বজ্রপাতের সমান বিদ্যুৎ আমার শুষে নিচ্ছি দেহের ভেতর। তাহলে আমরা টিকে আছি কীভাবে? হুট করে ভাজা ভাজা বা কয়লা হয়ে যাচ্ছি না কেন? কিংবা বিদ্যুৎ চমকের মতো ঠুস করে হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছি না কেন?
তার কারণটা সরল। আসলে প্রতিটি পরমাণুতে ইলেকট্রনের এই ঋণাত্মক চার্জের জঙ্গলের কেন্দ্রে থাকে একটা ভারী ও ঘন ধনাত্মক চার্জের পিণ্ড। সেটি ইলেকট্রনের চেয়েও কয়েক হাজার গুণ ভারী। একে বলা হয় পারমাণবিক কেন্দ্র বা অ্যাটমিক নিউক্লিয়াস। সংক্ষেপে নিউক্লিয়াস। বিপরীত চার্জের বৈদ্যুতিক আকর্ষণ এই ঘনবদ্ধ কেন্দ্রীয় ধনাত্মক চার্জের চারপাশে ঋণাত্মকভাবে চার্জিত ইলেকট্রনগুলোকে আটকে রাখে।
নিউক্লিয়াসে থাকে দুই ধরনের কণা—প্রোটন ও নিউট্রন। অবশ্য এগুলো ইলেকট্রনের মতো মৌলিক কণা নয়। সে কথায় পরে আসছি। প্রোটন কণার চার্জ ধনাত্মক এবং নিউট্রন কণা চার্জ নিরপেক্ষ। দুটোই ইলেকট্রনের চেয়ে প্রায় ২ হাজার গুণ ভারী। একটা নিউক্লিয়াসে প্রোটনের সংখ্যার মাধ্যমে নির্ধারিত হয় তার মোট চার্জ। আবার মৌলের পর্যায় সারণিতে ওই মৌলের অবস্থান নির্ধারিত হয়। যেমন হাইড্রোজেনের প্রোটন সংখ্যা একটি। তাই পর্যায় সারণিতে এ মৌলের অবস্থান এক নম্বরে। হিলিয়ামের প্রোটন সংখ্যা দুটি। এর অবস্থান দুই নম্বর। একইভাবে নাইট্রোজেনের অবস্থান ৭ নম্বরে, কারণ তার প্রোটন সংখ্যা ৭টি।
আগেই বলেছি, প্রোটন ও নিউট্রন মৌলিক কণা নয়, বরং যৌগিক কণা। এরা আরও ছোট কণা কোয়ার্ক দিয়ে গঠিত। দুটি আপ কোয়ার্ক এবং একটি ডাউন কোয়ার্ক একত্র হয় গঠিত হয় প্রোটন। অন্যদিকে দুটি ডাউন কোয়ার্ক এবং একটি আপ কোয়ার্ক মিলে গঠিত হয় নিউট্রন কণা।
ধনাত্মকভাবে চার্জিত নিউক্লিয়াস হলো বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের উৎস, যা পদার্থের কাঠামো গড়ে তোলে। লক্ষ্যণীয় ব্যাপার হলো, একটা প্রোটনের ধনাত্মক চার্জের পরিমাণ এবং একটা ইলেকট্রনের ঋণাত্মক চার্জের পরিমাণ এক সমান। এটাই পরমাণুতে চার্জের ভারসাম্য আনে। অর্থাৎ একটা পরমাণুতে একটা প্রোটনের বিপরীতে একটা ইলেকট্রন থাকে।
পরমাণুর এই ভারসাম্য এতই নিখুঁত যে অসংখ্য পরমাণুর ইলেকট্রনের ১৫ হাজার কুলম্বের ঋণাত্মক চার্জ তাতে চার্জ নিরপেক্ষ হয়ে যায়। এভাবেই ভারসাম্যপূর্ণ হয়ে গড়ে ওঠে বিভিন্ন অণু। এই বিপরীত ধর্মী বৈদ্যুতিক চার্জ পরস্পরকে এত নিখুঁতভাবে বাতিল করে দেয় যে বড় পরিসরে—মানে গ্রহ, নক্ষত্র বা গ্যালাক্সিতে আর এই বলের নিয়ন্ত্রণ থাকে না। সেখানে অনেক গুণ দুর্বল মহাকর্ষই মূখ্য হয়ে ওঠে। কিন্তু ধনাত্মক ও ঋণাত্মক চার্জের এই ভারসাম্য যদি এক বিলিয়ন ট্রিলিয়নের মধ্যে এক ভাগও নষ্ট হতো, তাহলে মহাকর্ষের ওপর আধিপত্য বিস্তার করত বৈদ্যুতিক বল। সেটা ঘটলে আমাদের মহাবিশ্ব, গ্রহ, নক্ষত্র কিছুই থাকত না। সবকিছু মুহূর্তের মধ্যেই তছনছ হয়ে যেত।
কাজেই বৈদ্যুতিক বলের এই প্রতিসাম্যতা আমাদের বাঁচিয়ে দিয়েছে। এই প্রতিসাম্যতার কারণেই আমাদের গভীরে বিপুল পরিমাণ বৈদ্যুতিক চার্জ লুকিয়ে আছে, কোনো ক্ষতি না করেই।