একদিন এক লোক একটি কুকুরের বাচ্চা নিয়ে একটি বড় রেস্টুরেন্টে ঢুকলেন। সঙ্গে সঙ্গে রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার ছুটে এল।
— মাফ করবেন, এখানে কুকুর নিয়ে ঢোকা নিষেধ।
— কিন্তু এটা খুব স্পেশাল একটা কুকুর!
— মানে?
— মানে…আসলে আমি একজন জিনবিজ্ঞানী। বিশেষ করে প্রাণীদের জিন নিয়ে কাজ করি। এই কুকুরের জিনে আমি এমন কিছু করেছি, যার জন্য সে এখন একটি স্পেশাল কুকুর!
—বেশ দেখান, সে ঠিক কী করতে পারে।
জিনবিজ্ঞানী তখন কুকুরটিকে চোখে কী একটা ইশারা দিলেন এবং তিনি চলে গেলেন ওয়াশরুমে হাত ধুতে। বাচ্চা কুকুরটি তখন চট করে মুখ দিয়ে লোকটার ব্যাগটা খুলে ফেলল। তারপর লোকটার ল্যাপটপটা বের করে দিব্যি টেবিলের ওপর রেখে ওপেন করল। আশপাশে সবাই অবাক হয়ে গেল। ম্যানেজার বলেই ফেলল, ‘বাহ, একটা বাচ্চা কুকুর ল্যাপটপ ওপেন করতে পারে!’ বাচ্চা কুকুরটি তখন ফিসফিস করে মানুষের গলায় বলল, ‘আমি সি প্রোগ্রামিংও পারি।’
— বলে কী, তু-তুমি কথাও বলতে পারো?
— শ্শ্শ্...আমার মালিক আসছেন, উনি কিন্তু জানেন না আমি কথা বলতে পারি। জানলে আমাকে দিয়ে তাঁর বৈজ্ঞানিক বক্তৃতাগুলোও দেওয়ানো শুরু করবেন।
বাচ্চা কুকুরটি এবার রেস্টুরেন্টের কোনায় গিয়ে বিশাল পিয়ানোর সামনের টুলে বসল; তারপর বিটোফেনের ‘সিক্সথ সিম্ফনি’ বাজাতে শুরু করে দিল। সুরের মূর্ছনায় রেস্টুরেন্টে উপস্থিত সবার মুখ হাঁ হয়ে গেল।
দ্বিতীয় এক দিন সেই জিনবিজ্ঞানী আবার এলেন একই রেস্টুরেন্টে। এবার তাঁর সঙ্গে আরেকটি বাচ্চা কুকুর। ম্যানেজার এবার হাসিমুখে এগিয়ে এলেন।
— এ-ও নিশ্চয়ই স্পেশাল কোনো কুকুর?
— ঠিক ধরেছেন।
— এ কী পারে?
— দেখুন কী পারে, বলে তিনি চোখে ইশারা দিলেন। বাচ্চা কুকুরটি এবার রেস্টুরেন্টের কোনায় গিয়ে বিশাল পিয়ানোর সামনের টুলে বসল; তারপর বিটোফেনের ‘সিক্সথ সিম্ফনি’ বাজাতে শুরু করে দিল। সুরের মূর্ছনায় রেস্টুরেন্টে উপস্থিত সবার মুখ হাঁ হয়ে গেল। ঠিক তখন গম্ভীর মুখে হন্তদন্ত হয়ে একটা বেশ বড়সড় কুকুর ঢুকল। বাচ্চা কুকুরটি তখন বিটোফেনের ‘সিক্সথ সিম্ফনি’ শেষ করে মোৎজার্টের একটা সুর তুলেছে পিয়ানোতে...কিন্তু বড় কুকুরটি সোজা গিয়ে পিয়ানো বাজানো বাচ্চা কুকুরটির ঘাড়ে কামড়ে ধরে নিয়ে চলে গেল রেস্টুরেন্টের বাইরে। উপস্থিত সবাই হাঁ হাঁ করে উঠল।
ম্যানেজার জানতে চাইল, ‘এটা কী হলো?’
দীর্ঘশ্বাস ফেললেন জিনবিজ্ঞানী। ‘আর বলবেন না, ওই বড় কুকুরটা আসলে ওর মা। সে চায় না তার বাচ্চা সুরকার হোক। সে চায় ওকে আমার মতো বিজ্ঞানী বানাতে...।’
