পরিবেশবাদী নারী ও পুরুষ

১.

এক লোক শীতের সিজনে একটা সুন্দর জ্যাকেট পরে যাচ্ছিলেন। এক মহিলা তাঁকে আটকালেন।

—আপনি এটা কী পরেছেন?

—কেন, জ্যাকেট।

—এই জ্যাকেট কিসের তৈরি?

—ভেড়ার লোমের।

—এই জ্যাকেট তৈরি করতে কটা ভেড়াকে মরতে হয়েছে?

—খুব বেশি না, মাত্র তিনটা।

এবার মহিলা হুংকার দিয়ে উঠলেন, ‘এই আপনাদের মতো মানুষদের জন্য পৃথিবীর প্রাণীরা সব এনডেঞ্জার স্পেসিস হয়ে যাচ্ছে। আপনাকে গ্রেপ্তার করে ফাঁসিতে ঝোলানো উচিত...’

লোকটা ঠান্ডা মাথায় বললেন, ‘ইয়ে...মনে হচ্ছে আপনি ওই তিন হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করেছেন। সে ক্ষেত্রে আমি নিজের সেফটির জন্য কোনো প্রমাণ রাখব না,’ বলে পকেট থেকে পিস্তল বের করলেন।

আরও পড়ুন

২.

না, সেই মহিলাকে মরতে হয়নি। তিনি এখনো দিব্যি বেঁচে আছেন। তার মানে, আগের ঘটনায় কোনো হত্যাকাণ্ড ঘটেনি। তো সেই মহিলাই আবার সেই লোককেই পথ আটকালেন। এই লোক এবার পাইথনের চামড়ার একটা ব্লেজার পরে হেঁটে যাচ্ছিলেন।

—আপনি সেই লোক না, ভেড়ার চামড়ার জ্যাকেট পরে আমাকে নকল পিস্তল দিয়ে ভয় দেখিয়েছিলেন?

—এ্যাঁ...হ্যাঁ, মনে হচ্ছে আমি সেই লোক।

—আজ এটা কী পরেছেন?

—কেন, ব্লেজার।

—এটা কিসের তৈরি?

—পাইথনের চামড়ার।

—এই ব্লেজার তৈরি করতে কটা পাইথনকে মরতে হয়েছে?

—খুব বেশি না, মাত্র তিনটা।

এবার মহিলা হুংকার দিয়ে উঠলেন, ‘এই আপনাদের মতো মানুষদের জন্য পৃথিবীর প্রাণীরা সব এনডেঞ্জার স্পেসিস হয়ে যাচ্ছে। আপনাকে গ্রেপ্তার করে ফাঁসিতে ঝোলানো উচিত...’

লোকটা ঠান্ডা মাথায় বললেন, ‘ইয়ে...আপনি এটা কী পরে আছেন?’

—কেন, জামদানি শাড়ি।

—এই জামদানি শাড়ি তৈরি করতে কতগুলো মথ পোকাকে মরতে হয়েছে?

এবার মহিলা মিনমিন করে বললেন, ‘এ্যাঁ ইয়ে...২০ হাজার...!’

এবার লোকটা হুংকার দিয়ে উঠলেন, ‘এই আপনাদের মতো মানুষদের জন্য পৃথিবীর পোকামাকড় প্রাণীরা সব এনডেঞ্জার স্পেসিস হয়ে যাচ্ছে। আপনাকে গ্রেপ্তার করে ফাঁসিতে ঝোলানো উচিত...’

আরও পড়ুন

৩.

তবে হ্যাঁ, শেষ পর্যন্ত তাঁরা দুজনেই সত্যি সত্যিই ফাঁসিতে ঝুলেছেন। মানে বিয়ে করেছেন আরকি, দিব্যি সুখেই আছেন এবং দুজনেই সিরিয়াসলি পরিবেশ নিয়ে কাজ

করে যাচ্ছেন...!

লেখক: রম্যলেখক ও কার্টুনিস্ট; সম্পাদক, উন্মাদ

*লেখাটি ২০২৪ সালে বিজ্ঞানচিন্তার মার্চ সংখ্যায় প্রকাশিত

আরও পড়ুন