বিজ্ঞানে পাস-ফেল!

দুই যমজ ভাই, একজন এক মিনিটের বড়, আরেকজন এক মিনিটের ছোট। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, ক্লাস এইটের স্কুল ফাইনাল পরীক্ষায় দুজনই বিজ্ঞানে ফেল করেছে। দুজনই বিশেষ চিন্তিত। বাসায় রিপোর্ট কার্ড দেখাবে কীভাবে। এক মিনিটের বড়জন প্রশ্ন করল এক মিনিটের ছোটজনকে,

—তুই যেন কত পেয়েছিস রে?

—তেরো। তুই?

—বিশ।

—বাহ্‌! তাহলে আমরা দুজন মিলে তো পাস রে। এক মিনিটের ছোটজন আনন্দে চেঁচিয়ে ওঠে। এক মিনিটের বড়জন ভাবে, ‘আরে, তা–ই তো, দুজন মিলে তো ৩৩...মানে বিজ্ঞানে পাস।’

দুই ভাই খুশিমনে বাসায় রওনা দিল। বাবা ধরলেন। ‘কিরে, রেজাল্ট কী?’ দুজনে একসঙ্গে চেঁচাল।

—সব বিষয়ে পাস আমরা। বিজ্ঞানে একসঙ্গে পাস!

এ তো গেল এক কাহিনি। এবার দ্বিতীয় কাহিনিতে যাই। ইনিও বিজ্ঞানে ফেল। তবে বিপজ্জনক ফেল। খাতার ওপরে লাল কালিতে বড় বড় দুটো ভূগোলক আঁকা। রিপোর্ট কার্ডেও একই অবস্থা। মাকে ম্যানেজ করা গেলেও বাবাকে ম্যানেজ করা যায় কী করে?

বাবা বারান্দায় বসে পেপার পড়ছিলেন।

—বাবা চোখ বন্ধ করে সই করতে পারো? বুদ্ধিমান বাবা কেস বুঝে গেলেন। কারণ, তিনিও ছোটবেলায় তাঁর বাবাকে দিয়ে চোখ বন্ধ করিয়ে রিপোর্ট কার্ডে সই করিয়েছিলেন। বাবা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চোখ বন্ধ করে সই করলেন বটে। তবে ফিসফিস করে বললেন, ‘সমস্যাটা কোন সাবজেক্টে?’

আরও পড়ুন
বাহ্‌! তাহলে আমরা দুজন মিলে তো পাস রে। এক মিনিটের ছোটজন আনন্দে চেঁচিয়ে ওঠে। এক মিনিটের বড়জন ভাবে, ‘আরে, তা–ই তো, দুজন মিলে তো ৩৩...মানে বিজ্ঞানে পাস।’

—বিজ্ঞান। ছেলে বিরস বদনে বলে।

দান দান তিন দান। না, এ আর ফেল নয়। এ পাস, বেশ ভালোভাবেই পাস। বাসার সবাই অবাক। বিজ্ঞানের বই তো ওকে হাতে নিতেও দেখি না। বিজ্ঞানে এত নম্বর পেল কীভাবে?

—কিরে, বিজ্ঞানে এত নম্বর পেলি কী করে?

—রতন আমার বন্ধু যে...।

—মানে? রতন কে?

—ক্লাসের ফার্স্ট বয়। ওর পেছনেই আমার সিট পড়েছিল বিজ্ঞান পরীক্ষার সময়। উদাস হয়ে বলে বিজ্ঞানে ভালো নম্বর পেয়ে পাস করা ছাত্রটি।

কোনো পরীক্ষায় কখনোই পাস করতে না পারা এক দার্শনিক মজার কথা বলে গেছেন, ‘আমার পক্ষে পরীক্ষায় পাস করা অসম্ভব এক ব্যাপার, তবে এটাও ঠিক, সব অসম্ভবই কিন্তু ছদ্মবেশে লুকোনো সম্ভব ছাড়া আসলে কিছুই নয়।’

লেখক: রম্য লেখক ও কাটুর্নিস্ট; সম্পাদক, উন্মাদ

*লেখাটি ২০২৫ সালে বিজ্ঞানচিন্তার নভেম্বর সংখ্যায় প্রকাশিত

আরও পড়ুন