‘আমি ধরেই নিয়েছিলাম প্রাণীগুলো আমাদের পরলোকের টিকিট ধরিয়ে দেবে।’ ‘হুম। আমিও তা-ই ভেবেছিলাম। এত সহজেই ভয়ংকর প্রাণীগুলো আমাদের পৃথিবীতে যেতে দেবে, ভাবতেই অবিশ্বাস্য লাগছে।’ ‘তারা দেখতে ভয়ংকর হলেও বন্ধুত্বপূর্ণ, তাই আমাদের পৃথিবীর সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চায়।’ ‘হতে পারে। তবে বিশ্ব বিজ্ঞান সংস্থাকে এ খবর জানানোর জন্য আমার আর তর সইছে না।’
‘স্বাগত রিক ও জাভেদ। তোমরা জীবন্ত ফিরে এসেছ দেখে পুরো দুনিয়া আনন্দের সাগরে ভাসছে। সবকিছু জেনে আমিও অবাক হয়েছি।’ ‘জি স্যার। পৃথিবীর জন্য এটি অনেক বড় সুখবর’, বলল রিক। জাভেদ বলল, ‘স্যার তাদের সম্পর্কে আমরা যা যা তথ্য সংগ্রহ করেছি, তার প্রতিবেদন আমরা খুব শিগগির জমা দেব।’ ‘তোমরা এখন বিশ্রাম করো। পরে সব জানা যাবে।’
বিশ্ব বিজ্ঞান সংস্থার সব সদস্য, হাজারো মানুষ আমাদের বরণ করে নিল। সেগুলো তাহলে কী?
‘রিক, তুই এত তাড়াতাড়ি অফিসে ডাকলি কেন আমাকে? আর তোকে এত চিন্তিত মনে হচ্ছিল কেন?’ হাঁপাতে হাঁপাতে বলল জাভেদ।
‘জাভেদ তুই জানিস আমরা এখন কোথায়?’ ‘হ্যাঁ। অফিসে।’ ‘তুই বুঝতে পারছিস না। আমি বলছি আমরা এখন কোন গ্রহে?’ জাভেদ একপশলা হেসে বলল, ‘পৃথিবীতে আর কোথায়?’ ‘না আমরা পৃথিবীতে নেই। আমরা শুধু দেখছি অর্থাৎ শুধু দেখানো হচ্ছে যে আমরা পৃথিবীতে আছি।’ ‘মানে? কী বলছিস তুই?’ ‘হ্যাঁ। আমরা পৃথিবীতে পৌঁছাইনি।’ ‘২৩ আগস্ট, ২০৬৭ সোমবার আমরা পৃথিবীতে পৌঁছালাম। বিশ্ব বিজ্ঞান সংস্থার সব সদস্য, হাজারো মানুষ আমাদের বরণ করে নিল। সেগুলো তাহলে কী?’ ‘এসবই নকল। এই পৃথিবী সিনেমার একটি সেটের মতো। এসব মানুষ ওই সেটেরই অংশ।’
‘তুই কীভাবে জানলি?’ ‘তুই নিশ্চয়ই জানিস রাতে আমার প্রায়ই ঘুম ভেঙে যায় আর ঘুম আসে না। গত কয়েক রাতে আমি লক্ষ করেছি, বাড়িতে আমি ছাড়া কেউ নেই। সবাই রাতে উধাও, এমনকি পুরো এলাকার মানুষ উধাও হয়ে যায়। গত রাতে নিশ্চিত হয়েছি যে পুরো পৃথিবীর মানুষই রাতে উধাও হয়ে যায়।’ ‘তার মানে আমি আর তুই বাদে সব মানুষই ভার্চ্যুয়াল মডেল?’
‘না। শুধু আমি ছাড়া। কারণ গত রাতে দেখেছি তুইও উধাও হয়ে যাস।’
‘ও তুই জেনে গেছিস যে আমিও এই সেটের অংশ।’ ‘জেনে গেছিস তো আমাকে এসব বলতে এসেছিস কেন?’
‘জাভেদকে প্রমিস করেছিলাম সবকিছু তার সঙ্গে শেয়ার করব। তাকে তো পাব না। তাই মরার আগে তোর সঙ্গেই শেয়ার করলাম।’
‘কীভাবে মরবি?’
‘আসার সময় “টক্সিন বিটা ফোর” খেয়ে...’
রিক মাটিতে গুটিয়ে পড়ার আগেই সব ভার্চ্যুয়াল মডেল শূন্যে মিলিয়ে গেল।