দেশে চালু হলো স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা। আজ ২০ মে, মঙ্গলবার বাংলাদেশের ব্যবহারকারীদের জন্য দুটি প্যাকেজ চালু করেছে স্টারলিংক। একটা স্টারলিংক রেসিডেন্স এবং অন্যটা রেসিডেন্স লাইট। রেসিডেন্স প্যাকেজেটি ব্যবহার করা যাবে ছোট পরিবারে। প্রতিমাসে খরচ হবে ৪ হাজার ২০০ টাকা। আর বড় পরিবারের আনলিমিটেড স্পিড ও ডাটার রেসিডেন্স লাইটের প্যাকেজটির জন্য খরচ হবে মাসে ৬ হাজার টাকা। তবে স্টারলিংকের সেটআপ কিনতে এককালীন খরচ হবে ৪৭ হাজার টাকা।
স্টারলিংকের প্যাকেজগুলোতে কোনো ডাটা ব্যবহারের সীমা থাকবে না। গ্রাহকরা সর্বোচ্চ ৩০০ এমবিপিএস পর্যন্ত গতির নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট উপভোগ করতে পারবেন। আগ্রহী গ্রাহকরা পছন্দ মতো প্যাকেজটি আজ থেকেই অর্ডার করতে পারবেন স্টারলিংকের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে।
এর আগে ২৯ এপ্রিল বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫-এ বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিএল) স্টলে বিশেষ কিউআর কোড ব্যবহার করে দর্শনার্থীরা বিনামূল্যে স্যাটেলাইট-চালিত ইন্টারনেট প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছেন। এর গতি বেশ ভালো ছিল।
বড় পরিবারের আনলিমিটেড স্পিড ও ডাটার রেসিডেন্স লাইটের প্যাকেজটির জন্য খরচ হবে মাসে ৬ হাজার টাকা। তবে স্টারলিংকের সেটআপ কিনতে এককালীন খরচ হবে ৪৭ হাজার টাকা।
ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্পেসএক্স পরিচালিত স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রকল্প স্টারলিংক। এ প্রকল্পের আওতায় মহাকাশে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। মোট সাড়ে ১২ হাজার স্যাটেলাইট পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে, অর্থাৎ ভূ-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১১ শ কিলোমিটার ওপর থেকে এগুলো পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে ইন্টারনেট বিশাল এক নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। উপযুক্ত যন্ত্রাংশ কিংবা হাতের স্মার্টফোন ব্যবহার করে এর মাধ্যমে খুব সহজেই ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। এর মাধ্যমে দুর্গম অঞ্চল কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে দ্রুত গতির ইন্টারনেট সেবা পাওয়া সম্ভব।
বাংলাদেশের আগে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভুটানে স্টারলিংকের মাধ্যমে ইন্টারনেট–সেবা নিতে পারছেন গ্রাহকেরা। ভুটানে রেসিডেনশিয়াল ফিক্সড ইন্টারনেটের জন্য খরচ পড়ে প্রতি মাসে ৪ হাজার ২০০ ভুটানিজ গুলট্রাম, যা বাংলাদেশি টাকায় ৫ হাজার ৮০০ টাকার মতো। শুরুতে স্টারলিংকের স্টান্ডার্ট প্যাকেজের জন্য গুনতে হয় ৩৩ হাজার ভুটানিজ গুলট্রাম বা প্রায় ৪৬ হাজার টাকা।
যদিও স্টারলিংকের পরিষেবা ব্যয়বহুল, তবুও গ্রাহকদের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য এবং উচ্চমানের দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবার বিকল্প তৈরি করতে পারে। পাশাপাশি, যেসব অঞ্চলে ফাইবার অপটিক কেবল বা অন্যান্য দ্রুতগতির ইন্টারনেট অবকাঠামো এখনও গড়ে ওঠেনি। সেসব এলাকায় স্টারলিংক ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী কোম্পানিগুলোর জন্য ব্যবসার সম্প্রসারণের একটি নতুন সুযোগ উন্মোচন করবে। এছাড়াও, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা (এনজিও), ফ্রিল্যান্সার এবং নতুন উদ্যোক্তারা স্টারলিংকের মাধ্যমে বছরব্যাপী স্থিতিশীল এবং উচ্চগতির ইন্টারনেটের সুবিধা পাবেন, যা তাদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। স্টারলিংক কী, কীভাবে কাজ করবে, খরচ কীরকম পড়বে—এসব নিয়ে বিস্তারিত জানতে পড়ুন: স্টারলিংক: নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেটের পথে।