কাঁদলে চোখ লাল হয় কেন

রক্তজালিকা প্রসারিত হলে চোখ লাল দেখায়ছবি: সংগৃহীত

একটু বেশি আবেগঘন হয়ে পড়লে আমাদের দেহের ভেতরে বেশ কিছু প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এই অতিআবেগে দেহের বিশেষ অংশ থেকে কিছু রাসায়নিক পদার্থ (যেমন এনজাইম ও হরমোন) নিঃসরণ হয়। এ রাসায়নিক পদার্থ বা হরমোনের পরিমাণ স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে বেশি। এই অতিরিক্ত রস দেহে একধরনের অস্বস্তি তৈরি করে। তাই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে চোখের ল্যাক্রিমাল গ্রন্থি থেকে পানি বেরিয়ে আসতে থাকে। এ ঘটনাকেই কান্না বলে।

চোখের কার্যক্রম ঠিক রাখতে এর টিস্যুতে সবসময় পরিমাণ মতো অক্সিজেন ও পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন। রক্তের মাধ্যমে সরু ও ক্ষুদ্র কিছু জালিকার মধ্য দিয়ে অক্সিজেন বা পুষ্টিরস চোখে আসে। অবশ্য চোখের কর্ণিয়া প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পায় বাইরের বাতাস থেকে। এসব রক্তজালিকা প্রয়োজন অনুসারে প্রসারিত বা সংকুচিত হতে পারে। রক্তজালিকা সংকুচিত বা স্বাভাবিক থাকলে চোখ সাদা থাকে। কিন্তু তা প্রসারিত হলে এর মধ্য দিয়ে রক্ত চলাচল বোঝা যায়। বাইরে থেকে তখন চোখ লাল দেখায়।

আরও পড়ুন

কিন্তু রক্তের এ জালিকা প্রসারিত হয় কেন? নার্ভাস সিস্টেম বা স্নায়ুতন্ত্রের সংকেত পেলে চোখের রক্তজালিকা প্রসারিত হয়। অর্থাৎ সে সময় চোখে বেশি রক্ত সরবরাহের প্রয়োজন পড়ে। কাঁদার সময় চোখের ল্যাক্রিমাল গ্রন্থি থেকে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয়ে চোখে পানি আসে। স্বয়ংক্রিয় নার্ভাস সিস্টেম এবং রক্তে প্রবাহিত বিভিন্ন সংকেত চোখের এ পানির নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে। আবার রক্ত থেকে ল্যাক্রিমাল গ্রন্থির নিঃসৃত পানি সরবরাহ হয়। ফলে রক্তজালিকার কাজ তুলনামূলকভাবে বেড়ে যায়। সে কারণে কাঁদলে চোখের রক্ত জালিকা প্রসারিত হয়। তাই চোখ লাল দেখায়।

লেখক: নির্বাহী সম্পাদক, বিজ্ঞানচিন্তা

আরও পড়ুন