দ্বৈত গুণের সহজ পদ্ধতি

ধরো, তুমিও থিয়ার মতো নামতা জানো না। তাহলে বড় গুণ কীভাবে করবে? নামতা না জেনেও বড় গুণ করা সম্ভব। আজ সেটাই দেখাবো। থিয়া অবশ্য দ্বৈত শব্দটি শুনেই চোখ দুটো বড় বড় করে ফেলেছিল। তখন ওকে বোঝাতে হলো, দ্বৈত মানে দুই। অর্থাৎ, আজকে আমরা একটা গুণ করার জন্য দুইবার গুণ করবো।

৯২-এর সঙ্গে ৯৪ গুণ করতে হবে। এটা আমরা রেফারেন্স নাম্বার ধরে করবো। রেফারেন্স নাম্বার আগের মতোই ১০০। তাহলে ১০০ থেকে ৯২ ও ৯৪ বিয়োগ করতে হবে। ১০০ – ৯২ = ৮ ও ১০০ – ৯৪ = ৬। ভাগফল ৮ ও ৬ যথাক্রমে দুটি বৃত্তে বসিয়ে দিই।

এবার ৯২ থেকে ৬ বা ৯৪ থেকে ৮ বিয়োগ করলে বিয়োগফল হবে ৮৬। বিয়োগফল ৮৬ সমান চিহ্নের ডানপাশে বসিয়ে দিই।

এবার ৮৬-কে রেফারেন্স নাম্বার ১০০-এর সঙ্গে গুণ করলে হবে ৮৬০০। এরপর বৃত্তের মাঝের ৮ ও ৬ গুণ করলেই কাজ শেষ। এ কথাটি বলার সঙ্গে সঙ্গে থিয়া বললো, আমি নামতা মুখস্ত করতে পারবো না। এই গুণও করতে পারবো না আমি। পারবো না, পারবো না। থিয়াকে শান্ত করে বললাম ঠিকাছে, তোমাকে নামতা মুখস্ত করতে হবে না। অন্যভাবে শিখি চলো। থিয়া জিজ্ঞেস করলো, আবার কোন ভাবে? তারপর থিয়াকে শিখালাম দ্বৈত গুণটা। তোমাদেরও শিখিয়ে দিই চলো। 

থিয়া যেহেতু কোনোভাবেই ৮ ও ৬ গুণ করতে চায় না, তাই এই ভিন্ন কৌশল। প্রথম পর্বে যেভাবে গুণ করেছিলাম, সেটা আবার করলেই হবে। অর্থাৎ, রেফারেন্স নাম্বার ১০ ধরে গুণটা করতে হবে। ১০ থেকে ৮ ও ৬ বিয়োগ করলে হবে যথাক্রমে ২ ও ৪। বৃত্তের ভেতর ২ ও ৪ লিখলাম। এবার সব ভুলে শুধু চারটি বৃত্ত নিয়েই ভাবো।

নিয়মানুসারে, ৮ থেকে ৪ বা ৬ থেকে ২ বিয়োগ করলে বিয়োগফল হবে ৪। ওপরের চিত্রের মতো ৮৬০০-এর নিচে প্রথমে ৪ লিখলাম। এবার নিচের বৃত্তের অঙ্ক দুটি গুণ করলে হবে ৮। বসিয়ে দিলাম ৪-এর পাশে। তাহলে ৮ ও ৬-এর গুণফল পেলাম ৪৮। আগের ৮,৬০০-এর সঙ্গে ৪৮ যোগ করলে হবে ৮৬৪৮। এটাই উত্তর।    

তুমি থিয়ার মতো অলস না হলে অর্থাৎ, কষ্ট করে নামতা মুখস্ত করলে এত কষ্ট করতে হবে না। নিচের চিত্রের মতো ওটুকু করার পরে সরাসরি গুণ করে ৮ ও ৬। এরপর গুণফল ৪৮ বসিয়ে দিবে ৮৬-এর পাশে। ব্যাস, উত্তর পেয়ে যাবে ৮ হাজার ৬৪৮।

এবার একটা শতর্কবাণী দিই। গুণের এ সহজ কৌশল শেখানোর উদ্দেশ্য এটা নয় যে তোমরা প্রচলিত নিয়ম বাদ দিয়ে এই নিয়মে গুণ করো। নামতা শেখা বাদ দিয়ে দাও। বরং ওগুলোর পাশাপাশি তোমরা এটাও শিখতে পারো। অনুশীলন করলে সত্যিই তুমি প্রচলিত নিয়মের চেয়ে দ্রুত গুণ করতে পারবে। পাশাপাশি এ গুণের জন্য তেমন চিন্তাভাবনাও করতে হয় না। এটি একটি ভীতিহীন পদ্ধতি। মানে, এ ধরণের গুণ করার সময় তোমার অন্তত ভয় লাগবে না। গুণের নিয়মটা শেখার পরে তোমরা এ ধরনের আরও অনেক কিছু শিখতে পারবে। যেমন, যোগ ও বিয়োগের কৌশল, মনে রাখার পদ্ধতি, ধণাত্মক ও ঋণাত্মক সংখ্যার ব্যাপারে শিখতে পারবে। ধীরে ধীরে আমরা এ সব কিছু শিখবো।  

লেখক: সম্পাদনা দলের সদস্য, বিজ্ঞানচিন্তা

সূত্র: স্পিড ম্যাথ অবলম্বনে

প্রথম পর্ব: গুণের সহজ কৌশল

দ্বিতীয় পর্ব: গুণের আরও সহজ কৌশল

তৃতীয় পর্ব: বড় গুণের সহজ কৌশল

চতুর্থ পর্ব: বড় গুণের আরও সহজ কৌশল