৪ জুলাই ২০১২। জেনেভার সার্নের লার্জ হ্যাড্রন কলয়ডার (এলএইচসি) যন্ত্রে পাওয়া যায় হিগস-বোসন কণা। এ ঘটনা চমকে দেয় পুরো পৃথিবীকে। মহাবিশ্বের সব কণা ও তাদের আচরণ ব্যাখ্যার জন্য পদার্থবিজ্ঞানীরা যে স্ট্যান্ডার্ড মডেল ব্যবহার করে আসছেন, হিগস কণা ছিল এই স্ট্যান্ডার্ড মডেলের ব্যাখ্যার সর্বশেষ অধরা কণা। তবে এখনো স্বস্তির নিশ্বাস ফেলার সময় আসেনি। গবেষণায় পাওয়া নতুন কিছু তথ্য ধারণা দিচ্ছে, এই স্ট্যান্ডার্ড মডেলের বাইরে আরও কিছু কণা থাকতে পারে। পদার্থবিজ্ঞানে এটা নতুন চ্যালেঞ্জ।
হিগস কণা আবিষ্কার হয় এলএইচসির অ্যাটলাস এবং সিএমএস—এই দুই প্রজেক্ট থেকে। নতুন কণা আবিষ্কারের জন্য কাজ করছে এলএইচবি। কলয়ডারে বিউটি হ্যাড্রন কণার ভাঙন কীভাবে হয়, তার পর্যবেক্ষণ আর বিশ্লেষণ করা এই প্রজেক্টের কাজ। তাই এর নাম দ্য বিউটি এক্সপেরিমেন্ট।
অন্য প্রজেক্টের তুলনায় এলএইচবির কাজের ধরন আলাদা। অ্যাটলাস আর সিএমএস প্রজেক্ট দুটি অনাবিষ্কৃত কণা তৈরির চেষ্টা করে। অন্যদিকে এলএইচবি চেষ্টা করে বিউটি হ্যাড্রন কণা ব্যবহার করে সেই সব অদেখা কণার উপস্থিতি বোঝার। এই কণাগুলো এখনো সরাসরি দেখা যায় না। লার্জ হ্যাড্রন কলয়ডারে এই বিউটি হ্যাড্রন কণা তৈরি থেকে ভাঙা পর্যন্ত একে পর্যবেক্ষণ করা হয়। বিউটি হ্যাড্রন বিভিন্ন উপায়ে ভাঙতে পারে। ঠিক কী উপায়ে ভাঙবে সেটা আগে থেকেই হিসাব করে বের করা যায়। পরীক্ষার ফলাফল এই হিসাবের সঙ্গে না মিললে ধারণা করা হয়, হিসাবের বাইরে থাকা কোনো কিছুর প্রভাবে ভাঙন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন হয়েছে।
স্ট্যান্ডার্ড মডেলে সমস্ত কণাকে দুই গ্রুপে ভাগ করা হয়—কোয়ার্ক ও লেপ্টন। ছয় ধরনের কোয়ার্ককে ভাগ করা হয়েছে তিনটা গ্রুপে। আপ এবং ডাউন; চার্ম এবং স্ট্রেঞ্জ; বিউটি (আরেক নাম বটম) এবং টপ—এই তিন জেনারেশনের কোয়ার্ক কণা আছে। কোয়ার্ক একা থাকে না, কয়েকটি কোয়ার্ক মিলে গুচ্ছ তৈরি করে। এই গুচ্ছকে বলে হ্যাড্রন। চারটা বিউটি কোয়ার্ক মিলে একটা বিউটি হ্যাড্রন তৈরি করে। একইভাবে লেপ্টনের আছে তিনটা জেনারেশন—ইলেকট্রন এবং ইলেকট্রন নিউট্রিনো; মিউওন এবং মিউওন নিউট্রিনো; টাউ এবং টাউ নিউট্রিনো। এই কণাগুলোর ওপর কাজ করে বিদ্যুত্ চুম্বকীয় বল, সবল নিউক্লিয় বল ও দুর্বল নিউক্লিয় বল। প্রতিটি বল একটি নির্দিষ্ট কণার মাধ্যমে কাজ করে। বিদ্যুত্ চুম্বকীয় বলের বাহক হলো ফোটন। দুর্বল নিউক্লিয় বল ডব্লিউ এবং জেড বোসনকে বাহক হিসেবে ব্যবহার করে। অন্যদিকে হিগস কণার দায়িত্ব বস্তুকণাকে ভর দান করা।
হিগস কণা আবিষ্কার হয় এলএইচসির অ্যাটলাস এবং সিএমএস—এই দুই প্রজেক্ট থেকে। নতুন কণা আবিষ্কারের জন্য কাজ করছে এলএইচবি। কলয়ডারে বিউটি হ্যাড্রন কণার ভাঙন কীভাবে হয়, তার পর্যবেক্ষণ আর বিশ্লেষণ করা এই প্রজেক্টের কাজ। তাই এর নাম দ্য বিউটি এক্সপেরিমেন্ট।
স্ট্যান্ডার্ড মডেল পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে সফলতার সঙ্গে। তবু কিছু ঘটনার ব্যাখ্যা এই মডেলের নাগালের বাইরে। যেমন অ্যান্টিম্যার প্রাকৃতিকভাবে দেখা যায় না কেন, ডার্ক ম্যাটারই বা কী, মহাকর্ষীয় বলই বা কেন অতিপারমাণবিক কণার জগতে কাজ করে না-এসবের ব্যাখ্যাও নেই স্ট্যান্ডার্ড মডেলে।
অন্যদিকে ব্যবহারিকভাবে দেখা যায়, ডব্লিউ বা জেড বোসনের সঙ্গে হিগস কণার ভরের তেমন পার্থক্য নেই। অথচ স্ট্যান্ডার্ড মডেল অনুসারে হিগস কণার ভর আরও ১০০০০ ট্রিলিয়ন গুণ বেশি হওয়ার কথা! এসব ঘটনার ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য স্ট্যান্ডার্ড মডেলের চেয়েও উন্নত তত্ত্ব প্রয়োজন। এলএইচবি, অ্যাটলাস এবং সিএমএইচ প্রজেক্টগুলো এই তত্ত্ব তৈরিতে কাজ করছে।
ফ্যাক্টসপ্রায় আলোর গতিতে ধাবমান উচ্চশক্তির প্রোটনের দুটি স্রোত সংঘর্ষে জড়ায় এলএইচবির কলয়ডারে। এতে তৈরি হয় বিভিন্ন ধরনের কণা, বিউটি হ্যাড্রন তেমনই একটা। তৈরি হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই যন্ত্রের মাঝে থাকা শক্তির প্রভাবে এই কণা আরও ছোট অংশে ভেঙে যায়। কখন যন্ত্রের কোন অংশে বিউটি হ্যাড্রন তৈরি হয়, তৈরি হওয়ার কত সময় পর কত দূরে গিয়ে তা ভাঙে এবং ভেঙে ঠিক কী কী কণায় পরিণত হয়—এলএইচবির উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে এই ব্যাপারগুলো পর্যবেক্ষণ করেন বিজ্ঞানীরা। প্রাপ্ত তথ্যের বিশ্লেষণ করে তাঁরা উপস্থিত কণাগুলো সম্পর্কে ধারণা পান।
২০১০ থেকে ২০১২-এ দুই বছরে এলএইচসিতে প্রায় এক ট্রিলিয়ন বিউটি হ্যাড্রন তৈরি হয়। এই কণা বিচিত্র উপায়ে ভাঙতে পারে। কিছু প্রক্রিয়া প্রচলিত নিয়মের চেয়ে আলাদাভাবে ঘটছে, যার সূত্র ধরে বিজ্ঞানীরা খোঁজ করছেন নতুন পদার্থবিদ্যার, স্ট্যান্ডার্ড মডেলের সাহায্যে যার ব্যাখ্যা দেওয়া যায় না। তাত্ত্বিক পদার্থবিদেরা এই নতুন পদার্থবিদ্যার ব্যাপারে কিছু ধারণা দিয়েছেন। বেশির ভাগ ধারণায় বলা হচ্ছে অনাবিষ্কৃত কিছু কণার উপস্থিতির কথা, যারা আবিষ্কৃত কণাগুলোর তুলনায় কিছুটা ভারী। লার্জ হ্যাড্রন কলয়ডার এই ভারী কণা খোঁজার সামর্থ্য রাখে, এমনকি কয়েক হাজার গিগা ইলেকট্রন ভোল্টের সমতুল্য ভরের সাহায্যে আবিষ্কার সম্ভব।
মজার ব্যাপার হলো প্রকৃতিতে এই সবগুলো কাল্পনিক কণারই প্রভাব আছে। কোয়ান্টাম মেকানিকস আমাদের বলে, একটা কণা ভাঙার ক্ষেত্রে সম্ভাব্য যত রকম ভাঙন প্রক্রিয়ার ডায়াগ্রাম আঁকা সম্ভব, তার সবগুলোই ঘটে। কণার ভাঙনের সময় প্রকৃতিতে তার একটা সামষ্টিক প্রভাবই আমরা দেখতে পাই।
অ্যাটলাস এবং সিএএমএইচ প্রজেক্ট সরাসরি এই ভারী কণা আবিষ্কারের চেষ্টা করে। অন্যদিকে এলএইচসিবি বোঝার চেষ্টা করে দেখতে পাওয়া কণাদের ওপর সেসব অদেখা ভারী কণাদের প্রভাব কেমন। অর্থাৎ সরাসরি দেখা না দিলেও এই ভারী কণা পর্দার পেছনে থেকে তার উপস্থিতি জানান দিয়ে যায় এলএইচবিতে। অদেখা এই কণাকে ভার্চ্যুয়াল বা কাল্পনিক কণা বলা হয়।
কণা কীভাবে কাল্পনিক হয়? ধরুন, আপনি নিজেই একটা খুদে কণা, আপনি চলে গেছেন কলয়ডারের ঠিক মাঝামাঝি। সেখানে দেখতে পেলেন, যুদ্ধে দুই দিক থেকে আসা দুই সৈন্যদলের মতো আপনার দুই দিক থেকে এগিয়ে আসছে দুই দল প্রোটনের স্রোত। কোনোমতে গা বাঁচিয়ে কলয়ডারের ধার ঘেঁষে বসলেন আপনি, প্রায় আলোর গতিতে এগিয়ে আসা এ দুই দল প্রোটনের সংঘর্ষে কী হয় তা দেখার জন্য। যেহেতু এটা যেনতেন কোনো সংঘর্ষ নয়, দুই দল প্রোটনের সংঘর্ষ, তাই এরা পদার্থবিজ্ঞানের সব নিয়ম মেনে চলবে। দেখা গেল, সংঘর্ষের পরপর প্রোটন ভেঙে বিভিন্ন কণা ও শক্তি তৈরি হয়।
আইনস্টাইন বলেছিলেন, ক্ষুদ্র এই কণাগুলোর বিক্রিয়ার সময় কিছু ভর শক্তিতে পরিণত হতে পারে, তাই এ পর্যন্ত সবকিছুই স্বাভাবিক। কিন্তু ঘটনার মাঝপথে আপনি দেখেছিলেন, তৈরি হওয়া শক্তি পরিবাহিত হচ্ছে ডব্লিউ মেসনের মাধ্যমে। পরে ডব্লিউ মেসন ভেঙে অন্য কণায় পরিণত হয়েছে। কী কণা সেটা একটু পরে আমরা জানছি। এখানে অবাক ব্যাপার হলো বি-মেসনের তুলনায় ডব্লিউ বোসনের আকার বেশ বড়, প্রায় ১৬ গুণ বড়। বিক্রিয়ার শুরুতে যে পরিমাণ শক্তি উপস্থিত ছিল, মাঝপথে এসে তার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে, এটা কি শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতির লঙ্ঘন নয়?
না। কোয়ান্টাম মেকানিকসের এক জটিল হিসাব আমাদের বলে, সম্পূর্ণ ঘটনা যদি অতি ক্ষুদ্র সময়ের ব্যবধানে ঘটে, তাহলে এ রকমটা ঘটতে পারে। এখানে ডব্লিউ বোসন হলো একটা কাল্পনিক কণা। সেটা ভাঙন প্রক্রিয়ার মাঝে খুব অল্প সময়ের জন্য আসে এবং পুরো প্রক্রিয়ায় তার প্রভাব রেখে যায়। কণার ভাঙনের এই প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা ধারণা পাই ফাইনম্যান ডায়াগ্রাম থেকে। আমেরিকান পদার্থবিদ রিচার্ড ফাইনম্যান কণার ভাঙনের এই মডেল দাঁড় করান। অবশ্য কলয়ডারের ডিটেক্টরে এই কাল্পনিক কণা সরাসরি ধরা পড়ে না। তবে পরীক্ষা থেকে তত্ত্ব ও তথ্যের হিসাবে কাল্পনিক কণার উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যায়।
মজার ব্যাপার হলো প্রকৃতিতে এই সবগুলো কাল্পনিক কণারই প্রভাব আছে। কোয়ান্টাম মেকানিকস আমাদের বলে, একটা কণা ভাঙার ক্ষেত্রে সম্ভাব্য যত রকম ভাঙন প্রক্রিয়ার ডায়াগ্রাম আঁকা সম্ভব, তার সবগুলোই ঘটে। কণার ভাঙনের সময় প্রকৃতিতে তার একটা সামষ্টিক প্রভাবই আমরা দেখতে পাই। অবশ্যই সবচেয়ে বেশি যে প্রক্রিয়া ঘটে, সম্পূূর্ণ ভাঙনে তার প্রভাব দেখা যায় সবচেয়ে বেশি।
নতুন এই ভারী কণাকে অনেক বিজ্ঞানী নতুন ধরনের চার্জযুক্ত হিগস কণা হিসেবে ধারণা করছেন। আবার অনেকে অনুমান করছেন লেপ্টোকোয়ার্ক নামের এক কণার। সেই কণাটা তৈরি লেপ্টন ও কোয়ার্ক যুক্ত হয়ে। ত’ (জেড প্রাইম) নামে আরেকটা কণারও ধারণা করা হচ্ছে। সেটা জেড বোসনের তুলনায় ভারী। এটা ভেঙে গিয়ে লেপ্টন ও কোয়ার্কে পরিণত হয়।
কোনো কণার ভাঙনের প্রক্রিয়া হিসাব করার ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সব পথই বিবেচনায় আনা হয়। কণার ভাঙনের এই প্রক্রিয়ায় বিজ্ঞানীরা শুধু স্ট্যান্ডার্ড মডেলের কণাগুলো দেখতে পেলেও আবিষ্কৃত ও অনাবিষ্কৃত সব কণারই প্রভাব এতে আছে। সুতরাং, স্ট্যান্ডার্ড মডেলের তাত্ত্বিক হিসাবের সঙ্গে পরীক্ষায় পাওয়া ফলাফলে গরমিল হলে বলা যায়, এখানে অদেখা ‘কিছু একটার’ প্রভাব আছে। এই নীতির ওপর ভিত্তি করেই এলএইচসিবি খোঁজ করে চলছে নতুন কণা ও নতুন পদার্থবিদ্যার।
মেসনের ভাঙনের কথাই ধরা যাক। এই প্রক্রিয়ায় যে ডব্লিউ বোসন তৈরি হয়, তা ভেঙে গিয়ে যেকোনো গ্রুপের লেপ্টনে পরিণত হতে পারে এবং লেপ্টনের সব গ্রুপের কণার জন্য এর সম্ভাব্যতা সমান। অর্থাৎ, ডব্লিউ মেসন ভেঙে টাউ ও টাউ-নিউট্রিনোতে পরিণত হওয়ার যতটুকু সম্ভাব্যতা আছে, মিউওন বা ইলেকট্রন গ্রুপে পরিণত হওয়ারও ঠিক ততটুকুই সম্ভাব্যতা আছে। একে লেপ্টনের সর্বজনীনতা নীতি বলে। কিন্তু এলএইচসিবির পরীক্ষাগারে দেখা যায়, ডব্লিউ মেসন ভেঙে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই টাউ কণায় পরিণত হচ্ছে। এটা লেপ্টনের সর্বজনীনতা নীতির স্পষ্ট ব্যতিক্রম। স্ট্যান্ডার্ড মডেলে এর কোনো ব্যাখ্যা নেই। তাত্ত্বিক পদার্থবিদেরা তাই বলছেন, ভাঙনের সময় আরও ভারী কোনো কণার উপস্থিতির কারণেই এই বিচ্যুতি ঘটছে, স্ট্যান্ডার্ড মডেলে যে কণার উল্লেখ নেই। অদেখা এই ভারী কণার খোঁজেই কাজ করে যাচ্ছেন বিউটি এক্সপেরিমেন্টের বিজ্ঞানীরা।
মেসনের ভাঙনের কথাই ধরা যাক। এই প্রক্রিয়ায় যে ডব্লিউ বোসন তৈরি হয়, তা ভেঙে গিয়ে যেকোনো গ্রুপের লেপ্টনে পরিণত হতে পারে এবং লেপ্টনের সব গ্রুপের কণার জন্য এর সম্ভাব্যতা সমান।
অবশ্য এখনই এই ভারী কণার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। এই গবেষণায় পাওয়া বিচ্যুতির মান দুই সিগমা। সিগমা এখানে অনিশ্চয়তার মাত্রা। হিসাবের গরমিলের জন্য কোনো গবেষণায় এক সিগমা পার্থক্য ধরা পড়তে পারে। অন্যদিকে নতুন কোনো আবিষ্কারের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য নির্ধারিত মানের চেয়ে প্রাপ্ত মানের বিচ্যুতি পাঁচ সিগমা হওয়া চাই। সে ক্ষেত্রে দুই সিগমার এই পার্থক্য নিয়ে খুব বেশি মাথাব্যথা হওয়ার কারণ ছিল না, যদি না অন্য গবেষণায়ও একই রকম ফল পাওয়া যেত।
বিউটি হ্যাড্রন নিয়ে করা জাপান ও আমেরিকার গবেষণাতেও একই ফল পাওয়া যায়। এমনকি এলএইচসিবিতেও আলাদা প্রক্রিয়ায় হিসাব করে একই ফল পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে এই পরীক্ষার পার্থক্য হয়েছে চার সিগমা, যা স্ট্যান্ডার্ড মডেলের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ।
নতুন এই ভারী কণাকে অনেক বিজ্ঞানী নতুন ধরনের চার্জযুক্ত হিগস কণা হিসেবে ধারণা করছেন। আবার অনেকে অনুমান করছেন লেপ্টোকোয়ার্ক নামের এক কণার। সেই কণাটা তৈরি লেপ্টন ও কোয়ার্ক যুক্ত হয়ে। ত’ (জেড প্রাইম) নামে আরেকটা কণারও ধারণা করা হচ্ছে। সেটা জেড বোসনের তুলনায় ভারী। এটা ভেঙে গিয়ে লেপ্টন ও কোয়ার্কে পরিণত হয়। আবার এমনটাও হতে পারে, পুরো ব্যাপারটা ভাঙন প্রক্রিয়ায় পাওয়া সংকেতগুলোর হিসাবের ভুল ব্যাখ্যার ফল। এসব প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য আরও নিখুঁত গবেষণা প্রয়োজন। আশার ব্যাপার হচ্ছে এই কণা এবং এদের ওপর কাজ করা শক্তি নিয়ে নতুন প্রযুক্তিতে তথ্য সংগ্রহ চলছে। এসব তথ্য-উপাত্ত আর তত্ত্ব আমাদের নতুন কোনো কণা, নতুন ধরনের পদার্থবিদ্যার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় কি না, তার উত্তর ভবিষ্যতে পাওয়া যাবে।