চোখের আলোয় দেখেছিলেম

আমি যে অন্ধ হয়ে যাচ্ছি, তা আমাকে বলেছিলেন আমার নিয়মিত চক্ষুচিকিৎসক। তিনি আমার দীর্ঘদিনের চোখের ডাক্তার।

‘আপনি খুব দ্রুত দৃষ্টি হারাচ্ছেন’, বলেছিলেন তিনি আড়াই বছর আগে। ‘আপনার রোগটার নাম রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা।’

তাঁর সাততলার চেম্বারে টোনোমিটার নামের একটা দুরবিনের মতো যন্ত্রের ভেতর দিয়ে আমার বিস্ফারিত চোখের দিকে তাকিয়ে তিনি বলেছিলেন কথাটা। তাঁর পাশে আমার চোখের বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফলের কাগজপত্র।

ওই দিনটার, ওই মুহূর্তটার কথা আমি কিছুতেই ভুলতে পারি না। সবকিছু আমার অনুপুঙ্খ মনে আছে। ডাক্তার কথাটা বলার সময় তাঁর চোয়ালের প্রতিটা পেশির নড়াচড়া, এমনকি তাঁর পেছনে জানালার অর্ধস্বচ্ছ পর্দার মধ্যে সাদা সুতায় এমব্রয়ডারি করা ফুলের নকশাগুলোও আমার মনে আছে, যেখানে প্রতি ছয়টা সাদা পাঁপড়ির মাঝখানে ছোট্ট একটুকরা হলুদ বৃত্ত, পুরো হলুদ নয়, কিছুটা কমলাটে, যেটাকে অনেকে স্কুলবাস কালার বলে। আমি কিছুই ভুলিনি। কারণ, ওই মুহূর্তে ওই সংবাদটুকু আমার মনে গভীর দাগ কেটেছিল।

এখন পেছন ফিরে তাকালে একটা অবাক ব্যাপার লক্ষ করি: ওই মুহূর্তের শুধু দৃশ্যগুলোই অক্ষয় হয়ে আছে, বাকি সবকিছু—শব্দ ও গন্ধ আমি ভুলে গেছি। মাথার ওপরে মৌমাছির ডানার মতো এসির গুঞ্জন, পায়ের ভর পরিবর্তনের কারণে চেয়ারের ধাতব অংশগুলোর মৃদু ক্যাঁচক্যাঁচ, দরজার তলা গলে ওপারের অপেক্ষাকক্ষে বসে থাকা কারও মাফলার-জড়ানো কাশি, সাততলার বন্ধ জানালার ওপারের কাচে এসে আছড়ে পড়া নিচের সড়কের যান্ত্রিক গমগম—কিছুই আমার মনে পড়ে না। মনে পড়ে না ডাক্তারের গা থেকে ছড়িয়ে পড়া অচেনা পারফিউমের গন্ধ।

‘এ রোগের কোনো চিকিৎসা নেই’, বলেছিলেন ডাক্তার প্রায় আবেগহীন ভঙ্গিতে, যেন কোনো আবহাওয়ার সংবাদ দিচ্ছেন। তারপর যোগ করেছিলেন, ‘এখন পর্যন্ত।’

‘কী হবে দৃষ্টি চলে গেলে?’ আমি মেটে গলায় জিজ্ঞেস করি।

‘আপনি অন্ধ হয়ে যাবেন টোটালি। কিছু দেখতে পাবেন না।’

‘কত দিনের মধ্যে?’

‘টোটাল ভিশন হারাতে বেশি দিন লাগবে না। দুই থেকে আড়াই বছর, ইয়েস, আড়াই সর্বোচ্চ।’

অবাক করা ব্যাপার হলো, অন্ধত্বের আশঙ্কা শুরুতে কারও মধ্যে বড় দুঃসংবাদ হিসেবে হাজির হয় না। কারণ, অন্ধ না হওয়া পর্যন্ত অন্ধত্ব একটা রোমান্টিক অনুমান হিসেবে কাজ করে, একটা অজানা পাহাড়ি ট্যুরিস্ট স্পটে পা রাখার মতো, অথবা বইয়ের দোকানে একটা চেনা বইয়ের পর্তুগিজ অনুবাদ হাতে নিয়ে নাড়াচাড়ার মতো, যার প্রচ্ছদ আর লেখকের নামটুকু ছাড়া বাকি সব দুর্বোধ্য। দৃষ্টিবানদের কাছে অন্ধ হওয়া যেন রাতের বেলা চোখের পাপড়ি বন্ধ করে রাখার মতো কিছু। অন্ধকার কিছু। সে কারণে আমি যে মনে করছি অন্ধ হয়ে যাওয়ার সংবাদ আমার মনে গভীর রেখাপাত করেছে, সেটা হয়তো পুরোপুরি ঠিক নয়। সম্ভবত ওই সংবাদের আতঙ্ক এবং বুকের মধ্যে চেপে বসা হিমশীতল তরবারির স্পর্শ আমি এখন পেছন ফিরে আরোপ করছি। তবে সন্দেহ নেই ওই মুহূর্তে চারপাশের জগতের দৃশ্যগুলো আমার কাছে বড় বাঙ্ময় হয়ে উঠেছিল। দৃশ্যের ক্যানভাসজুড়ে থাকা প্রতিটি রং, সেগুলোর একটার সঙ্গে আরেকটার মিশে যাওয়া আর একই রঙের অজস্র শেড আর প্রতিটি শেডের মধ্য থেকে ঠিকরে বেরিয়ে আসা আলোকচ্ছটা, যেন কথা বলছিল আমার সঙ্গে। আমি বুঝতেই পারিনি, অন্ধত্বের আশঙ্কা পুরো দৃশ্যজগতকে আমার সামনে এভাবে মেলে ধরবে।

আরও পড়ুন
১৭তম মাসে ডাক্তার আমাকে বললেন, আমার জগৎ থেকে নীল রং পুরোপুরি মুছে গেছে। আমি এখন যা-ই দেখছি, তা নীল রং বিয়োগ করে দেখছি

‘দুই না আড়াই?’ আমি শান্ত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করেছিলাম।

‘যে হারে আপনি ভিশন হারাচ্ছেন, তাতে আরও আগে ঘটতে পারে’, বললেন ডাক্তার। এবার তার কণ্ঠে বিষাদের একটা দূরবর্তী আভাস লক্ষ করলাম, যেন রোগীর দুর্ভাগ্যের প্রতি সহমর্মী হওয়ার পেশাগত দায়িত্ব তাঁকে কেউ মনে করিয়ে দিয়েছে।

এরপর তিনি টোনোমিটারটা নামিয়ে রাখলেন, রিপোর্টগুলো গুছিয়ে আমাকে ফেরত দিলেন, আর তাঁর চাকা লাগানো চেয়ারটা ঠেলে ডেস্কের আরও কাছে সরে গেলেন, যেন ডেস্কের কাছে যাওয়া নয়, আমার কাছ থেকে দূরত্ব রচনাই তাঁর উদ্দেশ্য, যেন এটুকু স্থানিক ব্যবধান সৃষ্টির মাধ্যমে তিনি নিজেকে বোঝাতে চাইছেন যে আমার এ পরিণতির সঙ্গে তাঁর কোনো কার্যকারণগত যোগ নেই।

আমি আমার রিপোর্টগুলোর দিকে এমন করে তাকালাম, যেন সেগুলোর সাংকেতিক বার্তা আমার কাছে উন্মোচিত হয়ে গেছে।

আমি তখন রোগটা সম্পর্কে স্বাভাবিক কৌতূহল প্রকাশ করলাম এবং তিনি একজন দায়িত্ববান সহমর্মী চিকিৎসকের মতো আমাকে বুঝিয়ে দিতে শুরু করলেন, রোগটা কতটা বংশগত এবং কীভাবে জেনেটিক ত্রুটি আমার রড আর কোন নামের দুই ধরনের ফটোরিসেপ্টর কোষগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ‘ফিল্ড অব ভিশন’ বা দৃশ্যজগতের পরিধি কমিয়ে আনছে।

২০ মিনিট ধরে বিষয়টি ব্যাখ্যা করলেন চিকিৎসক। চিকিৎসাবিদ্যার দুরূহ শব্দগুলো এড়িয়ে গেলেন তিনি। কিন্তু তাতে আমি আমার অন্ধজগতের প্রকৃতির কোনো আভাস পেলাম না।

কেমন হবে না-দেখার জগৎটা? দেখার অভিজ্ঞতার চেয়ে তা কতটা ভিন্ন?

প্রবল কৌতূহল সত্ত্বেও আমি এ প্রশ্ন তাঁকে করতে পারলাম না। কারণ, কাণ্ডজ্ঞানে আমি জানি, দেখার জগৎটুকু নিয়েই কেবল চক্ষুচিকিৎসকের কারবার। এর বাইরে কিছু বললে তাঁকে পেশাগত বিদ্যার চৌহদ্দি ডিঙিয়ে বলতে হবে। যা হবে অনুমান এবং এর কোনো বাড়তি মূল্য থাকবে না।

ডাক্তারকে বিদায় জানিয়ে, চেম্বার থেকে বেরিয়ে বিশেষায়িত এ হাসপাতালের বাইরে পা রেখে দেখি, বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামছে। সড়কজুড়ে যানজট। মোটরগাড়ির পেছনে মোটরগাড়ি, রিকশার পেছনে রিকশা এবং মোটরগাড়ির পেছনে রিকশা যেন আঠা দিয়ে লাগানো। ওপরে তাকিয়ে দেখি মেঘহীন পিঙ্গল আকাশে অনেক উঁচু দিয়ে কোনো বিমান চলে গেছে খানিক আগে, একটা চিকন সাদা মেঘের মতো রেখা আকাশ এফোঁড়–ওফোঁড় করে পড়ে আছে, যার লেজের অংশটা এখন কেঁপে কেঁপে ভাঙতে শুরু করেছে, যা থেকে অনুমান করা যায়, বিমানটা কোন দিক থেকে কোন দিকে গেছে।

আরও পড়ুন
আমি আমার রিপোর্টগুলোর দিকে এমন করে তাকালাম, যেন সেগুলোর সাংকেতিক বার্তা আমার কাছে উন্মোচিত হয়ে গেছে

আমার স্ত্রীকে সংবাদটা দিলাম। লক্ষ করলাম, তার চোখে নেমে আসা অবিশ্বাস আর বিষাদের ছায়ার বদলে আমার মনোযোগ ছুটে যাচ্ছে তার শাড়ির সুতার বুনন আর নকশার দিকে। রাতে খাবার টেবিলেও ঘোলাটে স্যুপের মধ্যে ডুবে থাকা গাজরের টুকরাগুলোর গোলাপি–হলুদ পৃষ্ঠ আমাকে ব্যস্ত রাখল। আমি ডাক্তারের চেম্বারে পর্দার মধ্যে সাদা সুতায় বোনা ছয় পাঁপড়ির মাঝখানের গোলাপি-হলুদ বৃত্তগুলোর কথা ভাবছিলাম, সেগুলোর সঙ্গে এখনকার গাজরের টুকরার পৃষ্ঠদেশের তুলনা করছিলাম। ভাবছিলাম দুই হলুদের মধ্যে গোলাপির পরিমাণ কোনটায় বেশি।

পরের মাসে আমাকে আবার যেতে হলো চিকিৎকের চেম্বারে। তিনি কয়েকটি যন্ত্রে আমার চোখ পরীক্ষা করলেন। বেশির ভাগ নিয়মিত যন্ত্রপাতি, চশমার পাওয়ার নির্ণয়ে যেগুলো ব্যবহার করা হয়। তার মধ্যে যেমন অটোরিফ্র্যাক্টর আছে, যার নলে চোখ রাখলে ভেসে ওঠে দিগন্তে মিশে যাওয়া একটা পিচঢালা সড়ক আর তার শেষ মাথায় আকাশে লটকে থাকা একটা লালরঙা প্রকাণ্ড হটএয়ার বেলুন; তেমনি আছে স্নেলেন আই চার্ট, যেখানে ২০ ফুট দূরে দেয়ালে টাঙানো পর্দায় বিভিন্ন আকৃতির ইংরেজি বর্ণের দিকে তাকিয়ে সেগুলো পড়তে হয়। সবচেয়ে বিদঘুটে যে যন্ত্রটি আমার মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে, চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিয়েছি, সেটির নাম ফোরোপ্টার। অনেকগুলো গোল লেন্সের সমন্বয়ে বানানো এ যন্ত্র আমার চোখে বসিয়ে দিলে আমাকে দেখতে শত শত যৌগিক চক্ষুবিশিষ্ট এক অতিকায় মাছির মতো লাগে।

এসব পরীক্ষা শেষে চিকিৎসক বললেন, ‘আমার চোখের দৃষ্টি একজন গড় স্বাভাবিক দৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তির অর্ধেকে নেমে এসেছে।’

‘তার মানে আমি জগৎটাকে অর্ধেক দেখছি?’ আমি জিজ্ঞেস করি।

ডাক্তার হাসেন। আমার মনে হয়, তিনি একটা কোনো কৌতুক স্মরণ করার চেষ্টা করছেন, যেটা বললে আমার প্রশ্নের তলায় লুকানো দীর্ঘশ্বাসের ভার কিছুটা আলগা হবে।

প্রতি মাসে একবার করে আমি চিকিৎসকের চেম্বারে যেতে থাকলাম এবং তিনি নানা রকম যন্ত্রে আমার চোখ ও দৃষ্টি, রেটিনা ও অক্ষিগোলক পরীক্ষা করে দেখতে থাকলেন। আর প্রতি মাসে তিনি অন্ধত্বের পথে আমার মহাযাত্রার একটি করে ‘অগ্রগতি’ ঘোষণা করতে থাকলেন। ১১তম মাসে তিনি ঘোষণা করলেন, আমার ফিল্ড অব ভিশন এত কমে গেছে যে আমি আসলে স্নেলেন আই চার্টের দ্বিতীয় লাইনের অক্ষরগুলোকে এখন ঘোলা দেখছি এবং সেই সূত্রে আমার চারপাশের জগৎ তার নিরেট চেহারা হারাতে শুরু করেছে। আমি ভাবার চেষ্টা করলাম, দিনের বেলা একটা বাদুড় হয়তো জগৎকে এভাবেই দেখে।

১৭তম মাসে ডাক্তার আমাকে বললেন, আমার জগৎ থেকে নীল রং পুরোপুরি মুছে গেছে। আমি এখন যা-ই দেখছি, তা নীল রং বিয়োগ করে দেখছি এবং আমি কোনো ম্যাজেন্টা রং দেখছি না।

২১তম মাসে তিনি ঘোষণা করলেন, আমার দৃষ্টিশক্তি আর ১১ শতাংশ অবশিষ্ট আছে।

আরও পড়ুন

২৩তম মাসে, অর্থাৎ প্রথম যেদিন দুঃসংবাদটা ঘোষণা করা হয়েছিল, তার একশ সপ্তাহ পর, তিনি চূড়ান্ত ঘোষণাটি দিলেন। বললেন, আজ আমার ফিল্ড অব ভিশন শূন্যের কোঠায় এসে ঠেকেছে। আমার দৃষ্টিশক্তির কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। আজ এ মুহূর্ত থেকে আমি পুরোপুরি অন্ধ। ডাক্তাররা যেভাবে রোগীর কবজি হাতে নিয়ে পালস দেখে, তারপর সেটা নামিয়ে রেখে মৃত্যুসংবাদ দেয়, ঠিক সেভাবে ফোরোপ্টার যন্ত্রের নলটা একদিকে সরিয়ে দিয়ে তিনি আমার চোখের মৃত্যুসংবাদ ঘোষণা করলেন, যেন চোখের মৃত্যুর কোনো সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ থাকে।

আমি চোখ মেলে তাঁর দিকে তাকালাম।

‘আমি আর কিছুই দেখতে পাচ্ছি না?’

‘আপনি এখন থেকে আর কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না। আমাকে না। ওই দেয়ালটা না। জানালার পর্দাগুলোও না।’

চিকিৎসকেরা সাধারণত এভাবে বলেন না। তাঁরা চিকিৎসাশাস্ত্রীয় নানা রকম জারগনের আড়াল নিয়ে কথা বলেন। আমার চিকিৎসক সেই আড়াল নিলেন না। দীর্ঘদিন ধরে আমার চোখের অন্তিম যাত্রার সঙ্গী হওয়ার কারণে হয়তো তিনি একরকম নৈব্যক্তিক পর্যবেক্ষকের ভঙ্গি অর্জন করেছেন।

বিকেল গড়িয়ে যাচ্ছে। পশ্চিম আকাশে মেঘ জমে থাকার কারণে চরাচরে একটা হলুদ আলো ছড়িয়ে পড়েছে। আজও রাস্তায় জট। আঠার মতো একটা গাড়ি লেগে আছে তার পেছনের গাড়িটার গায়ে।

আমি চেয়ার ছেড়ে উঠলে তিনি আমার দিকে একটি কালো চশমা এগিয়ে দিলেন। আমি বুঝলাম না, সেটা কী কাজে লাগবে। তিনি জানতে চাইলেন, আমার সঙ্গে আর কেউ এসেছে কি না। আমি জানালাম, কেউ আসেনি এবং আমার একা যেতে কোনো সমস্যা হবে না। আমি দরজার দিকে এগিয়ে যেতে তিনি আমাকে আবার ডাকলেন। উঠে এসে আমার সঙ্গে হাত মেলালেন। তাঁর হাতের উষ্ণতা আমি টের পেলাম। এবার তিনি আমার হাতে একটা সাদা রঙের ছড়ি ধরিয়ে দিলেন। বুঝলাম, আমার বিদায় মুহূর্তের কিছু প্রস্তুতি তিনি নিয়ে রেখেছেন।

নিচে নেমে আমি কালো চশমাটা খুলে ফেললাম। সাদা ছড়ি দেয়ালের গায়ে ঠেস দিয়ে দাঁড় করিয়ে রেখে পা বাড়ালাম সদর রাস্তার দিকে।

বিকেল গড়িয়ে যাচ্ছে। পশ্চিম আকাশে মেঘ জমে থাকার কারণে চরাচরে একটা হলুদ আলো ছড়িয়ে পড়েছে। আজও রাস্তায় জট। আঠার মতো একটা গাড়ি লেগে আছে তার পেছনের গাড়িটার গায়ে। কিছুই নড়ছে না।

আমি আকাশের দিকে তাকালাম।

নীলচে পিঙ্গল আকাশে আজ কয়েকটা চিল উড়ছে। খুব অলস ভঙ্গিতে একটা বৃত্ত রচনা করে ঘুরছে তারা। তাদের অনেক ওপর দিয়ে নিঃশব্দে উড়ে যাচ্ছে একটা প্লেন। সেটার গায়ে মাঝেমধ্যে বিকেলের রোদ ঝিলিক দিয়ে উঠছে।

আমি হেঁটে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। আমার হাঁটার ভঙ্গিতে কোনো অনিশ্চয়তা নেই।

*লেখাটি ২০২৪ সালে বিজ্ঞানচিন্তার ফেব্রুয়ারি সংখ্যায় প্রকাশিত