বড় গুণের সহজ কৌশল আগে শিখিয়েছি। তখন, ১০০-এর চেয়ে ছোট সংখ্যাগুলো গুণ করেছি। রেফারেন্স নাম্বার ১০০ থেকে বিয়োগ করে শিখেছিলাম গুণ। আজ শিখবো ১০০-এর চেয়ে বড় সংখ্যার গুণ। যেহেতু ১০০-এর চেয়ে বড় সংখ্যা, তাই আজকে যোগ করে গুণ করবো।
১১৩-এর সঙ্গে গুণ করবো ১০২।
আমাদের রেফারেন্স নাম্বার ১০০। গুণ করতে হবে ১১৩ ও ১০২। ১১৩ সংখ্যাটি ১০০-এর চেয়ে ১৩ বেশি। সুতরাং, প্রথম বৃত্তে লিখব ১৩। পরের বৃত্তে তাহলে নিশ্চই ২ বসবে। এবার, আগের নিয়মের মতোই কোনাকুনি যোগ করতে হবে। যেহেতু ১১৩-এর সঙ্গে ২ যোগ করা সহজ তাই ১১৩+২= ১১৫ লিখলাম। ১০২-এর সঙ্গে ১৩ যোগ করার চেয়ে এটা সহজ। যাইহোক, যোগফল ১১৫ সমান চিহ্নের ডানপাশে লিখলাম। এখন ১১৫-এর পাশে দুটি শূন্য বসিয়ে দেব। কারণ, আমাদের রেফারেন্স নাম্বার ১০০। যেহেতু ১০০ লিখতে দুটি শূন্য দরকার তাই দুটি শূন্য ১১৫-এর পাশে বসবে।
এবার বাকি একটা কাজ। বৃত্তের সংখ্যাদুটি গুণ করতে হবে। অর্থাৎ, ১৩ ও ২ গুণ করলে হবে ২৬। এই ২৬ যোগ করে দিব ১১৫০০-এর সঙ্গে। তাহলে উত্তর পেয়ে গেলাম ১১ হাজার ৫২৬।
আশাকরি, ১০০-এর চেয়ে গুণগুলো তোমরা এখন নিজেরা করতে পারবে। প্রয়োজনে আরও একবার ওপরের গুণটা করো। তারপর নিজেরা একটা বড় গুণ করে দেখ।
এবার চলো, খাতা কলম ছাড়া মাথায় মধ্যেই একটা গুণ করি। আগেই বলেছি, থিয়া ইদানিং অনেক গুণ করে। ফলে ও এখন খাতা কলম ছাড়াই মাথার মধ্যে অঙ্ক নিয়ে চিন্তা করতে পারে। তোমাদেরও এটা শেখা উচিৎ। এখন ১৬-এর সঙ্গে ১৬ গুণটা আমরা মনে মনে করবো।
প্রথমেই দেখতে হবে ১৬ সংখ্যাটি ১০-এর চেয়ে ৬ বড়। তার মানে, দুইটি বৃত্তেই ৬ বসবে। তাহলে কোনাকুনি গুণের জন্য ১৬-এর সঙ্গে যোগ করতে হবে ৬। ১৬+৬= ২২। এখানে রেফারেন্স নাম্বার ১০। তাহলে, ২২-এর পরে একটা শূন্য বসবে। অর্থাৎ, ২২০। এবার বৃত্তের ভেতরে থাকা দুটি ৬ গুণ করলে হবে ৩৬। মানে ২২০ এর সঙ্গে এই ৩৬ যোগ করলেই মিলবে উত্তর।
এগুলো নিজেরা চর্চা করলে কিছুদিন পরে বড় গুণগুলোও চট করে বলে দিতে পারবে।
তুমি কি মাথার মধ্যে ১৬+৬…২২….২২০…৩৬…২৫৬ দেখতে পাচ্ছো। যত বেশি চর্চা করবে এটা মাথার মধ্যে তত দ্রুত চলে আসবে। কল্পনা শক্তি বাড়বে। একসঙ্গে অনেক শব্দ মনে রাখতে পারবে।
এ যোগটাও করতে পারো কৌশলে। ২২০-এর সঙ্গে প্রথমে যোগ করো ৩০। তাহলে পাবে ২৫০। এবার বাকি ৬ যোগ করে দাও ২৫০-এর সঙ্গে। অর্থাৎ, ২৫৬।
চর্চা করতে করতে তুমিও থিয়ার মতো দ্রুত উত্তর দিতে পারো কিন্তু। যেমন, গতকাল থিয়াকে বলেছিলাম, ৭ ও ৮ গুণ করলে কত হবে? থিয়া একটু চিন্তা করলো। তারপর কয়েক সেকেন্ড পরেই বলে দিল ৫৬। ও কিন্তু নামতা মুখস্ত করেনি। হিসাব করেই বলেছে। কী হিসাব?
৭ মানে ১০ থেকে ৩ কম। আর ৮ মানে ২ কম। এবার কোনাকুনি ৭ থেকে ২ বিয়োগ করলে ৫ হবে। আর ৩ ও ২ এর গুণফল ৬। মানে উত্তর ৫৬।
৬ ও ৭ গুণ করতে বললে তোমার মাথায় কি দেখতে পাচ্ছো? নিচে বৃত্তে ৪ ও ৩ নিশ্চই। এখন ৬ থেকে ৩ বিয়োগ করলে হবে ৩। রেফারেন্স নাম্বার ১০ অর্থাৎ, সমানচিহ্নে ডানপাশে হবে ৩০। ৩ ও ৪ গুণ করলে হবে ১২। ব্যস, ৩০ ও ১২ যোগ করলে ৪২।
এভাবে নিজেরা চর্চা করতে থাকো। তাহলে কিছুদিন পরে বড় গুণগুলোও এভাবে চট করে বলে দিতে পারবে। আজ এখানেই থাক। পরের পর্বে নতুন কিছু শেখাব।
লেখক: সম্পাদনা দলের সদস্য, বিজ্ঞানচিন্তা
সূত্র: স্পিড ম্যাথ অবলম্বনে
দ্বিতীয় পর্ব: গুণের আরও সহজ কৌশল
চতুর্থ পর্ব: বড় গুণের আরও সহজ কৌশল