বিজ্ঞানচিন্তায় প্রকাশিত বিজ্ঞানী রেজাউর রহমানের কিছু লেখা

নিজের গবেষণার কথা বলছেন রেজাউর রহমান

বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও লেখক রেজাউর রহমান গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর বেসরকারি একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। তিনি বিজ্ঞানে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ২০২৪- পেয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে ৩৫ বছর গবেষণা করেছেন। কীটতত্ত্বে পিএইচডি করেছেন চেক একাডেমি অব সায়েন্সেস থেকে। একসময় খণ্ডকালীন অধ্যাপক হিসেবে পড়িয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। লিখেছেন বিজ্ঞানবিষয়ক পাঠ্যবইসহ বেশ কিছু জনপ্রিয় ধারার বই।

পিঁপড়া–সমাজ

কখনো কখনো মৃতপ্রায় পিঁপড়া কলোনির বাকি পিঁপড়াদের কাছ থেকে জীবনরক্ষাকারী উপাদান গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়! কেন, জানেন? কলোনির সম্পদ যাতে অপচয় না হয়!
ছবি: পেক্সেলস

মানুষ ছাড়াও অনেক মেরুদণ্ডী প্রাণীর মধ্যে সুশৃঙ্খল আচরণ, বিশেষ করে সামাজিক দায়িত্ব লক্ষ করা যায়। এটা এরা এদের আবাসস্থল, বিশেষ করে বনে-জঙ্গলে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার প্রয়োজনেই করে। এটা প্রাণিজগতে একটি উন্নততর আচরণ হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু পিঁপড়া কি সেই অর্থে উন্নত জীবের আওতায় পড়ে?

জীবজ দ্যুতি

জীবজগতে জীবজ দ্যুতি বা আলোর বিচ্ছুরণ শক্তির যেই অভিজ্ঞতা আমাদের আছে, তা প্রধানত জোনাকি পোকাকে কেন্দ্র করে। ছোটবেলা থেকে আমরা তা দেখে এসেছি গ্রামগঞ্জের বনজঙ্গলে। সেই দেখা এতই সহজাত ছিল যে আমরা তা বরাবর দেখেছি গঞ্জগ্রামের বাড়িঘরের আশপাশেও। এমনকি তা দেখা গেছে অতীতের ছোট আকারের এই ঢাকা শহরেও।

সাপ নিয়ে যত সংস্কার-কুসংস্কার

সাপ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অতিপরিচিত একটি প্রাণীর নাম। অথচ তা আমাদের জন্য মোটেও সুখের নয়; বরং ‘সাপ’ শব্দটি শোনার সঙ্গে আমাদের মনে ভয়ের এক আবহ তৈরি হয়। সাপকে আমরা ভয়ের কিংবা বিশ্বাসঘাতক চরিত্রের এক প্রাণী হিসেবে জেনে এসেছি।

তেলাপোকা পরিচিতি

তেলাপোকা
ছবি: ফ্রিপিক

তেলাপোকাকে আরশোলাও বলা হয়। এদের কয়েকটি আঞ্চলিক নামও রয়েছে। যেমন ‘তেলাচোরা’ বা তেলচোট্টা। এগুলো বিশেষ করে পুরান ঢাকায় প্রচলিত। এমন নাম দেওয়ার পেছনে ‘চোরা-চোট্টা’ কথাগুলোর সাধারণ অর্থ দাঁড়ায় ‘চুরি করা’। এখানে এমন ভাবা যেতে পারে যে, এই পতঙ্গগুলো যেন এইমাত্র কোনো তেলের পাত্র থেকে ডুব দিয়ে এসেছে। কারণ, এদের দেহ সব সময়ই তেলতেলে, চকচকে।

কীটপতঙ্গের রূপান্তর

সংগৃহীত

আমাদের চারপাশের জীবজগতের সাধারণ সদস্য ও এদের জীবনবৃত্তান্ত যদি লক্ষ করা যায়, তাহলে দেখা যাবে যে এদের জন্মগত শিশু-অবস্থা সাধারণত একই রকমের হয়ে থাকে। যেমন মানুষের শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর এটা যে মানবশিশু তা বলে দিতে হয় না। কেননা এদের চেহারা-আঙ্গিক মা-বাবার মতোই। হাতির বাচ্চার বা জিরাফ, হরিণের বেলায়ও তাই দেখা যায়।

প্রকৃতির বিচিত্র আচরণধারা

প্রকৃতির সব উপাদান বা উপকরণ বিশেষ করে জীবজগৎ এক নিজস্ব বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত নিয়মকানুন মেনে এগিয়ে যায়। তা সৃষ্টির আদিলগ্ন থেকে। এ ক্ষেত্রে আমরা জীবজগতের অন্য সব সদস্য বাদ দিয়ে যদি কেবল আমাদের দিকে দৃষ্টিপাত করি, তাহলে অনেক সময় এর ব্যতিক্রমও লক্ষ করি। যেমন আমাদের এক হাতের আঙুল পাঁচটি। সে ক্ষেত্রে ছয়টি আঙুল দেখার অভিজ্ঞতা আমাদের অনেকেরই আছে।

জীবের শীতশয়ন

হাইবারনেট বা হাইবারনেশন (Hibernation)-এর আভিধানিক অর্থ সহজভাবে নিলে তা ‘নিষ্ক্রিয়’ বা ‘বিচেতন’ অবস্থাকে ধরে নেওয়া যায়। তবে বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে ততটা সহজভাবে গ্রহণ করা যায় না। কেননা, হাইবারনেশন শব্দটি বিশেষ কতগুলো মেরুদণ্ডী ও অমেরুদণ্ডী প্রাণীগোষ্ঠীর সাময়িক সুপ্ত ও অসাড় অবস্থাকে বোঝায়, যাকে আমরা ‘শীতনিদ্রা’ বা শীতশয়ন বলে থাকি।

বিজ্ঞান অভিযাত্রা ১৯৬৫

দণ্ডায়মান (বাঁ থেকে): এ কে কাজী জাকের হোসাইন (দলনেতা), প্রফেসর সালার খান (উদ্ভিদবিদ), লেখক (ছাত্র সদস্য), আবদুল (সহকারী), জিংলিয়ান (শিকারি) এবং বসা: ১২ জন উপজাতীয় কুলি
ছবি: লেখক

অভিযাত্রা শব্দটির সহজ অর্থ দাঁড়ায় ‘যাত্রা’। অভিযান অর্থেও তা অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহূত হয়। তবে এর সঙ্গে ‘বিজ্ঞান’ কথাটা যোগ হলে তা তেমন আর সহজ থাকে না। জটিলই হয়ে দাঁড়ায়। এখন অভিযাত্রা শব্দটা হয়ে দাঁড়ায় খানিকটা জটিল, যা দুঃসাহসিক যাত্রা বলে আখ্যায়িত করা যেতে পারে। এখানে দুর্গম, দুঃসাহসিক কথাগুলো সহজে এসে যায়, কেননা বিজ্ঞান অনুসন্ধান, সত্য খোঁজা, প্রকৃতির অজানাকে জানার পথগুলো যে সহজে পাওয়া যায় না। তা বিপত্সংকুল বা ঝুঁকিপূর্ণ তো হওয়ারই কথা।

বিজ্ঞান অভিযাত্রা ১৯৬৫- ২য় পর্ব

সংগৃহীত

মৃত পাখিটিকে সযতনে বুকের দিক কাঁচি দিয়ে কেটে পাখা ও পায়ের বাইরের অংশটুকু বাদ দিয়ে পুরো মাংসল অংশটুকু বের করে আনতে হয়। এখানে পাখির চামড়ায় লেগে থাকা মাংস ও রক্তে যাতে সংক্রমণ না হয়, এর জন্য সায়ানাইড যৌগ ও আটা মাখিয়ে ভেতরের মাপমতো লোহার তারে তুলা পেঁচিয়ে জায়গাটা ভরে দিতে হয়। মোটামুটি জীবন্ত পাখিটির আকার-আকৃতির কাছাকাছি হলে সুই-সুতায় তা সেলাই করে ফেলতে হয়।