মে মাসে বিজ্ঞানচিন্তায় সর্বোচ্চ পঠিত ১০টি লেখা লিংকসহ আছে এখানে। একনজরে সেগুলো দেখে নিন।
কিছু প্রশ্ন আছে, যেগুলো একদম সোজা, কিন্তু উত্তর দিতে গিয়ে বড় বড় বিশেষজ্ঞরাও হিমশিম খেয়ে যান। অথচ এই প্রশ্ন মাথায় এলে, ভাবলে হয়তো আহামরি কঠিন মনে হয় না। তেমনই এক প্রশ্ন করা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বিংহামটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার গাই জার্মানকে। দ্য কনভার্সেশন-এর ‘কিউরিয়াস কিডস’ সিরিজের এক পাঠক প্রশ্নটা করেছিলেন। প্রশ্নটা হলো, পানিতে হাত ভিজিয়ে রাখলে কুঁচকে যায় কেন?
যুগে যুগে মানুষ স্বপ্ন দেখেছে পরশ পাথর তৈরি করতে। লোহা বা সীসাকে স্বর্ণে রূপ দিতে চেষ্টা করেছেন অনেক বিজ্ঞানীরাও। প্রাচীন এবং মধ্যযুগের আলকেমিস্টরা সেই স্বপ্নে বিভোর ছিলেন। আধুনিক যুগের কয়েকজন বিজ্ঞানীও চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। আইজ্যাক নিউটন তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর জীবনের অনেকটা বছর কাটিয়েছেন শুধু পরশ পাথরের খোঁজে। তবে সাধারণ দৃষ্টিতে এটা অবাস্তব বলেই মনে হতে পারে। কারণ সীসা আর স্বর্ণ—দুটোই আলাদা মৌলিক পদার্থ। শুধু রাসায়নিক বিক্রিয়া দিয়ে একটাকে আরেকটায় রূপান্তর করা যায় না।
শৈশবে আমরা গণিত বলতে শুধু সংখ্যা বুঝি। যখন একটু একটু করে কথা বলতে শিখি, তখন থেকেই আমাদের শেখানো হয় ১, ২, ৩…। তারপর আরেকটু বড় হলে শিখি যোগ-বিয়োগ। ধীরে ধীরে গুণ, ভাগ, ভগ্নাংশ, দশমিক আর ঋণাত্মক সংখ্যাও শিখতে থাকি। তারপর প্রাথমিক স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিকে এলেই সংখ্যার সঙ্গে অক্ষরও থাকে। x, y, z, a, b, c, n সবচেয়ে পরিচিত অক্ষর। এগুলো গণিতে কেন ব্যবহার করা হয়? বুঝতেই পারছ, আমরা গণিতের অ্যালজেব্রা বা বীজগণিতের কথা বলছি। বীজগণিতে অঙ্কগুলোকে বলে সমীকরণ। আর সমীকরণ সমাধান করতে গেলে x, y, z ধরে করতে হয়। এই সমীকরণে যে অজানা সংখ্যা থাকে, সেটাই বের করতে হয় এই অক্ষরগুলোর সাহায্যে। এই অক্ষরগুলোর একটা বিশেষ নামও আছে—চলক।
ঘটনার শুরু হয়েছিল একটা ছোট্ট টুইট থেকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছিল, পিডিএফ ফাইলের সর্বোচ্চ আকার নাকি ৩৮১ বর্গকিলোমিটার। এই আকার প্রায় জার্মানির অর্ধেকর সমান বা আইওয়া অঙ্গরাজ্যের সমান (যদিও জার্মানির আয়তন এর চেয়ে অনেক বেশি, প্রায় ৩ লাখ ৫৭ হাজার বর্গকিলোমিটার)। বহু বছর ধরে এই অদ্ভুত তথ্যটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছিল। কিন্তু একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করলেন সফটওয়্যার ডেভেলপার অ্যালেক্স চ্যান। তিনি ব্যাপারটা পরীক্ষা করে দেখার সিদ্ধান্ত নিলেন। আর চ্যানের সেই সামান্য কৌতূহলই শেষ পর্যন্ত রূপ নিল এক অবিশ্বাস্য আবিষ্কারে। তিনি তৈরি করে ফেললেন এমন এক পিডিএফ ফাইল, যা পুরো দৃশ্যমান মহাবিশ্বের চেয়েও বড়! সে গল্পটাই বলছি।
গত চার বছর ধরে মঙ্গল গ্রহে ঘুরে বেড়াচ্ছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার রোভার পারসিভিয়ারেন্স। রোভারটি আছে গ্রহটির জেজেরো ক্রেটারে। একসময় এই জায়গায় বিশাল এক হ্রদ ছিল। তাই বিজ্ঞানীদের দাবি, ওখানে থাকতে পারে প্রাণও। এ ধারণার সত্যতা যাচাই করতে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মঙ্গলের বুকে অবতরণ করে পারসিভিয়ারেন্স। এরপর থেকে রোভারটি বহু জায়গা ঘুরে ঘুরে মাটি আর পাথরের নমুনা সংগ্রহ করেছে। সেই নমুনা এখন সিল করে রাখা হয়েছে কিছু ধাতব টিউবে।
গণিতের জগতে অনেক সমস্যার সমাধান পাওয়া গেলেও কিছু কিছু প্রশ্ন আজও অমীমাংসিত রয়ে গেছে। গণিতবিদেরা এগুলো নিয়ে বারবার ভাবেন এবং নতুন নতুন উপায় খুঁজে সমাধান করার চেষ্টা করেন। সে রকম একটা সমস্যা নিয়েই আজকের আলোচনা।
মোবাইল ফোন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। কল করা, মেসেজ পাঠানো, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ছবি তোলা, গেম খেলাসহ আরও কত কাজ যে করা হয় মোবাইল দিয়ে, এর কোনো হিসাব নেই। সকাল থেকে শুরু করে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত পুরোটা সময় একটা মোবাইল ফোন সচল থাকতে পারে এর ব্যাটারির জন্য। যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন, হয়তো খেয়াল করেছেন, কখনো কখনো ফোনের পেছনের অংশটা অস্বাভাবিক উঁচু হয়ে ওঠে। মনে হয় ব্যাটারিটা যেন এর জায়গা ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে। কেন এমন হয়? উত্তর: মোবাইলের ব্যাটারি ফুলে উঠলে।
মহাকর্ষ এমন এক শক্তি, যা আমাদের মাটির দিকে টেনে ধরে রাখে। আমাদের হাঁটা-চলা, বসে থাকা, এমনকি দাঁড়িয়ে থাকার পেছনেও এই বলের অবদান আছে। ধরুন, আপনি একটা ফুটবলকে ওপরের দিকে কিক মারলেন। বলটা ওপরে গিয়ে কিন্তু আবার আপনার কাছেই, মানে মাটিতে ফিরে আসবে। বলটা আপনার টানে যে পৃথিবীতে ফিরে আসে, তা তো নয়! আসলে ওই বল ফিরে আসার কারণও সেই মহাকর্ষ বল। এই বল সব কিছুকে বস্তুর কেন্দ্রের দিকে টানে। আর বস্তুর ভরের ওপর নির্ভর করে মহাকর্ষ কত শক্তিশালী হবে।
আমরা একটা গ্রহে বাস করি। পৃথিবী। আমাদের কাছে একে সবুজ-শ্যামল গ্রহ মনে হলেও মহাকাশ থেকে একে নীল দেখায়। সৌরজগতের আরও সাতটি গ্রহের মধ্যে এটি একটি। বৃহস্পতি বা শনি গ্রহের সঙ্গে তুলনা করলে মাঝারি আকারের গ্রহ পৃথিবী। গ্রহটি সূর্য নামের একটি নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। মহাবিশ্বের কোটি কোটি নক্ষত্রের মধ্যে সাধারণ একটি নক্ষত্র হলো এই সূর্য। এমন ছোট-বড় আরও অনেক নক্ষত্র নিয়ে গড়ে উঠেছে আমাদের মিল্কিওয়ে নামের গ্যালাক্সি। মহাবিশ্বের আরও কোটি কোটি ছায়াপথের মধ্যে একটি এই মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি। প্রসারণশীল মহাবিশ্বের ভেতর ছড়িয়ে আছে আমাদের এই ছায়াপথ। আরেকভাবেও বিষয়টি দেখা যায়, আমরা বলের মতো গোলাকার বিশালাকার একটা বস্তুর ওপর বসবাস করি।
আমাদের মস্তিষ্ক অত্যন্ত জটিল এবং শক্তিশালী। মস্তিষ্কে থাকে প্রায় ৮ হাজার ৬০০ কোটি নিউরন। প্রায় ২৫ বছর বয়স হতে হতে এসব নিউরন পুরোপুরি গঠিত হয়। এগুলো সেকেন্ডে ২০ থেকে ২৫ ওয়াটের মতো বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারে। এই পরিমাণ বিদ্যুৎ দিয়ে একটা বাতি জ্বালানো যায়। অর্থাৎ আমাদের মস্তিষ্ক এত শক্তিশালী ও কর্মক্ষম (এফিশিয়েন্ট) যে এই অল্প পরিমাণ এনার্জি বা শক্তি ব্যবহার করেই এটি সবধরনের কাজ করতে পারে।