দ্য ম্যান হু নিউ ইনফিনিটি – ৮

মাদ্রাজের সামান্য কেরানি থেকে কেমব্রিজের ফেলো—শ্রীনিবাস রামানুজনের জীবন যেন এক রূপকথা। দেবী নামাগিরি নাকি স্বপ্নে এসে তাঁকে জটিল সব সূত্র বলে যেতেন! কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি ছাড়াই যিনি অসীমকে জয় করেছিলেন। তাঁর এই নাটকীয় জীবন নিয়েই রবার্ট কানিগেল লিখেছেন দ্য ম্যান হু নিউ ইনফিনিটি। রামানুজনের সেই জীবনী ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ করছেন কাজী আকাশ।

অধ্যায় এক

মন্দিরের স্নিগ্ধ ছায়ায়

পুরো দক্ষিণ ভারত জুড়ে প্রতিটি ছোট গ্রামে মারিয়াম্মা বা আইয়েনার, সেলিয়াম্মা বা আঙ্গালাম্মার মতো দেবদেবীর ছোট ছোট মন্দির ছিল। এই সব লৌকিক দেবতার উৎপত্তি কৃষি সমাজের একদম শুরুর দিকে। গ্রামবাসীরা বিশ্বাস করত বসন্ত, কলেরা বা গবাদিপশুর মড়কের মতো বিপদ থেকে বাঁচতে এদের খুশি করা দরকার। এদের বেশিরভাগই ছিল দেবী। কেউ কেউ ছিল খুন হওয়া বা সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যাওয়া নারীর বিদেহী আত্মা।

১৯০৪ সালে কিছু ছেলে দাবি করল, তারা একটা উইপোকার ঢিবি থেকে তূরীর শব্দ শুনেছে। ব্যস, কিছুদিনের মধ্যেই সেই উইপোকার ঢিবির দেবতার টানে হাজার হাজার গ্রামবাসী সেখানে ভিড় জমাল এবং মাটিতে লুটিয়ে মগ্ন ভঙ্গিতে পূজা করতে শুরু করল।

এদের বলা হতো গ্রাম দেবতা। কলেজে পড়ানো প্রথাগত ব্রাহ্মণ্যবাদের সঙ্গে এদের কোনো সম্পর্ক ছিল না। গ্রামের মানুষ হয়তো বিষ্ণু বা শিবের নাম মুখে নিত, কিন্তু মহামারি বা দুর্ভিক্ষের সময় তারা ঠিকই তাদের সেই ছোট ইটের তৈরি মন্দির বা পাথরের স্তূপের কাছেই ফিরে যেত। তারা মনে করত, এখানেই তাদের গ্রামের আসল রক্ষাকর্তা আছেন।

অনেকে একে বলত নিছক মূর্তিপূজা বা আদিম সর্বপ্রাণবাদ। হিন্দুধর্মের সমালোচকেরা বলতেন, এই দ্রাবিড়ীয় দেবতাদের যদি হিন্দুধর্মের অংশ ধরা হয়, তবে হিন্দুধর্ম আসলে আদিম পূজাই।

কিন্তু কুম্বকোনম, যেখানে রামানুজন বড় হচ্ছিলেন, সেখানকার হিন্দুধর্ম ছিল এসব থেকে আলাদা। তাঞ্জোর জেলায় এক ইংরেজ পর্যবেক্ষক বলেছিলেন, ‘এখানে ব্রাহ্মণ্য হিন্দুধর্ম এক জীবন্ত বাস্তবতা, কোনো অবহেলিত প্রথা নয়। অন্য জেলার মতো এখানে আদিম ভূত-প্রেত বা লৌকিক দেবতাদের কাছে ব্রাহ্মণ্যবাদ কোণঠাসা হয়ে পড়েনি।’

১৯০৪ সালে কিছু ছেলে দাবি করল, তারা একটা উইপোকার ঢিবি থেকে তূরীর শব্দ শুনেছে। ব্যস, কিছুদিনের মধ্যেই সেই উইপোকার ঢিবির দেবতার টানে হাজার হাজার গ্রামবাসী সেখানে ভিড় জমাল।

দক্ষিণের বিশাল মন্দিরগুলোই এই পার্থক্যটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিত। কুম্বকোনম, কাঞ্চিপুরম, তাঞ্জোর, মাদুরাই এবং রামেশ্বরমের মন্দিরগুলো ছিল উত্তরের বিখ্যাত মন্দিরগুলোর চেয়েও অনেক বেশি জাঁকজমকপূর্ণ। একজন বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন, ‘লন্ডনের অন্যান্য গির্জার তুলনায় ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবে বা সেন্ট পলস যেমন শ্রেষ্ঠ, উত্তরের মন্দিরের তুলনায় দক্ষিণের মন্দিরগুলোও ঠিক তেমনই।’

১৯০১ সালে রামানুজন সপরিবারে রামেশ্বরমের যে মন্দিরে গিয়েছিলেন, সেটি ছিল সিলন বা শ্রীলঙ্কার ঠিক উল্টো দিকের উপকূলে এক দ্বীপ। সপ্তদশ শতাব্দী জুড়ে প্রায় একশ বছর ধরে তৈরি এই মন্দিরটি ছিল ১০০০ ফুট লম্বা এবং ৬৫০ ফুট চওড়া। এর চারদিকের গোপুরমগুলো ছিল ১০০ ফুট উঁচু এবং এর ভেতরের প্রায় ৪০০০ ফুট লম্বা বারান্দাগুলো ছিল অপূর্ব সব কারুকাজে ভরা।

একজন পশ্চিমা পর্যটক এই মন্দিরে ঢুকে বিভিন্ন রকম দেবদেবী দেখে ভড়কে যেতে পারেন। কাঠ বা পাথরের তৈরি ছোট-বড় সব মূর্তি, কোনোটা ফুলে সাজানো, কোনোটা আবার সাধারণ পোশাকে ঢাকা। কিন্তু মূলধারার হিন্দুধর্মে এগুলো ছিল বিশাল ও জটিল বিশ্বাস কাঠামোর অংশ। গ্রামের লৌকিক ধর্মের চেয়ে এটা অনেক বেশি উন্নত ছিল।

হিন্দু দেবকুলের প্রধান তিন দেবতা ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব। তারা যথাক্রমে সৃষ্টি, ধ্বংস ও রক্ষাকারী শক্তির প্রতীক। কিন্তু বাস্তবে দেখা যেত, বিশ্ব সৃষ্টির পর ব্রহ্মা যেন নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। তাই তাঁর পূজা খুব একটা হতো না। ফলে ব্রাহ্মণ্য হিন্দুধর্ম মূলত দুটি বড় শাখায় বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। শিবের উপাসকেরা শৈব এবং বিষ্ণুর উপাসকেরা বৈষ্ণব।

একজন বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন, ‘লন্ডনের অন্যান্য গির্জার তুলনায় ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবে বা সেন্ট পলস যেমন শ্রেষ্ঠ, উত্তরের মন্দিরের তুলনায় দক্ষিণের মন্দিরগুলোও ঠিক তেমনই।’

শৈব ধর্মে ছিল একধরনের উগ্রতা, ধ্বংসাত্মক শক্তি এবং আদিম যৌন শক্তির প্রকাশ। প্রতিটি শৈব মন্দিরের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা লিঙ্গ প্রতীকের মাধ্যমে প্রকাশ পেত এটি। যখন বড় কোনো পরিবর্তন বা প্রলয়ঙ্করী ধ্বংসের কথা ভাবা হতো, তখন মানুষ শিবকে ডাকত।

অন্যদিকে বৈষ্ণব ধর্ম ছিল পালনকর্তা বিষ্ণুর সঙ্গে মানানসই, অনেক বেশি শান্ত ও সৌম্য। সমসাময়িক এক ইংরেজ লেখক একে স্পিরিট অব ম্যান বা মানবাত্মার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। স্পষ্টতই, এটি ছিল অনেক বেশি কোমল ধারণা। ভারতীয় মহাকাব্যের দুই নায়ক রাম ও কৃষ্ণ এবং বিষ্ণুর দুই অবতার ছিলেন বৈষ্ণব ধর্মের প্রধান চরিত্র।

হিন্দু পুরাণে এই তিন প্রধান দেবতা নানা রূপে আবির্ভূত হয়েছেন। শিব হতে পারেন পরমেশ্বর। বিষ্ণু হতে পারেন নরসিংহ বা ভেঙ্কটরমন। তাঁদের সঙ্গী ও আত্মীয়রাও শতাব্দীকাল ধরে পূজিত হয়ে আসছেন। যেমন বিষ্ণুর পূজা করা হতো তাঁর স্ত্রী লক্ষ্মীর রূপে, আবার বানর দেবতা হনুমানের রূপেও। প্রত্যেকের আলাদা ব্যক্তিত্ব ছিল এবং প্রত্যেকের ছিল আলাদা ভক্ত।

অবশ্যই কিছু ভক্ত এই পাথরের মূর্তিগুলোকে আক্ষরিক অর্থেই দেবতা মনে করত, অনেকটা গ্রামের দেবতার মতোই। দক্ষিণ ভারতের ইতিহাসে খ্রিস্টীয় যুগের শুরুর দিকে গ্রামের দেবতা এবং বৈদিক দেবতাদের একধরনের সংমিশ্রণের কথা বলা হয়েছে।

হিন্দু পুরাণে এই তিন প্রধান দেবতা নানা রূপে আবির্ভূত হয়েছেন। শিব হতে পারেন পরমেশ্বর। বিষ্ণু হতে পারেন নরসিংহ বা ভেঙ্কটরমন। তাঁদের সঙ্গী ও আত্মীয়রাও শতাব্দীকাল ধরে পূজিত হয়ে আসছেন।

কিন্তু শিক্ষিত হিন্দুরা অন্তত বুঝতেন, এই পাথরের দেবতাগুলো আসলে এক ও অদ্বিতীয় পরমেশ্বরেরই বিভিন্ন রূপ। এদের দিকে তাকিয়ে মানুষ সেই একত্বের কথাই নতুন করে মনে করত। আর যাদের আধ্যাত্মিক বোধ অতটা উন্নত নয়, তাদের জন্য এই জাঁকজমকপূর্ণ পাথরের মূর্তিগুলো ছিল অনেকটা বড়শির মতো, যা দিয়ে তাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে ধীরে ধীরে উচ্চতর ও মহৎ কোনো সত্যের দিকে নিয়ে যাওয়া হতো।

হিন্দুধর্মের আসল সৌন্দর্য ছিল এর উদারতায়। এই ধর্মে কাউকে ফিরিয়ে দিত না। এটি অন্য কোনো ধর্মকে অস্বীকার করত না, কোনো নির্দিষ্ট একটা পথ বাতলে দিত না, বা পূজা ও বিশ্বাসের কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম চাপিয়ে দিত না। এটি সব কিছুকে এবং সবাইকে আপন করে নিত। আপনার ব্যক্তিত্ব যেমনই হোক না কেন, আপনার জন্য একজন দেবতা বা দেবী, একটি অবতার বা একটি প্রতীক ঠিক করা আছে, যার সঙ্গে আপনি একাত্ম হতে পারবেন, যার কাছে শান্তি পাবেন।

যেকোনো মানসিক অবস্থা, যেকোনো মেজাজ বা জীবনের যেকোনো ধাপের জন্য আলাদা আলাদা দেবতা ছিল। বিভিন্ন রূপ ধারণ করার মাধ্যমে ঈশ্বর নিরাকার হয়ে উঠতেন; বিভিন্ন নামের মাধ্যমে হয়ে উঠতেন নামহীন।

হাজার হাজার দেবতার মধ্যে দক্ষিণ ভারতীয় পরিবারগুলো সাধারণত একটি বিশেষ দেবতার ওপর অগাধ বিশ্বাস রাখত। একে বলা হতো কুল দেবতা বা পারিবারিক দেবতা। বংশপরম্পরায় চলে আসা গল্প বা পারিবারিক গয়নার মতোই এই দেবতা ছিল পরিবারের ঐতিহ্যের অংশ।

হিন্দুধর্মের আসল সৌন্দর্য ছিল এর উদারতায়। এই ধর্মে কাউকে ফিরিয়ে দিত না। এটি অন্য কোনো ধর্মকে অস্বীকার করত না বা পূজা ও বিশ্বাসের কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম চাপিয়ে দিত না।

বিপদের সময় পরিবারের সবাই সবার আগে এই দেবতার কাছেই প্রার্থনা করত, অনেকটা রোমান ক্যাথলিকদের প্যাট্রন সেন্টের মতো। দক্ষিণ ভারতে এমন অনেক উচ্চশিক্ষিত, বিশ্বভ্রমণ করা ব্রাহ্মণ ছিলেন, যিনি হয়তো অনর্গল ইংরেজিতে কথা বলেন, সংস্কৃত জানেন, ভারতীয় জাতীয়তাবাদ বা গণিত নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। তিনিও নিয়মিত তাঁর পারিবারিক দেবতার সামনে গভীর ভক্তি নিয়ে প্রার্থনা করতেন।

রামানুজনের পরিবারের কুল দেবতা ছিলেন দেবী নামাগিরি, সিংহ-দেবতা নরসিংহের স্ত্রী। কুম্বকোনম থেকে প্রায় একশ মাইল দূরে, ইরোড যাওয়ার পথে নামাক্কাল শহরে ছিল তাঁর মন্দির। এই জায়গার কাছেই ছিল কোমলতাম্মলের বাপের বাড়ি। এই নামাগিরির নামই সবসময় রামানুজনের মায়ের মুখে লেগে থাকত। যেকোনো ছোট বা বড় বিষয়ে দেবীর ইচ্ছা বা মতামতকে তাঁরা চূড়ান্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিতেন।

সাম্প্রতিক একটি ছবিতে রামানুজনের পারিবারিক দেবী দেবী নামগিরির মন্দির
ছবি: সংগৃহীত

বিয়ের পর কয়েক বছর সন্তান না হওয়ায় রামানুজনের বাবা-মা এই নামাগিরির কাছেই সন্তানের জন্য প্রার্থনা করেছিলেন। রামানুজনের নানি রঙ্গম্মল ছিলেন নামাগিরির একনিষ্ঠ ভক্ত এবং শোনা যায় তিনি দেবীর সঙ্গে কথা বলার জন্য ধ্যানে বা ঘোরের মধ্যে চলে যেতেন। একবার নাকি নামাগিরি তাঁকে স্থানীয় স্কুলের শিক্ষকদের এক অদ্ভুত খুনের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সাবধান করে দিয়েছিলেন। আরেকবার রামানুজনের জন্মের অনেক বছর আগে নামাগিরি তাঁকে স্বপ্নে বলেছিলেন, দেবী একদিন তাঁর মেয়ের ছেলের মাধ্যমে কথা বলবেন।

রামানুজনের পরিবারের কুল দেবতা ছিলেন দেবী নামাগিরি, সিংহ-দেবতা নরসিংহের স্ত্রী। কুম্বকোনম থেকে প্রায় একশ মাইল দূরে, ইরোড যাওয়ার পথে নামাক্কাল শহরে ছিল তাঁর মন্দির।

রামানুজন ছোটবেলা থেকে এই গল্প শুনে বড় হয়েছেন। তিনিও সারাজীবন নামাগিরির নাম জপতেন, তাঁর আশীর্বাদ চাইতেন। তিনি বন্ধুদের বলতেন, তাঁর এই গাণিতিক প্রতিভা আসলে দেবী নামাগিরিরই দান। দেবী নাকি তাঁর জিভে সমীকরণ লিখে দিতেন, কিংবা স্বপ্নে তাঁকে গণিতের জটিল সব তত্ত্ব দিতেন।

বন্ধুদের কাছে তিনি এমনটাই বলতেন। কিন্তু তিনি কি সত্যিই এটা বিশ্বাস করতেন?

তাঁর নানি করতেন, মা-ও করতেন। দীর্ঘ প্রার্থনার পর ছেলের জন্ম হওয়ায় দেবীর প্রতি কোমলতাম্মলের ভক্তি আরও বেড়ে গিয়েছিল। কোমলতাম্মল এমনই ছিলেন। তিনি যেন নিজের ইচ্ছাশক্তি দিয়েই সন্তানকে পৃথিবীতে এনেছিলেন। তাঁর প্রবল ব্যক্তিত্ব, তাঁর অদম্য ইচ্ছাশক্তি; সবকিছুই ছেলের মধ্যে সঞ্চারিত হয়েছিল।

মা-বাবার সাথে রামানুজন
ছবি: উইকিপিডিয়া

রামানুজন মায়ের কাছ থেকে এটা পেয়েছিলেন। মাকে আলাদা করে শেখাতে হয়নি, কারণ মায়ের জীবনটাই ছিল তাঁর কাছে উদাহরণ। তিনি মায়ের কাছ থেকে শিখেছিলেন নিজের ভেতরের আওয়াজ শুনতে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করার জেদ। তাঁর বাবা ছিলেন দৈনন্দিন জীবনের গোলাম, টাকা-পয়সা আর রুটিনের চক্রে আটকা পড়া মানুষ। তিনি চাইতেন ছেলে বিয়ে করুক, টাকা রোজগার করুক, সংসারী হোক। কিন্তু কোমলতাম্মল নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন এক গভীর শক্তির কাছে। তিনি বাস করতেন এক সমৃদ্ধ অভ্যন্তরীণ জগতে। তিনিই রামানুজনকেও টেনে নিয়েছিলেন সেই জগতে।

তাই রামানুজনের তরুণ জীবনে যখন গণিতের মতো এক প্রবল নতুন শক্তির আগমন ঘটল, তখন তিনি মায়ের কাছ থেকেই সেই শক্তিকে আলিঙ্গন করার, নিজের জীবনকে এর হাতে সঁপে দেওয়ার এবং পাগলের মতো একে অনুসরণ করার অনুমোদন পেয়ে গিয়েছিলেন।

চলবে…