রেফারেন্সে নাম্বারের সাহায্যে আরও গুণ

গত পর্বে দেখেছিলাম, কীভাবে রেফারেন্স নাম্বার ব্যবহার করে গুণ করা যায়। ওই পর্বটি না দেখে থাকলে এই লিংক থেকে দেখে নিতে পারো। তাহলে আজকের অংশ বুঝতে সুবিধা হবে। গত পর্বের মতো আজও একটি গুণ শিখবো। তারপর যাচাই করে দেখবো, সেই গুণ ঠিক আছে কি না। 

ধরো, আমরা ২৪ ও ২৫ গুণ করবো। দুটি সংখ্যাই ২০-এর কাছাকাছি। তাই আমরা রেফারেন্স নাম্বার ধরবো ২০। ২৪ হলো ২০-এর চেয়ে ৪ বেশি এবং ২৫ হলো ৫ বেশি। তাই বৃত্তের মধ্যে যথাক্রমে ৪ ও ৫ লিখবো। 

এবার আগের মতোই কোনাকুনি যোগ করবো। ২৪+৫=২৯ বা ২৫+৪=২৯। এবার ২৯-কে রেফারেন্স নাম্বার ২০ দিয়ে গুণ করতে হবে। ২০ দিয়ে গুণ করার একটা সহজ নিয়ম আছে। আগের লেখায় দেখিয়েছি। আবার দেখো।  

আরও পড়ুন

যেহেতু ২৯-কে ২০ দিয়ে গুণ করবে, সুতরাং প্রথমে ২৯-এর সঙ্গে ২ গুণ করতে হবে। এরপর গুণফলের সঙ্গে একটা শূন্য বসিয়ে দিলেই হলো। অর্থাৎ, 

২৯×২=৫৮ 

৫৮×১০= ৫৮০ 

তাহলে, ২৯ ও ২০ গুণ করে পেলাম ৫৮০। এবার বৃত্তের ভেতরে থাকা ৪ ও ৫ গুণ করলে পাবো ২০। তাহলে ৫৮০-এর সঙ্গে ২০ যোগ করে হবে ৬০০। 

এখন তুমি শতভাগ নিশ্চিত করে বলতে পারো, এই উত্তরটা ঠিক আছে? ক্যালকুলেটর ছাড়া তো নিশ্চিত হওয়া যাবে না। অথবা খাতা কলমে এই গুণটা করে দেখতে হবে। কিন্তু আমরা যে এই দুটোর কোনোটাই করতে চাই না। ক্যালকুলেটরই যদি ব্যবহার করবো তাহলে আর গুণের কৌশল শিখে লাভ কী? তাই চলো, এবার দেখা যাক আমাদের ওপরের গুণটা আসলেই ঠিক আছে কি না? 

আমরা ২৪ ও ২৫ গুণ করছি। গুণফল ঠিক আছে কি না, তা বোঝার জন্য প্রথমে ২৪ ও ২৫ সংখ্যা দুটির অঙ্কগুলো যোগ করতে হবে। তাহলে, ২৪-এর অঙ্ক দুটি যোগ করলে পাবো ২+৪=৬ এবং ২৫-এর অঙ্ক দুটির যোগফল ২+৫=৭। এবার এই সংখ্যা দুটির যোগফল অর্থাৎ, ৬ ও ৭ গুণ করতে হবে। তাহলে গুণফল হবে ৬×৭=৪২। এবার এই ৪২-এর অঙ্ক দুটি যোগ করতে হবে। ৪+২=৬। তাহলে, আমরা সর্বশেষ উত্তর পেলাম ৬। 

আরও পড়ুন

চলো এবার উত্তরটা মিলিয়ে দেখি। ২৪ ও ২৫-এর গুণফল ছিল ৬০০। এই সংখ্যাটির অঙ্কগুলো যোগ করতে হবে। মানে ৬+০+০= ৬। তার মানে ওপরে পেলাম ৬, আর গুণফল থেকেও পেলাম ৬। অর্থাৎ, ২৪ ও ২৫-এর গুণফল ৬০০ ঠিক আছে। 

এবার একই নিয়মে ২৩ ও ৩১ গুণ করে দেখো তো। উত্তর না পারলেও সমস্যা নেই। কিন্তু প্রথমে নিজে চেষ্টা করো। এখানে ভুল হলে তোমার পরীক্ষার নাম্বার কাটা যাবে না। তাই নিজে চেষ্টা না করে সমাধান দেখো না।  

এখানেও আমরা রেফারেন্স নাম্বার ধরলাম ২০। তাহলে ওপরের নিয়মানুসারে ২০ থেকে ২৩ ও ৩১ যথাক্রমে ৩ ও ১১ বড়। বৃত্তের মধ্যে সংখ্যা দুটি লিখলাম। এবার কোনাকুনি যোগ।

আরও পড়ুন

২৩+১১=৩৪ বা ৩১+৩=৩৪। এক্ষেত্রে তোমরা ৩১ ও ৩ যোগ করতে পারো। কারণ এই যোগটা সহজ। এবার এই ৩৪-কে গুণ করতে হবে ২০ দিয়ে। সেক্ষেত্রে প্রথমে ৩৪-কে ২ দিয়ে গুণ করে আবার ১০ দিয়ে গুণ করতে পারো। নিচের নিয়মটা দেখ।

৩৪×২= ৬৮

৬৮×১০= ৬৮০ 

অথবা ৩৪-কে প্রথমে ১০ দিয়ে গুণ করে গুণফলকে দ্বিগুণ করলেও উত্তর একই আসবে। যেমন,

৩৪×১০= ৩৪০

৩৪০×২= ৬৮০ বা ৩৪০+৩৪০=৬৮০   

এখন বৃত্তের সংখ্যা দুটি গুণ করতে হবে। ১১×৩=৩৩। আগের যোগফল বা গুণফল ৬৮০-এর সঙ্গে এই ৩৩ যোগ করতে হবে। প্রথমে ৬৮০-এর সঙ্গে ২০ যোগ করো। তাহলে পাবে ৭০০। এবার বাকি ১৩ এই ৭০০-এর যোগ করলে হবে ৭১৩। 

আরও পড়ুন

আমরা উত্তর পেয়ে গেছি। এবার চাইলে মিলিয়ে দেখতে পারো, তোমার উত্তর ঠিক আছে কি না। প্রথমে ২৩ ও ৩১ সংখ্যা দুটির অঙ্কগুলো যোগ করতে হবে। ২+৩=৫ এবং ৩+১=৪। এবার যোগফল দুটি গুণ করলে পাবো ৫×৪=২০ এবং ২+০=২। সবশেষ উত্তর পেলাম ২। 

এবার গুণফল ছিল ৭১৩। অঙ্কগুলো যোগ করলে পাবো ৭+১+৩=১১ এবং ১+১=২। অর্থাৎ, উত্তরটি ঠিক আছে। 

এবার নিচের সমাধানগুলো নিজেই চেষ্টা করে দেখ তো মেলাতে পারো কি না। সমাধান করে আবার উত্তর যাচাই করে দেখতে ভুলো না যেন। 

নিজে যাচাই করো:

ক. ২১×২৪=

খ. ২৩×২৭=

গ. ২৩×২৩=

ঘ. ২৬×২৪=

ঙ. ২১×৩৫= 

লেখক: সম্পাদনা দলের সদস্য, বিজ্ঞানচিন্তা

সূত্র: ম্যাথ স্পিড ফর কিডস

আগের সব পর্বের লিংক

প্রথম পর্ব: গুণের সহজ কৌশল

দ্বিতীয় পর্ব: গুণের আরও সহজ কৌশল

তৃতীয় পর্ব: বড় গুণের সহজ কৌশল

চতুর্থ পর্ব: বড় গুণের আরও সহজ কৌশল

পঞ্চম পর্ব: দ্বৈত গুণের সহজ পদ্ধতি

ষষ্ঠ পর্ব: যোগ করে গুণ করি

সপ্তম পর্ব: আরও যোগ আরও গুণ

অষ্টম পর্ব: যোগ ও বিয়োগ করে গুণ 

নবম পর্ব: যোগ করে বড় গুণ 

দশম পর্ব: কীভাবে বুঝবে তোমার গুণ সঠিক? 

একাদশ পর্ব: বড় গুণ পরীক্ষার সহজ কৌশল 

দ্বাদশ পর্ব: রেফারেন্সে নাম্বারের সাহায্যে গুণ