শব্দকাহন
নাইট্রোজেন শব্দটি যেভাবে পেলাম
নতুন কিছু আলাদাভাবে চিহ্নিত করাসহ নানা কারণেই নাম দিতে হয়। বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও কথাটি সত্য। এসব নামের পেছনেও লুকিয়ে থাকে মজার ইতিহাস। আজ দেখা যাক, নাইট্রোজেন শব্দটি কী করে আমাদের হলো?
১৭৬০ সালের দিকে বিজ্ঞানী হেনরি ক্যাভেন্ডিশ ও জোসেফ প্রিস্টলে আলাদা আলাদা পরীক্ষায় বাতাস থেকে অক্সিজেন সরিয়ে নাইট্রোজেন গ্যাস পৃথক করতে পেরেছিলেন। কিন্তু গ্যাসটি যে আসলে কী তা তাঁরা বুঝতে পারেননি। তবে পরীক্ষায় দেখা গিয়েছিল গ্যাসটি এবং এতে কোনো প্রাণী বাঁচতে পারে না। তাই তারা প্রাথমিকভাবে এর নাম দিয়েছিলেন অশ্বসনকারী গ্যাস। ওদিকে তাদেরই প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রিটিশ রসায়নবিদ ড্যানিয়েল রাদারফোর্ড ১৭৭২ সালে বুঝতে পারলেন, এটি আসলে নতুন একটি গ্যাস। তাই এই গ্যাসের আবিষ্কারের কৃতিত্ব দেওয়া হয় রাদারফোর্ডকেই। নতুন গ্যাসটির নাম তিনি দিয়েছিলেন দূষিত বাতাস। ১৭৮৭ সালে রসায়নবিদ ল্যাভয়সিয়ে গ্যাসটির নাম দিলেন অ্যাজোট (azote)। গ্রিক এ শব্দটির অর্থ জীবনহীন। এ গ্যাসে জীব শ্বাস নিতে পারে না বলেই এমন নামের প্রস্তাব। পরে এ ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়। কারণ গাছের বেঁচে থাকার জন্য এ গ্যাসটি অপরিহার্য। তাই পরে গ্যাসটির নাম দেওয়া হয় নাইট্রোজেন। গ্রিক শব্দ নাইট্রন (nitron) আর জিন (genes) যোগ করে বানানো হয়েছিল শব্দ। এই দুটি শব্দের মিলিত অর্থ হচ্ছে নাইট্রি গঠনকারী (nitre-forming)। আবার গ্যাসটির ল্যাটিন নাম নাইট্রোজেনিয়াম (Nitrogenium) অর্থও তাই। সে সময় গানপাউডার বা বারুদের প্রধান উপাদান সল্টপিটার বা পটাশিয়াম নাইট্রেটকে বলা হতো নাইটার।